ডেনমার্কের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই এখন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের দেশের জন্য গুরুতর হুমকি মনে করে। আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রিনল্যান্ড বিক্রির বিপক্ষে থাকা মানুষের সংখ্যা এর চেয়েও আরও অনেক বেশি। এমনটিই দেখা গেছে নতুন পরিচালিত এক জরিপে। ডেনমার্কে ১ হাজারের বেশি মানুষের ওপর এবছর ১৫ থেকে ২২ জানুয়ারির মধ্যে জরিপটি পরিচালনা করেছে ইউগভ। জরিপের ফল প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান। এতে দেখা গেছে, ডেনিশদের ৪৬ শতাংশই তাদের দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে হয় ‘মোটামুটি একটি বড় হুমকি’ নয়ত ‘খুবই বড় একটি হুমকি’ বলে মনে করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বারবার গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে হলেও দ্বীপটির দখল নেওয়ার হুমকিকে কেন্দ্র করে ডেনমার্ক এবং এর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডজুড়ে কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনার পর এই জরিপ চালানো হয়। আর্কটিক দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যা ৭৫ হাজার। আগে দ্বীপটি ডেনমার্কের কলোনি হিসাবে শাসিত হত। পরে গ্রিনল্যান্ড স্বায়ত্বশাসন পেলেও এখনও সেখানকার বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতি ডেনমার্কই পরিচালনা করে। তবে দ্বীপটির বাসিন্দাদের মধ্যে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাও আছে। তার এই আকাঙ্খা যখন গতি পেতে শুরু করেছে ঠিক তখনই ট্রাম্প এই দ্বীপটি দখলের আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং হুমকি-ধামকিও দিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটেই ইউগভের চালানো জরিপে দেখা গেছে, ডেনিশরা উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের চেয়েও বড় হুমকি মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রকে। উত্তর কোরিয়াকে হুমকি মনে করে ৪৪ শতাংশ ডেনিশ। আর ইরানকে হুমকি মনে করে ৪০ শতাংশ ডেনিশ। তবে রাশিয়ার ক্ষেত্রে এর হার সবচেয়ে বেশি। জরিপে অংশ নেওয়াদের ৮৬ শতাংশই বলেছে তারা মস্কোকে ডেনমার্কের জন্য হুমকি মনে করে। আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রিনল্যান্ড বিক্রির বিপক্ষে মত দিয়েছে ৭৮ শতাংশ ডেনিশ। অন্যদিকে, ৭২ শতাংশ ডেনিশ বলেছেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত গ্রিনল্যান্ডের। ডেনমার্কের নয়। আর্কটিকের বিশাল অঞ্চলটি কেনার কথা ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্সির প্রথম মেয়াদেও বলেছিলেন। তার যুক্তি ছিল, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। তবে দ্বীপটি বিক্রির জন্য নয়- একথা বারবারই বলে আসছেন ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। চলতি মাসের শুরুর দিকে ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী ফেদেরিকসেন বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ড কেবল এর বাসিন্দাদেরই, স্থানীয়রাই এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।-এফএনএস