নারায়াণগঞ্জের ফতুল্লায় চার শ্রমিক হত্যা মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোছা. সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- তাজুল ইসলাম ও মহি ফিটার। এ ছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চাঁন মিয়া, দুলাল মিয়া, মজিবর, শফিকুল ইসলাম, আবদুল মান্নান, আরিফ, জলিল, সাইফুল ইসলাম, দুলাল ও ইব্রাহিম। এদের মধ্যে জলিল, সাইফুল ইসলাম, দুলাল ও ইব্রাহিম পলাতক রয়েছেন। -এফএনএস
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কেএম ফজলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হত্যা মামলায় ১২ আসামির মধ্যে আদালত ২ জনকে ফাঁসি ও ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এক আসামি মামলা চলাকালীন মারা গেছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিলেট থেকে পাথরবোঝাই করে শাহপরান নামক বাল্কহেডটি মুন্সিগঞ্জের সিমেন্ট কারখানায় আসে। পাথরগুলো ওই কারখানায় খালাস করে দেয়ার পর বাল্কহেডের মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। মেশিন ঠিক করার জন্য আসামি মহি ফিটার ও তাজুল ইসলামকে খবর দেন বাল্কহেডের মাঝি নাসির।
তারা বাল্কহেডটি ঠিক করে টেস্ট করতে গিয়ে ফতুল্লার ইটখালের পাশে লাগিয়ে দেন। বাল্কহেডে তখন শ্রমিক নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নান ছিলেন। পরে বাল্কহেডটি ফতুল্লার বক্তাবলী চরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেলেও ওই চার কর্মচারীকে পাওয়া যায়নি। পরে মেঘনা নদীর চরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নাসির মিয়া ও মঙ্গলের লাশ পাওয়া যায়। তবে বাকি দুজনের লাশ পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধারের পর বাল্কহেডের মালিক এরশাদ মিয়া বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জলিল, লম্বা দুলাল, ইব্রাহিম, খাটো দুলাল মিয়া, মজিবর, শফিকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম, আরিফকে গ্রেপ্তার করলে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে ১২ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল রোববার রায় প্রদান করেন আদালত।