বৃহস্পতিবার

১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
আজ প্রথম টেস্টে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা বিচারকের অভাবে কাটছে না লাখ লাখ মামলার জট পবার ইউএনওকে ইউপি চেয়ারম্যানদের ফুলেল শুভেচ্ছা নওগাঁর এক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গড়েছেন কয়েক কোটির টাকার সম্পদ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ ও অবসরের ৬৫ বছর বিবেচনার অনুরোধ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেলসন ম্যান্ডেলা পিস এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে মনোনীত হয়েছেন সাংবাদিক শিশির বাংলাদেশকে বাড়তি ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলো বিশ্বব্যাংক ক্ষমতাপালা বদলের জন্য গণঅভ্যুত্থানে আসেনি : আসিফ দশবছর এমপি গিরিতে’ই ৫০০ কোটি টাকার মালিক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দারা! শোভাযাত্রায় রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপি’র

‘প্রিয়জনদের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে স্বজনদের’?

Paris
Update : শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪

স্টাফ রিপার্টার : হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের ফিরে পেতে আর কত অপেক্ষা করতে হবে? এমন প্রশ্নই আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচিতে আসা হারানো মানুষগুলোর স্বজনদের। বাবার জন্য কাঁদছে সন্তান, সন্তানের জন্য কাঁদছে মা। স্বামীর জন্য স্ত্রী কাঁদছে, ভাইয়ের জন্য ভাই। নিখোঁজ মানুষগুলোর জন্য পরিবারের সদস্যদের শুধু কান্না আর কান্না। কথিত আয়নাঘর বা বন্দিশালার সঙ্গে জড়িত মানবাধিকার লঙ্ঘণকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনে বিচার করতে হবে এবং তাদেরকে কোন প্রকার দায় মুক্তি দেয়া যাবে না। গুমসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে ঘন্টাব্যাপি রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দেশের শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকারের এবং মায়ের ডাকের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকার’র রাজশাহীর সমন্বয়ক সাংবাদিক মঈন উদ্দিন খানের পরিচালনায় মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী সাংবাকি ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এবং বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ডাঃ নাজিব ওয়াদুদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান আব্দুল আউয়াল, স্টুডেন্ট রইটস এ্যাসেসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী সাংবদিক রাসেদ রাজন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী মেহেদী সজিব, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী ফহিম রেজা, রাজশাহী কোর্টের আইনজীবি ও মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোটেক নিজাম উদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ মোহাম্মদ কাউছারী, গুমের শিকার হয়ে ফিরে আসা শাইরুল ইসলাম, মানবাধিকার সংগঠন অধিাকারের বিবৃতি পাঠ করেন, গুমের স্বিকার আব্দুল কুদ্দুসের ছোট মেয়ে জেমি, গুমের শিকার মুরশালিনের পুত্র শাগর, গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দশের বোন ও মানবাধিকার কর্মী পারভিনন্নেছা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামান, মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার হোসেন ফিরোজ। এসময় শতাধিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অধিকার ও মায়ের ডাকের ঘোষনাপত্রে জানানো হয়, ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। গুম মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে এটিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধিন কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবহার করে দীর্ঘ সময় ধরে তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত ও দীর্ঘায়িত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও ভিন্নমতালম্বী ব্যীক্তদের গুম করেছে। ২০০৯ সাল থেকে দেশে গুম হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে শুরু হয়। অধিকারের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৯ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক আয়না ঘরে গুম হয়ে থাকা ব্যারিস্টার আরমান, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী এবং ৫ বছর গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা মুক্তি পেয়েছেন। এই কারণে অন্যান্য গুম হওয়া স্বজনদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে যে, তাদের স্বজনরাও ফিরে আসবে। প্রকৃত অর্থেই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকণ্ড এবং নির্যাতনের মতো ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। তাই প্রজাতন্ত্রের করা রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের প্রতিকার করতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি অধিকার ও মাায়ের ডাক আহবান জানান। এ সময় উপস্থিত বক্তার বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ গত দু’যুগেরও বেশি সময় ধরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকার অধিকারকে রুখে দিতে সব ধরণের বল প্রয়োগ করেছে এমনকি, অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান এবং সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দু’বছরের সাজা দেয়। এভাবে একের পর এক দমন-পীড়ন, গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের মাধ্যমে চরম সীমায় পৌঁছায়। যার ফলে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে হটিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। মানববন্ধন শেষে নগরীর গুরুত্ব সড়কে একটি র‌্যালি করে মানবাধিকার কর্মীরা। বক্তারা আরও বলেন, গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। গুমের আতঙ্ক দেশের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। ভবিষ্যতেও এ ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris