এফএনএস : নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনে কলকাতাকে ভারতের অন্যতম রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করার দাবি তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন জানিয়েছে, কেবল কলকাতাই নয়, দেশের চার প্রান্তে চারটি রাজধানী ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। দিল্লিতেই কেন রাজধানী সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশের চারটি রাজধানীতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পার্লামেন্টের অধিবেশন বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা। নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে এ দিন শ্যামবাজার থেকে রেড রোড পর্যন্ত পদযাত্রা করেন মমতা।

তার পর সেখানে এক সভায় দেওয়া বক্তব্যে নেতাজিকে উপেক্ষা করা নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। একই সঙ্গে টেনে আনেন বাংলাকে বঞ্চনা, অবহেলার অভিযোগও। সে সময় মমতা কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারত, উত্তর ভারত এবং উত্তর পূর্ব ভারতেও একটি করে রাজধানী ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণের কেরালা, অন্ধ্র প্রদেশ, উত্তর এবং মধ্য ভারতের উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির কোনও একটিকে রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করার কথা বলেন মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্ম হয়েছিল বাংলা, বিহারে। গান্ধীজী বেলেঘাটায় এসে আন্দোলন করতেন। নবজাগরণ, বিধবা বিবাহ, বাল্য বিবাহের মতো সংস্কারের জন্ম বাংলায় হয়েছিল। বাংলা কোনও অবহেলা সইবে না। নেতাজির নাম বললে আমার হৃদয়ে আবেগের সৃষ্টি হয়। নেতাজিকে দুই পাতার বই পড়ে জানা যাবে না।’ ১৭৭২ থেকে ১৯১১ পর্যন্ত ভারতের রাজধানী ছিল কলকাতা। সে প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘কলকাতা একদিন ভারতের রাজধানী ছিল, তাহলে আজকে ভারতবর্ষের একটা রাজধানী হোক কলকাতা। চার প্রান্তে চারটি রাজধানী থাকবে।

দিল্লিতে কী আছে? দিল্লিতে সবাই বাইরে থেকে যায়। দিল্লির মানুষ সবাইকে গ্রহণ করুক। ভারতবর্ষের চারটি জায়গায় সংসদের অধিবেশন বসুক বছরে চারবার।’ নিউজ এইটিন বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কলকাতা সফরের আগেই নেতাজি স্মরণের মঞ্চকে ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরে চাপ বাড়াতে চার রাজধানীর দাবিতে সরব হন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

নিউজ এইটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎ কলকাতাকে দেশে অন্যতম রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করার মমতার এই দাবির পিছনে ভোট অঙ্কই দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই ইস্যুতে যেমন একদিকে রাজ্যের বড় অংশের মানুষের সমর্থন মেলার সম্ভাবনা রয়েছে, সেরকমই একাধিক রাজধানীর কথা বলে দেশের বাকি অংশ থেকেও এই দাবিতে সমর্থন জোগাড় করার পথ সুগম করে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।