শনিবার

১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বাগমারার সেই প্রতিবন্ধী পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন বিএনপি নেতা কামাল সংক্ষিপ্ত সংস্কার হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে, বৃহত্তর হলে আগামী জুনে : ড. ইউনূস রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়া উদ্বেগের : গুতেরেস রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা ১০ গ্রেডে ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটি আর নেই সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক ও তার স্ত্রীসহ ৪ জনের নামে মামলা ১ লাখ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা-জাতিসংঘ মহাসচিব লালপুরে রাণীক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার কোয়েল পাখির মৃত্যু রাজশাহী নগরীতে অটোরিকশায় যৌনহয়রানি, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

১২ লাখ টাকার চুক্তিতে ৩১ লক্ষ টাকা দিয়েও রক্ষা হলো না বাঘার সেলিমের

Paris
Update : শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা : রাজশাহীর সীমান্তবর্তী বাঘা উপজেলার আলাইপুর মহাজনপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক আফজাল হোসেন এর বড় ছেলে সেলিম হোসেন (২৭)। পরিবারের অভাব অনটন মেটানোর জন্য স্থানীয় আদম ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সাড়ে ১২ লাখ টাকায় ইতালি নিয়ে যাবার চুক্তি হয়। সে মোতাবেক সাড়ে ১২ লাখ টাকা শহীদ ও বারির নিকট প্রদান করেন সেলিমের পরিবার। টাকা প্রদানের পর গত ২৯ ডিসেম্বর-২০২৩ইং তারিখে বাড়ি থেকে সেলিম কে নিয়ে যায়। পরে সেলিম কে অমানবিক নির্যাতন করে পরিবারের নিকট আরও ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। ছেলেকে বাঁচাতে আরও ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। লাশ হতে হলো তাকে। তার মৃত্যুর খবরও দিয়েছে দালালরাই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেলিমের পরিবার।
নিহত সেলিমের পিতা জানান, আমার ছেলেকে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখান একই এলাকার মৃত ইনসার পাকার ছেলে শহিদ ও মহসীন আলীর ছেলে বারি ওরফে বারু নামে এই দুই ব্যক্তি। তাদের সাথে সাড়ে ১২ লক্ষ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। তবে সেখানে গেলে সেলিম কে আরও টাকার জন্য নির্যাতন শুরু করে তারা। আটকে রাখা হয় মাফিয়াদের নির্যাতনের ঘরে। প্রায় ১৩ মাস সেখানেই কাটে সেলিমের। পরে আমার ছেলেকে আটকে অমানবিক নির্যাতন শুরু করলে দালাল শহীদ ও বারি কয়েক দফায় আমাদের চাপ দিয়ে আরো ১৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা সহ মোট ৩০ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নেয়। এছাড়াও জোরপূর্বক ফাঁকা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নিয়ে বারি আমার ২ বিঘা জমি দখল করে নেয়। এর পরও তারা নির্যাতন চালায় সেলিমের উপর। নির্যাতনের এক পর্যায়ে মারা যায় সেলিম। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি পূরন চাই।
এ বিষয়ে সেলিমের ছোট ভাই ইমন বলেন, আমার প্রতিবেশী শহীদ ও বারীর যোগসাজশে আমাদের পরিবারকে নিস্ব করেছে। তারপরও আমরা চেয়েছিলাম আমার বড় ভাই সেলিম তাদের খপ্পর থেকে মুক্তি পাক। গত ১৩টা মাস আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অবশেষে গত বুধবার(৫ ফেব্রুয়ারি) শহীদ আশার বাণী শুনিয়েছিল। কিন্তু পরদিন বৃহষ্পতিবার বিকাল ৫ টায় জানায়, লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে স্ট্রোক করে সেলিম মারা গেছে। আমরা বার বার আমার ভায়ের ছবি/ভিডিও দেখতে চেয়েছি। কিন্তুু তারা দেখাতে পারেননি লাশ পুলিশে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় সেলিমের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এ বিষয়ে শহীদ ও বারীর বক্তব্য নেয়ার জন্য সরেজমিনে গিয়ে তাদের বাড়িতে তালা বদ্ধ পাওয়া যায়। পরে শহীদের মুঠোফোনে( ০১৭৩৭… ০৪) কথা হলে তিনি বলেন, সেলিমকে ইতালিতে পাঠাননি। অপর দিকে বারী ওরফে বারুর ব্যাবহৃত মোবাইল নম্বরে( ০১৭২২…..২৫) একাধিক বার কল দিলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি জানার পর পাকুড়িয়া ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান ও বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফখরুল ইসলাম বাবলু সেলিমের বাড়িতে গিয়ে শোক সন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান। এ সময় তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ঘটনায় সেলিমের পরিবার ও এলাকাবাসী,সেলিমের এমন পরিণতির জন্য দোষীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ.ফ.ম আছাদ জানান, ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়েছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকাবাসী জানান, মানব পাচারের একটি শক্ত সিন্ডিকেটের সাথে সম্পৃক্ত এই শহীদ ও বারী। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে কয়েকটি পরিবার কে নিস্ব করার অভিযোগ। এছাড়াও রয়েছে মাদক কারবারসহ নানা অপকর্ম। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris