সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

বাংলাদেশেও পাওয়া গেছে নতুন করোনা ভাইরাসবিজ্ঞানীদের আশা এই মিউটেশন ভবিষ্যতে তেমন ক্ষতি ঘটাবে না

Paris
Update : শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০

এফএনএস : বাংলাদেশেও নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই ভাইরাসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাওয়া নতুন করোনা ভাইরাসের মিল আছে। বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ বা বিসিএসআইআর-এর বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের নতুন একটি স্ট্রেইন বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে, যেটির সঙ্গে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে পাওয়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সাদৃশ্য রয়েছে। বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা গত মাসে ১৭টি নতুন জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে পাঁচটিতে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনের এই স্ট্রেইন শনাক্ত করেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খান।

এদিকে, বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ বলেছেন, তাদের অসমাপ্ত কাজের ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন নিয়ে ‘আতঙ্ক সৃষ্টি করা’ সমীচীন হবে না। যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি ‘বাংলাদেশেও রয়েছে’- এমন একটি খবর গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে তাদের একটি গবেষণা চলছে, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় এখনও আসেনি। যে কাজটা আমরা কেবল শুরু করেছি, সেটা নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কিছু নেই। প্যানিক তৈরি হয় এমন কোনো কথা বলার দরকার নেই।

গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের ‘অত্যন্ত সংক্রামক’ ওই নতুন ধরনটির সন্ধান মেলে, যা এখন লন্ডনসহ ইংল্যান্ডের বেশ কিছু এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাইরাসের ওই ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডসসহ কয়েকটি দেশে পৌঁছে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় প্রতিবেশীসহ ৪০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিসিএসআইআরের জীবতাত্ত্বিক গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খানের বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত নভেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ বিজ্ঞান এবং শিল্প গবেষণা পরিষদ করোনাভাইরাসের পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে। তাতে পাওয়া মিউটেশনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের ‘মিল রয়েছে’।

পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফতাব আলী বলেন, সেলিম খান একটা কাজে সিলেট গিয়েছেন। সেখান থেকে ফিরছেন। ফিরলে তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হবে। পরে আফতাব আলী শেখ সাংবাদিকদের বলেন, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজটি ‘অনেকদূর’ এগিয়েছে। শিগগিরই সাংবাদিকদের ডেকে চূড়ান্ত ফল জানানো হবে। পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত আমরা আপনাদের জানাতে পারছি না। তবে আমরা গত ৬ সেপ্টেম্বর কনফারেন্সে বলেছিলাম মিউটেশন হার নিয়ে, আপনারা কনসার্ন, এটির ব্যাপারে আমাদের বিজ্ঞানীরা সচেষ্ট আছেন। রেজাল্ট পাওয়া মাত্রই আমরা আপনাদের জানাব। পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য গণমাধ্যমে কীভাবে এসেছে তা ‘জানেন না’ বলে মন্তব্য করেন বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান। এটা আপনারা কোথা থেকে জেনেছেন আমি জানি না। আমরা সবসময়ই আপনাদের ডেকে এ রেজাল্ট জানিয়ে দিই। ফাইনাল রেজাল্ট যখন আমরা ডিসক্লোজ করব, তখন আপনারা জানতে পারবেন। তবে নতুন যে গবেষণা হচ্ছে, তা নতুন রোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা নিয়েই হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বিসিএসআইআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খান বলেছেন, যুক্তরাজ্যের আগেই অক্টোবরে দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন নিয়ে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইন আমরা বাংলাদেশে দুই মাস আগেই পেয়েছি। আমাদের পর এ নতুন স্ট্রেইন ইংল্যান্ড পেয়েছে। ইংল্যান্ড নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে নতুন স্ট্রেইন পায়। এই দুইমাসে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন কোনো ঘটনা ঘটেনি, সবকিছুই ঠিক আছে। ইংল্যান্ডে যখন হটাৎ করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায়, তখন তারা গবেষণা করে দেখে, নতুন স্ট্রেইনের সঙ্গে আরও কিছু মিউটেশন হয়েছে। ইংল্যান্ড যখন এটা নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করে, তখন আমরা মিলিয়ে দেখি, তাদের ওই স্ট্রেইনের সঙ্গে আমাদের দেশে দুমাস আগে শনাক্ত হওয়া স্ট্রেইনের কিছুটা মিল আছে। ওই স্ট্রেইন ছিল একটা নতুন ধরনের মিউটেশন। এই স্ট্রেইনের যে প্রধান মিউটেশন ছিল, তা আমরা দেশে অক্টোবর মাসের স্যাম্পলে পেয়েছি।

করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন নিয়ে ড. সেলিম কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। না পারার কারণ সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা হলো, আমাদের দেশে নতুন এ স্ট্রেইনের কোনো বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়নি। তাদের দেশে (ব্রিটেন) দ্রুত সংক্রমণ বাড়ার ফলে, তারা এটা নিয়ে গবেষণা করেছে। আমাদের দেশে যেহেতু এই স্ট্রেইন সংক্রমণ বাড়ায়নি, তাই আমরা এটা নিয়ে গবেষণা করিনি। প্রতিনিয়ত করোনা ভাইরাসের মিউটেশন হচ্ছে, তবে সব মিউটেশনেতো আর সিরিয়াস কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। তবে, ড. সেলিম শোনালেন করোনার নতুন এ ধরন সম্পর্কে আশার কথা। তিনি বলেন, নতুন এই মিউটেশন তেমন কোনো ক্ষতি করেনি, আশা করছি তেমন কোনো ক্ষতি ভবিষ্যতেও ঘটাবেও না। যেহেতু ২ থেকে আড়াই মাস পার হয়ে গেছে তাই ক্ষতির সম্ভাবনা কম। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন যে একটি স্ট্রেইন পাওয়া গেছে, সেটি আগের স্ট্রেইনটির তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায় বলে জানান গবেষকরা।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris