সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

পুঠিয়ার পৌর মেয়রের পাঁচ বছরের ব্যবধানে নগদ অর্থ বেড়েছে ২৫ গুন!

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০

এফএনএস : রাজশাহী পুঠিয়ার মেয়র রবিউল ইসলাম রবি। মাত্র সাড়ে তিন বছরের নামে-বেনামে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে বলে পৌরবাসীরা অভিযোগ তুলেছেন। আগামী ২৮শে ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনের হলফনামা এবং ২০১৫ সালের নির্বাচনী হলফনামার ভেতরে অনেক পার্থক্য দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের মতে, তিনি কেবল মেয়রের চেয়ার নয়, যেনো আলাদ্দিনের চেরাগ পেয়ে গেছেন। নির্বাচনী হলফনামায় মতে গত ৫ বছরের তার নগদ অর্থ বেড়েছে প্রায় ২৫ গুন। একাধিক প্লট ক্রয়ের পাশাপাশি গরু-মহিষের বিশাল খামার।

এ ছাড়া তিনি নির্মাণ করেছেন, কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক মানের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত একটি বাড়ি। রয়েছে বিলাস বহুল গাড়ী। এর পাশাপাশি ছোট স্ত্রীর জন্য আধুনিক মানের অপর একটি বাড়ি নির্মাণাধিন আছে। গত ২০১৫ সালের নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে, তিনি নগদ অর্থ দেখিয়েছেন এক লাখ ৫০ হাজার। কৃষি খাতে আয় ১৫ হাজার, মৎস্য ব্যবসা থেকে বছরে লাভ আসে দুই লাখ ৫৫ হাজার, মাত্র ৯০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৪ বিঘা ৫ কাঠা জমি। এছাড়া স্ত্রীর রয়েছে ২০ ভরি গহনা, বাড়িতে একটি টিভি, একটি ফ্রিজ, ৬টি ফ্যান, ৪টি খাট, ২টি ড্রেসিং ও ২টি সোকেস এবং নিজের নামে মামলা রয়েছে একটি।

আগামী ২৮শে ডিসেম্বর নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। তার নগদ টাকা রয়েছে ৩০ লাখ ৯২ হাজার। কৃষি খাতে আয় দেখিয়েছে ২৫ হাজার, মৎস্য খাতে ৩ লাখ ৭৫ হাজার, মেয়র হিসাবে সম্মানি ভাতা পেয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি বাদে তার নিজের ক্রয়করা ৭টি স্থানে প্লট দেখিয়েছেন। তবে ওই প্লটগুলোর ক্রয় মূল্যে উল্লেখ করেননি। এছাড়া স্ত্রীর রয়েছে গহনা ২০ ভরি। আর তার নামে মামলা দেখিয়েছেন ৫টি। বাকি তথ্য যথারীতি গত হলফনামা অনুযায়ী দিয়েছেন। তবে ২০ ভরি গহনা উল্লেখ ছাড়া তার দু’স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের নামে অর্থ সম্পদ বা ব্যাংক হিসাবের কোনো বিবরণ হলফনামায় উল্লেখ করেননি। এছাড়া তিনি আলাদা আলাদা অফিস বাড়িতে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত একাধিক এসি, গরু-মহিষের খামার ও তার পরিবারের ব্যবহার করা একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির বিবরণ উল্লেখ করেননি।

এলাকাবাসীর তথ্যমতে জানা গেছে, রবি সাবেক একজন সাংসদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসাবে পরিচিতি পান। সে সুযোগে উপজেলা যুবলীগের সভাপতির পদ গ্রহণ করেন। এরপর ওই সাংসদের তদবিরে গত ২০১৫ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। তারপর হতে দলের ভেতর বিভক্তি হয়ে গত নির্বাচনে একজন বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যার কারণে, বিএনপির প্রার্থীর কাছে রবি পরাজিত হন। এরপর কৌশলে পূর্ণরায় ভোট গণনার আবেদন করেন। যার ফলে নির্বাচনের প্রায় দেড় বছরের মাথায় পূর্ণরায় ভোট গণনার মাধ্যমে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে তাকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। এরপর হতে তার ভাগ্যের চাকা ঘোরা শুরু করে। দায়িত্ব নেয়ার বছর না ঘুরতেই আধাপাকা বাড়ি ভেঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক বিলাস বহুল ভবন।

দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই স্ত্রীর জন্য পুঠিয়া খাদ্য গুদাম প্রধান গেটের সামনে আলাদা প্লট ক্রয় করে নির্মাণ চলছে অপর একটি আধুনিক মানের বাণিজিক ভবন। দু’স্ত্রী ও সন্তানদের পাশাপশি আপন ভাই-ভাতিজাদের নামে-বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পদ। তাদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা ব্যক্তিগত গাড়ীসহ রয়েছে একাধিক মাইক্রোবাস। কিন্তু পৌর মেয়র হওয়ার আগে পরিবারের এত অর্থ সম্পদ ছিল না। পৌরসভার সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রবি মেয়রের চেয়ারে বসে উন্নয়নের নামে শুরু করেন লুটপাট। পৌরসভার দুইএকজন কর্মচারী এবং কিছু কাউন্সিলরের মদদে এডিপির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের অর্থ খাতা-কলমে ঠিক রেখে বেশিরভাগ অর্থ লুট করেছেন বলে পৌরবাসীরা অভিযোগ তুলেছেন। তার হঠাৎ অঢেল সম্পদ দেখে, জনপ্রতিনিধি এবং ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতাদের মাঝে বিভক্তি রয়েছে।

তার গরু-মহিষের খামার, দু’টি বাড়িতে কাজের লোকজনদের পৌরসভার দৈনিক হাজিরার কর্মচারী দেখিয়ে নিয়মিত মোটা অংকের বেতন নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে পুঠিয়া পৌর মেয়র রবিউল ইসলাম রবি বলেন, আমি ব্যবসায়ী লোক। আমি ব্যবসা করে এই সম্পদ গড়ে তুলেছি। আমার সব সম্পদের রাজস্ব দিয়ে থাকি। আমার সকল সম্পদের হিসাব নির্বাচন অফিসে দেয়া আছে। হলফনামায় কী কী বিবরণ দেয়া আছে তা আমার মনে নেই।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris