স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি পক্ষ নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিগত ১৭ বছর অনৈতিক পন্থায় নির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পদ পদবীতে ছিলেন, তারাই এখন নগর বিএনপি’র কিছু অসাধু নেতাকে ঢাল করে নিজের লোকজনকে সংগঠণের নেতৃত্বে বসাতে মড়িয়া হয়ে উঠেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের ওইসকল দোসড়রা নিজেদের স্বার্থে আবারো কলুষিত করতে চাইছে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের নির্বচনকে।
অভিযোগগুলো করেন জেলা বাস মালিক সমিতি (সড়ক পরিবহন গ্রুপ)’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক পদে থাকা নজরুল ইসলাম হেলাল, রাজশাহী জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি সহ বাস মালিকদের। তারা জানান, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সংগঠণের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারা নিজেদের ইচ্ছেমাফিক চালিয়েছেন পরিবহন গ্রুপটি। মাত্র ৩০ টাকার সার্ভিস চার্জের বিপরীতে বাস প্রতি তারা আদায় করতো ৬৫০ টাকা করে। দীর্ঘ সতেরো বছর এভাবেই পকেট কাটা হয়েছে বাস মালিকদের। আওয়ামী সরকারের সেই দোসররা পরিবহন গ্রুপের একাংশকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করে সংগঠণের প্রতিটি কার্যকলাপে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির পায়তারা করছে। এছাড়াও মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্যদিয়ে বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করতেও তারা কুন্ঠাবোধ করছেনা।
বাসের মালিক ও দায়িত্বরতা জানান, বিগত ১৭ বছরে একটিবারের জন্যও সাধারণ সভার আয়োজন করেনি পূর্ববর্তী সময়ের নেতারা। উপরন্তু এবিষয়ে কেউ কিছু বলতে গেলে তারা রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে থামিয়ে রাখতো। অথচ আমি (হেলাল) ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার পর বিগত সাগে পাঁচ মাসে মোট ১১ বার সাধারণ সভার আয়োজন করেছি। এটাই নিয়ম। এই নিয়মেন চললে বাস মালিবদের চাওয়া পাওয়া ও সমস্যা-সম্ভাবনা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অবগত হওয়া যায়।
পরিবহন গ্রুপের দাপ্তরিক তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ সালের পর থেকে ২০২২ ও ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঐসময়ের ক্ষমতাধর আওয়ামী নেতৃবৃন্দরা পরিবহন গ্রুপের নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে; শুধুমাত্র ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন বেশি। ২০০১ সালে যেখানে সদস্য সংখ্যা ছিল ৫৩৩ জন। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগের দোসরা নিজেদের ভোট ব্যাংক বৃদ্ধির জন্য সেই সংখ্যাকে বৃদ্ধি করেছে ৬৭০ জনে। যাদের মধ্যে অধিকাংশ সদস্যই নিয়মনীতি ভায়োলেট করে সদস্য পদ পেয়েছেন। এই সংগঠণটিতে সদস্য হতে হলে নির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি মান্য সাপেক্ষে হতে হয়। সেটিকে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। আওয়ামী সরকারের দোসররা পরিবহন গ্রুপের একাংশকে অর্থের বিনিময়ে নিজেদের ধ্যাণ-ধারণার আয়াত্তে নিয়েনিয়েছে। আবার তাদেরকে দিয়েই বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশৃঙ্খল পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরির পেছনে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে নগর বিএনপি’র কিছু স্বার্ধান্বেষী নেতা-কর্মীদের। উল্লেখ্য সেই ধারাবাহিকতায় কয়েকমাস পূর্বে তারা পরিবগন গ্রুপের নিজস্ব কার্যালয়ে এসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ন্যাক্কাড়জনক ঘটনাও ঘটিয়েছে। সমস্ত দেশজুড়ে যেখানে চলমান রয়েছে সংস্কারের গতিশীল প্রক্রিয়া; সেখানে সংঘবদ্ধ চক্রের মিথ্যাচার, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হস্তক্ষেপের কারণে বর্তমানে দায়িত্বরতরা যথাযথভাবে কাজে মনোনিবেশ করতে পারছেনা। নিয়মানুযায়ী সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই সাপেক্ষে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আয়োজনের কাজে আমরা হাত দিতে চাইলে; সেখানেও বাঁধা হয়ে দাড়াচ্ছে স্বৈরাচার সরকারের আমলে যারা তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করেছেন বছরের পর বছর। তাদের দাবি হচ্ছে, ভোটার সংখ্যায় কোন প্রকার কাটছাট করা যাবেনা। পূর্ববর্তী তালিকানুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু, নিয়মানুযায়ী প্রতিটি নির্বাচনের আগে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন সাপেক্ষে ভোটের আয়োজন করতে হয়। কারণ, নিয়মবহির্ভূত পন্থায় যারা সদস্য ও ভোটার হয়েছেন; তাদের ভোটাধিকার থাকার কথা নয়। কিন্তু, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসড়রা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সড়ক পরিবগন গ্রুপকে সকলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার পায়তারা করছে। রাজশাহী পরিবহন মালিক সমিতি (সড়ক পরিবহন গ্রুপ)’র সুনামকে পুরণায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে; রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ সহ কেন্দ্রের নেতারা বিষয়টি যেনো গুরুত্ব নিয়ে দেখেন সেই আবেদন জানাই বলে মন্তব্য বর্তমান দায়িত্বরতদের। বিগত ১৭ বছর ধরে যারা কোন প্রকার নির্বাচনের আয়োজন করেনি; তারা আজ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসড়দের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভুয়া ভোটার তালিকাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রশ্নবিদ্ধ একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে চাইছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করে; পূর্বের সেই প্রশ্নবিদ্ধ ভোটার তালিকার মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করতে গেছে সেটিও হবে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্য আরেক রূপ বলে মন্তব্য দায়িত্বরতদের। বিগত ১৭ বছরে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের রন্ধেরন্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। সেই অনিয়মের বলয় থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে প্রয়োজন নানামুখি সংস্কার বলে দাবি করেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলাল।