সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

গঙ্গা চুক্তির ২৪ বছরে পদ্মানদীতে ধুধু বালুচর, চাষ হচ্ছে আখ গাজর সবজি

Paris
Update : শনিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২১

শেখ মেহেদী হাসান, ঈশ্বরদী : বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গা (পদ্মানদী) পানি চুক্তির-২৪ বছরে পা দিলো। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও গঙ্গা পানি চুক্তি পর্যবেক্ষণ শুরু আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। তবে গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয় বছরের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে। কিন্তু এবার বছরের প্রথম দিন গতকাল শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন হওয়ায় আজ ২ জানুয়ারি থেকে শুরু করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে, গঙ্গা চুক্তির-২৪ বছরে পদ্মানদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পড়েছে ধুধু বালু-পলিমাটির চর। এই চরে চাষ হচ্ছে আখ, গাজরসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি। কাটা হচ্ছে বালু।

তবে দুই দেশের মধ্যে গঙ্গায় পানির প্রবাহ পর্যবেক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে ভারতীয় দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছেন। একই সঙ্গে নদী কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম সাইফুদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারতে গেছেন। গতকাল শুক্রবার পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন এই তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যার প্রাপ্তীতা নিশ্চিত করতে প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দুই দেশের প্রতিনিধিদল গঙ্গা ও পদ্মার পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে।

নদী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গায় এক লাখ ৬১ হাজার কিউসেক পানি ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬০ হাজার ৬১ কিউসেক এবং ভারতের ৪০ হাজার কিউসেক পানি। একই সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল এক লাখ দুই হাজার ৫৭৪ কিউসেক পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ড, পদ্মাপাড়ের সবজি চাষী ও বালু ব্যবসায়ীদের সুত্রে জানা যায়, পদ্মানদী তীরবর্তি ও নদীবেষ্টিত পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা অন্তত ৩ কোটি মানুষ ভারতের ফারাক্কা বাঁধের বিরুপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।

দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও পানি উন্নয়ন প্রকল্প, পানাসি প্রকল্প, বরেন্দ প্রকল্পসহ দেশের বৃহত্তম বিভিন্ন প্রকল্পের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও সেচ পাম্প ব্যবহার করেও জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সুত্রগুলো আরো জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে পদ্মানদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পানি থাকেনা। ব্রিজের ১৫ টি পিলারের মধ্যেই ১০ টি পিলারই চরের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। ব্রিজের যে পাঁচ পিলারের নিচে পানি থাকে তার আশেপাশে স্থানীয় কৃষকরা আখ, চিনাবাদাম, ধান, গাজরসহ বিভিন্ন ধরণের সবজির চাষ করে। ইতোমধ্যে কৃষকরা চাষ শুরুও করেছেন । শুকনো মৌসুমে বিগত বছরগুলোতে পদ্মানদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মাত্র তিন পিলারের নিচে পানি থাকতে দেখা গেছে। নদীতে পানি না থাকায় বিভিন্ন ধরণের মাছ বিলুপ্ত হয়ে যায়।

বর্তমানে নদীতে একেবারেই মাছ নেই বলে বেকার হয়ে পড়েছেন পেশাজীবি জেলেরা। আর স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা বালু কেটে বিক্রয় শুরু করে। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন জানান‘পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণের জন্য দুই সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল আজ বাংলাদেশে এসেছেন। তারা কাল সকাল থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের দুই হাজার পাঁচ শ ফুট উজানে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু করবেন।

নদী কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম সাইফুদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারতে গেছেন। তারা ফারাক্কার দুটি পয়েন্টে গঙ্গার পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি আরো জানান, এ বছর পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ রয়েছে। গতকাল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় ৮৮ হাজার কিউসেক পানি ছিল। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পানি পর্যবেক্ষণ শুরু হলে পানির প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাবে বলেও দাবী করেন এই কর্মকর্তা।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris