বুধবার

১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারে অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদে রাস্তায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা

Paris
Update : মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

এফএনএস : মিয়ানমারের শহর ও নগরগুলোতে টানা তৃতীয় দিনের মতো সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদে হাজার হাজার লোক যোগ দিয়েছেন। গত সোমবারের ওই অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার ও আইন অমান্য আন্দোলন ফের শুরু করার ডাক জোরদার হয়ে উঠছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। সোমবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনে প্রতিবাদ মিছিলে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গেরুয়া পোশাক পরা বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও যোগ দিয়েছেন এবং তারা সামনের সারিতে রয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) লাল ব্যানারের পাশাপাশি মিছিলে তারা বহুরঙা বৌদ্ধ পতাকাও উড়িয়েছেন।

মিছিলের একজনের হাতে উঁচু করে ধরা এক কাগজে লেখা ছিল, “আমাদের নেতাদের মুক্তি দাও, আমাদের ভোটকে শ্রদ্ধা কর, সামরিক অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান কর।” অন্য সাইনগুলোতে লেখা ছিল ‘গণতন্ত্র রক্ষা কর’, ‘স্বৈরতন্ত্রকে না বল’। অনেক প্রতিবাদকারী কালো পোশাক পরা ছিলেন। ১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে রোববার মিয়ানমারজুড়ে সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। ২০০৭ সালে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে ‘গেরুয়া বিপ্লবের’ পর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ‘গেরুয়া বিপ্লব’ মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সংস্কারের গতি বাড়াতে ভূমিকা রেখেছিল কিন্তু গত সোমবারের সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে ওই ধারা থমকে গেছে।

সামরিক জান্তা সব সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও আন্দোলনকারী থিনজার মং ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে ফেইসবুকে তার অনুসারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “ইয়াঙ্গনের সব এলাকার মিছিলকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে আসুন ও জনগণের সমাবেশে যোগ দিন।” দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর ডাউইয়ে কয়েক হাজার লোক অভ্যুত্থান বিরোধী মিছিল করেছে। উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যের রাজধানী মায়িতকিনায় প্রতিবাদকারীরা সারা শরীর কালো পোশাকে ঢেকে জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ করেছে। এ পর্যন্ত সবগুলো প্রতিবাদই শান্তিপূর্ণ ছিল।

রোববার রাতে সামরিক বাহিনীর একটি ট্রাকবহরকে ইয়াঙ্গনের রাস্তা ধরে যেতে দেখা গেছে, এ সময় কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে এসব প্রতিবাদের কথা উল্লেখ করা হয়নি এবং এ বিষয়ে সামরিক সরকারের মন্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগে করাও সম্ভব হয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে। সামরিক সরকার রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিনব্যাপী ইন্টারনেটের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল।

দুই জন আন্দোলনকারী ফেইসবুকে তাদের পেইজে জানান, পুলিশ তাদের খোঁজে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে, কিন্তু তখন তারা বাড়িতে ছিলেন না এবং তারা এখনও মুক্ত আছেন। রাস্তায় প্রতিবাদের পাশাপাশি একটি আইন অমান্য আন্দোলনও শুরু হয়েছে। প্রথমে চিকিৎসকরা এটি শুরু করলেও পরে কিছু শিক্ষক ও অন্যান্য সরকারি কর্মচারীরাও এতে যোগ দিয়েছেন। “সব বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের সোমবার থেকে কাজে যোগ না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি আমরা,” বলেছেন প্রবীণ আন্দোলনকারী মিন কো নায়িং, ১৯৮৮ সালে তাদের দেখানো বিক্ষোভই সু চিকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করে তুলেছিল।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris