গত সপ্তাহ থেকে নীতিনৈতিকতা-বিষয়ক অনেকগুলো নিয়মকানুন আইন হিসেবে নথিভুক্ত ও কার্যকর করা শুরু করেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। এরই আওতায় নারীদের মুখ ঢাকা এবং পুরুষদের দাড়ি রাখার নির্দেশসহ একটি নৈতিকতা আইন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রণয়ন করেছে দেশটি। এছাড়া গাড়ি চালানোর সময় বাজানো নিষিদ্ধ, বাধ্যতামূলক নামাজ আদায় ও রোজা পালন করার আইনও প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়। গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিচার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বারকাতুল্লাহ রাসোলি জানান, ২০২২ সালে তালেবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার জারি করা এক ডিক্রিতে ওই নিয়মকানুনের কথা জানানো হয়েছিল। এই নীতিগুলো ইসলামিক শরিয়া আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে পরিণত হয়েছে। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় জানায়, এই আইন অনুসারে, মন্ত্রণালয় (অপকর্ম প্রতিরোধ এবং পুণ্যের প্রচারের জন্য) ইসলামি শরিয়া অনুসারে ভালকে প্রচার এবং মন্দকে নিষেধ করতে পারবে। আইনগুলোতে আরও বলা হয়েছে, গাড়ির চালকদের নারী যাত্রী পরিবহনে পুরুষ অভিভাবকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, মিডিয়াকে শরিয়া আইনের অধীনে পরিচালিত হতে হবে এবং জীবিত প্রাণীর ছবি প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এরই মধ্যে একই ধরনের কিছু নিয়ম কার্যকর করা শুরু করেছে নৈতিকতা-বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এমনকি নিয়মভঙ্গের জন্য হাজারো মানুষকে আটকের ঘটনাও ঘটেছে। তবে নতুন করে নথিবদ্ধ নিয়মগুলো কতটা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিয়ম ভঙ্গের জন্য রাখা হয়েছে শাস্তির বিধানও। শাস্তির মধ্যে রয়েছে “পরামর্শ, ঐশ্বরিক শাস্তির সতর্কতা, মৌখিক হুমকি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, কারাগারে এক ঘন্টা থেকে তিন দিনের জন্য আটক রাখা এবং অন্যান্য কোনো শাস্তি।” এসব পদক্ষেপে ব্যক্তির আচরণ সংশোধন না হলে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হবে। ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেই আগের সংবিধান বাতিল করে তালেবান। ওই সময় তারা দেশকে শরিয়া আইন অনুযায়ী শাসন করার ঘোষণা দিয়েছিল। এরই ভিত্তিতে গত তিন বছরে নানা ধরণের আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করেছে তালেবান সরকার। যার দরুন দেশটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন নারীরা -এফএনএস