বৃহস্পতিবার

১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
আজ প্রথম টেস্টে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা বিচারকের অভাবে কাটছে না লাখ লাখ মামলার জট পবার ইউএনওকে ইউপি চেয়ারম্যানদের ফুলেল শুভেচ্ছা নওগাঁর এক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গড়েছেন কয়েক কোটির টাকার সম্পদ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ ও অবসরের ৬৫ বছর বিবেচনার অনুরোধ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেলসন ম্যান্ডেলা পিস এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে মনোনীত হয়েছেন সাংবাদিক শিশির বাংলাদেশকে বাড়তি ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলো বিশ্বব্যাংক ক্ষমতাপালা বদলের জন্য গণঅভ্যুত্থানে আসেনি : আসিফ দশবছর এমপি গিরিতে’ই ৫০০ কোটি টাকার মালিক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দারা! শোভাযাত্রায় রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপি’র

ব্যক্তিগত স্বার্থে আওয়ামী লীগকে নষ্ট করবেন না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Paris
Update : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪

অন্তবর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থে একটি বড় দলকে (আওয়ামী লীগ) নষ্ট করবেন না। এটা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। এটা বাংলাদেশের সম্পত্তি। সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে রাজধানীর সেনানিবাস সিএমএইচে আহত আনসার সদস্যদের পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এমন কিছু করবেন না যাতে আপনাদের জীবন বিপন্ন হয়। এদেশের জনগণ এখনো আপনাদেরকে (আওয়ামী লীগকে) গ্রহণ করতে আসেনি। আপনার আপনাদের পার্টি পুর্নগঠন করেন। এই পার্টির অনেক অবদান আছে বাংলাদেশে। এটা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। পলিটিকাল পার্টির মতো থাকেন। নির্বাচন এলে, নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করবেন। জনগণ ভোট দিলে ভোটে যাবেন। এই স্বপ্নটা যদি আপনারা দেখেন, তাহলে কী করবেন? আপনারা এই দেশকে আরেকজনের হাতে তুলে দেবেন। তিনি বলেন, আপনারা, আমাদের পূর্বপুরুষরা বা আমরা যে মুক্তিযুদ্ধ করলাম ৩০ লাখ লোক মারা গেল। সে ৩০ লাখ শহীদের ওপর দাঁড়িয়ে, আপনি দেশকে আরেকজনের হাতে তুলে দেবেন। আর যা করেন (সহিংসতা) এটা করবেন না। আর কিছু বলতে চাই না। এ দেশের জণগণ এত তাড়াতাড়ি কিছু ভুলে নাই। সময় দেন হয় তো ভুলে যাবে। আপনাদের নেতারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যাকে (নেতা) ধরছে, তাকে আমরাও বাঁচাতে পারছি না। অনেক নেতাকে অনেকে বাঁচিয়েছে। কে কোথায় আছে আমরা জানি। আওয়ামী লীগের বিষয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অনেক বড় পার্টি। আওয়ামী লীগের জন্য আমার অনেক সম্মান রয়েছে। এদেশের একরকম প্রধান পার্টি। একসময় আমাদের মত বাঙালির ভরসা জায়গা ছিল এই পার্টি। বাংলাদেশের ৫২ আন্দোলন ও ৬৯ এর গণ আন্দোলন ও স্বাধীনতায় এই পার্টি ভূমিকা রেখেছে। ব্যক্তিগত কারণে পার্টিকে নষ্ট করবেন না। এটা জাতীয় সম্পদ। আপনারা আসুন যারা নিয়মিত রাজনীতি করতে চান। মারামারি করে লাভ নেই। আর জনগণের মৃত্যু আমরা চাই না। এরইমধ্যে ৪০০ থেকে ৫০০ হয়তোবা এরও বেশি মানুষ মারা গেছে উভয় পক্ষের। আমরা উসকানি দিলে আর্মির ফায়ারে আপনারা টিকতে পারতেন না। আমরা আর্মিকে গুলি করতে বারণ করেছি। এই পুলিশকে দিয়ে কাকে মারিয়েছেন? পুলিশকে দিয়ে মারিয়েছেন আপনার সন্তানকে। একজন পুলিশ সদস্য কি বললেন, ‘স্যার একটা ছেলেকে মারতে কয়টা গুলি লাগে?’ অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থে একটি বড় দলকে (আওয়ামী লীগ) নষ্ট করেন না। এটা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। এটা বাংলাদেশের সম্পত্তি। কেউ যদি মনে করে কাউন্টার রেভ্যুলেশন করবেন। কাউন্টার রেভ্যুলেশন করতে হলে হাজার-হাজার লোকের রক্ত বইতে হবে। যদি আপনারা সে দায়িত্ব নিতে চান নেন। আমার কিছু করার নেই।
অস্ত্র জমা না দিলে মামলা : এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যাদের হাতে আন-অথরাইজ ওয়েপেন বা আগ্নেয়াস্ত আছে আগামী সাত দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট থানায় জমা দেবেন। জমা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হবে। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটি হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র মামলা অপরটি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র কাছে থাকায় মামলা হবে। নিষিদ্ধ অস্ত্র সাধারণ জনগণের কাছে কীভাবে গেল আনসার সদস্যদের ওপর যারা হামলা করেছে তাদের ছবি ও ভিডিও থেকে দেখলাম, সিভিল ড্রেসে বেশিরভাগই হচ্ছে যুবক। এই জনগণ কারা আমরা অবশ্যই খুঁজে বার করার চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, আমি অফার করছি আজ (গতকাল সোমবার)) থেকে সাত দিনের মধ্যে, আগামী সোমবারের মধ্যে অস্ত্রগুলো ফেরত আসতে হবে। ফেরত না এলে অস্ত্র অভিযানে যদি আমরা কারও কাছে অস্ত্র পাই, তার বিরুদ্ধে দুটি চার্জ লাগবে (মামলা হবে)। যদি নিজেরা জমা দিতে না পারেন তাহলে কারো মাধ্যমে দেন। যেটাই হোক এই অস্ত্রগুলো আমাদের দরকার।
গণমাধ্যম বন্ধের বক্তব্য প্রসঙ্গে : অন্তবর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, গতকাল (গত রোববার) আমি যে কথা বলেছি তার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। রাগের মাথায় বলেছি চাটুকারিতা করলে বন্ধ করে দেব। এটা আমার কাজ না। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভবিষ্যতে আশা করি, আমরা থাকি বা না থাকি, যারা পলিটিক্স করেন তারা সহিংসতা হামলা করলে তা প্রকাশ করবেন। প্রকাশ না করতে পারলে সাংবাদিকরা ধর্মঘটে চলে যাবেন। ধর্মঘটে গেলে কি আছে, এক মাস না খেয়ে থাকবেন। মরে তো যাবেন না। সংঘর্ষের ঘটনা একটি বেসরকারি টিভি দেখিয়েছে। আমি তাই ভাবছিলাম, অন্যরা দেখাবে। তিনি বলেন, কোনো মিডিয়ার বন্ধের পক্ষে আমি নই। আমি সব মিডিয়াতে গিয়েছি। প্রত্যেককে চিনি আমি। এর আগে, গত রোববার দুপুরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘চাটুকারিতা’ করলে মিডিয়া (গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান) বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দাবির বিষয়ে আলোচনা হবে : এদিকে গতকাল সোমবার) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের শীর্ষ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ক্যাবিনেটে আলোচনা করা হবে। তিনি বলেন, ক্যাবিনেটে আলোচনা করে যেগুলো এখন করা যায় সেগুলো করবো। আর যেগুলো সাংবিধানিক বিষয় বা সংবিধানে যদি কখনো হাত দেওয়া হয় সেগুলো সংবিধান সংশোধন করার সময় করা হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা আমাদের কাছে এসেছিলেন। আমরা খোলা মনে কথা বলেছি। আমি তাদের বলেছি, আপনারা সংখ্যালঘু শব্দটা ব্যবহার করবেন না। আপনার বলবেন ‘আমি ভিন্ন ধর্মের লোক অথবা বাংলাদেশি’। সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরু করতে করতে আমরা যেন বিষয়টাকে কেমন করে ফেলেছি। তারা কয়েকটা দাবি-দাওয়া দিয়েছেন, এসব অনেক পুরনো দাবি, নতুন কিছু নয়। তারা আমাদের কাছে একটা প্রমিস করেছেন যারা বুঝে না বুঝে একটা আন্দোলন করছে এটা সঠিক নয়। তারা দুর্গাপূজায় তিন দিন ছুটি দাবি করেছে। আমি মনে করি পূজায় দুই তিনদিন ছুটি দিলে সমস্যা কি? আমি বলেছি, আমি তো ডিসিশন মেকার না। আমি সচিব মহোদয়কে বলেছি এটা নোট করতে। তারা যে দাবি-দাওয়া দিয়েছেন সেগুলো নিয়ে আমরা ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আলোচনা করবো। তিনি আরও বলেন, ক্যাবিনেটে আলোচনা করে যেগুলো এখন করা যায় সেগুলো করবো। আর যেগুলো সাংবিধানিক বিষয় বা সংবিধানে যদি কখনো হাত দেওয়া হয় সেগুলো সংবিধান সংশোধন করার সময় করা হবে। আমাদের তো সংবিধান সংশোধন করার প্রবিশন নেই। তবে সংবিধানে হাত লাগাতেই হবে। আমরা স্বৈরাচারী নিয়ম চাই না। আমরা জবাবদিহিমূলক সরকার চাই। এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ঢাকার সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় ও মহাসচিব পলাশ কান্তি দে তাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরেন।-এফএনএস


আরোও অন্যান্য খবর
Paris