সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এবার পানির প্রাপ্যতা ১৪ হাজার কিউসেক কম

Paris
Update : রবিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২১

এফএনএস : বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গা পানিচুক্তির দুই যুগ পূর্তির বছরে পদ্মা নদীতে যৌথ পর্যবেক্ষণ দলের পানি পরিমাপ শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম থেকে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি পরিমাপের কাজ শুরু করছেন। ৩১ মে পর্যন্ত এ পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ চলবে। গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এবার একই সময়ে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম বিদ্যমান রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী, পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয় প্রতি বছরের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে।

কিন্তু এবার বছরের প্রথম দিন গত শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ২ জানুয়ারি থেকে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু করা হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনা জানিয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর নাগাদ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পর্যবেক্ষণ কাজ শুরু হয়। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোর্শেদুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে দুজন আর বাংলাদেশ থেকে চারজনের বিশেষজ্ঞ টিম পর্যবেক্ষণ কাজ করছেন।

ভারতের প্রতিনিধিরা হলেন- সেদেশের কেন্দ্রীয় নদী কমিশনের (সিডব্লিউসি) উপ-পরিচালক (ডিডি) শ্রী ভেংক্টেশ্বর লুই এবং সিডব্লিউসির সহকারী পরিচালক (এডি) নগেন্দ্র কুমার। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুদ্দিন আহমদ, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন মিয়া এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিব্বির হোসেন। পাউবো উত্তরাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোর্শেদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় ৮৮ হাজার কিউসেক পানি বিদ্যমান। গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গায় এক লাখ ৬১ হাজার কিউসেক পানি ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬০ হাজার ৬১ কিউসেক এবং ভারতের ৪০ হাজার কিউসেক পানি।

একই সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল এক লাখ দুই হাজার ৫৭৪ কিউসেক পানি। গত বছরের তুলনায় এবার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম বিদ্যমান। মোর্শেদুল ইসলাম আরও জানান, চুক্তির শর্তানুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি ১০ দিন পর পর পানি প্রাপ্তির তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং তা ৩১ মে পর্যন্ত চলবে। এদিকে ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছর ধরে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পানি থাকে না। ব্রিজের ১৫টি পিলারের মধ্যে ১০টি পিলারই চরের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। ব্রিজের যে পাঁচ পিলারের নিচে পানি থাকে তার আশপাশে স্থানীয় কৃষকরা আখ, চিনাবাদাম, ধান, গাজরসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেন।

এ বছরও কৃষকরা চাষ শুরু করেছেন। আর পানিবিহীন পদ্মার বুক থেকে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা বালু কেটে বিক্রি করেন। এবারও শুরু হয়েছে বালি বিক্রির কাজ। নদীতে পানি কম থাকায় নদী মাছশূন্য হয়ে পড়ছে বলে পেশাজীবী জেলেরা জানান। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তি স্বাক্ষর হয় ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের হায়দারাবাদ হাউজে। পরবর্তী বছর ১৯৯৭ সালে ১ জানুয়ারি থেকে দু’দেশের মধ্যে ভারতের অংশে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তি কার্যকর শুরু হয়। বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের পক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তির সিডিউল অনুযায়ী প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমের পাঁচ মাস অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এ চুক্তি কার্যকর হবে।

পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এই পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়। দু’দেশের প্রকৌশলী ও পানি বিশেষজ্ঞরা প্রতি মাসে তিন দফা অর্থাৎ ১০ দিন পর পর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের পরিমাপ রেকর্ড করে তা যৌথ নদী কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেন। যদিও চুক্তি অনুয়ায়ী কোনো বছরেই ভারত বাংলাদেশকে পানি দেয়নি। তারা বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে আসছে। ফলে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও পানি উন্নয়ন প্রকল্প, পানাসি প্রকল্প, বরেন্দ প্রকল্পসহ দেশের বৃহত্তম বিভিন্ন প্রকল্পের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও সেচ পাম্প ব্যবহার করেও জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ অঞ্চলের ছোট ছোট নদীগুলোও ক্রমশ মরে যাচ্ছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris