এফএনএস : বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের করা বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলসহ বেশ কিছু দাবিতে ভারতজুড়ে কৃষকদের ডাকে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। কৃষক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি কংগ্রেস, বিভিন্ন বামপন্থি দল, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিসহ অনেকেই মঙ্গলবারের এই ‘ভারত বনধ’-এ সমর্থন জানিয়ে মাঠে নেমেছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালেরও বনধে যোগ দেওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সোমবার থেকেই তাকে তার বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আম আদমি পার্টি।

এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ, জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। গুজরাটে ধর্মঘটের সমর্থকরা বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। তারা রাস্তায় টায়ার জ¦ালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। আহমেদাবাদ-বিরামগামের সংযোগস্থলে যানবাহন আটকে বিক্ষোভ করছে কংগ্রেস দলের সমর্থকরা। তেলঙ্গানায় পরিবহন কর্মীরাই বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। উড়িষ্যার ভুবনেশ্বর স্টেশনে রেল অবরোধ করেছেন বিভিন্ন বামপন্থি দলের কর্মী-সমর্থকরা। এই অবরোধে শামিল হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক ও কৃষক সংগঠন। কৃষকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার দিল্লিতে ট্যাক্সি না চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশন।

অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেসও দেশজুড়ে ‘চাক্কা জ্যামের’ ঘোষণা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছে বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অনেক এলাকায় ধর্মঘট সমর্থকদের সড়ক আটকে ক্রিকেট খেলতে দেখা গেছে। কৃষকদের এই বনধে সমর্থন জানিয়ে শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়েছেন। “এটা রাজনৈতিক বনধ নয়। এটা আমাদের আবেগ। দিল্লিতে যে সমস্ত কৃষক সংগঠন বিক্ষোভ করছে, কোনও দলের পতাকা হাতে নামেনি তারা। এই দুঃসময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত আমাদের। ওদের আবেগ বোঝা উচিত। “এখানে কোনও রাজনীতি নেই আর থাকাও উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রী হোন বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মন বলে যদি কিছু থাকে, নিজে থেকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে যাবেন ওরা,” বলেছেন তিনি।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, কৃষকদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সরকার বিতর্কিত নয়া কৃষি আইন সংস্কারের প্রস্তাব দিলেও কৃষক সংগঠনগুলো তাতে রাজি না হয়ে আইনগুলো বাতিলের সুস্পষ্ট দাবি জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবারের সর্বাত্মক ধর্মঘট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়াবে। কৃষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের ফের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।