চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : গত কয়েক দিনের বেড়ে যাওয়া অব্যাহত কনকনে ঠান্ডা, শীত ও কুয়াশার প্রভাবে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ডায়রিয়াতে আক্রান্তদের প্রায় ৮০ শতাংশই শিশু। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে বেডের অভাবে প্রায় ৭৫ ভাগ রোগীই চিকিৎসা নিচ্ছেন মেঝেতে থেকে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স রাশেদা খাতুন জানান, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত ৪৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩৯ জনই শিশু।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বরাদ্দ ১২টি বেডে ছাড়া বাকি সবাই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘন্টায় ২৮ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ও ২৭ সুস্থ হয়েছেন। গত ৪-৫ দিন ধরে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে বলে জানান তিনি। দুই বছরের ছোট্ট শিশু জাহিদের চিকিৎসা নিতে আসা তার মা সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের চকআলমপুর গ্রামের খাতিজা বেগম বলেন, ২ দিন ধরে ছেলের ডায়রিয়া, তাই হাসপাতালে ভর্তি আছি। বেড ফাঁকা না থাকায় মেঝেতেই চিকিৎসা চলছে। কনকনে শীতের মধ্যে মেঝেতে পাশাপাশি গাদাগাদি করে থাকা খুবই কষ্টকর।
এদিকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে মেঝের দুই দিকেই ডায়রিয়া রোগী ভর্তি থাকায় অন্য রোগী ও চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হরিপুর মহল্লার এক রোগীর আত্মীয় শামসুল আলম বলেন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি হাসপাতালে ঢুকার মুখেই। অন্য সকল রোগী ও তাদের দেখতে আসা আত্মীয়দের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু বেড না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই। তাতে একদিকে যেমন চলাচলের রাস্তা ছোট হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনাও প্রবল হচ্ছে।
মুঠোফোনে সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, প্রচন্ড শীতের কারনে শিশুদের বিভিন্ন রোগবালাই বাড়ছে। শীতের প্রভাবেই ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। হাসপাতালে বেডের সংখ্যা সীমিত বিষয়টি স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধের ব্যবস্থা রয়েছে। ডায়রিয়াসহ শিশুদের শীতকালীন নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে বাড়তি যত্ন নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।