গুম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনভেনশনে সই করেছে বাংলাদেশ। দেশের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সই করেন। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনায় উপদেষ্টামণ্ডলী সভা চলাকালে কনভেনশনে সই করেন ড. ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রেস উইং জানায়, সই করার বিষয়টিকে ‘এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। ড. মুহাম্মদ ইউনুস কনভেনশনে সই করার সময় উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্যরা হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান। ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশান ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসন্স ফ্রম এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স’-এ বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব গতকাল বৃহস্পতিবার অনুমোদন করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চুক্তিতে বাংলাদেশের সইয়ের উদ্যোগটি নেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অগ্রাধিকারমূলক বিষয়সমূহের অন্যতম হলো প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করা ও এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা। এ লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশান ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসন্স ফ্রম এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স’ (আইসিপিপিইডি) শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনভেনশনে বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এটি জাতিসংঘের আওতাধীন একমাত্র আন্তর্জাতিক কনভেনশন যা বলপূর্বক গুমকে কেন্দ্র করে গৃহীত হয়েছে। যার লক্ষ্য হলেঅ জোরপূর্বক অন্তর্ধান বা গুম প্রতিরোধ করা, ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। আগামী ৩০ আগস্ট জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত এ-সংক্রান্ত দিবস (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ উধু ড়ভ ঃযব ঠরপঃরসং ড়ভ ঊহভড়ৎপবফ উরংধঢ়ঢ়বধৎধহপবং) উদযাপনের আগেই এই চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হলো। উল্লেখ্য, গুম বিরোধী সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করে। পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এই সনদের লক্ষ্য- গুম বন্ধের পাশাপাশি এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এই সনদে যুক্ত হয়েছে।-এফএনএস