কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার ঘটনায় আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করেছিলেন। এ অবস্থায় তাদের অনেককে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। সেই সব প্রবাসীদের শাস্তি মওকুফে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। রোববার (১১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমকে ব্রিফ করার সময় উপদেষ্টা এ কথা জানান। তৌহিদ হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ করায় আবুধাবিতে যাদের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের মুক্তির বিষয়ে কাজ চলছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন বলে জানান তিনি। এ সময় প্রবাসীদের জন্য সেবার মানোন্নয়নে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘প্রবাসীদের জন্য আরও উন্নত সেবা নিশ্চিতের বিষয়টিতে লক্ষ্য রাখা হবে।’ প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে আমিরাতের বেশ কয়েকটি রাস্তায় গত ১৯ জুলাই জমায়েত করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ সময় দাঙ্গা উসকে দেয়ার অভিযোগে তাদের একটি দলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় দেশটির আদালত। এ ছাড়া অবৈধভাবে সেদেশে প্রবেশ এবং ‘সমাবেশে’ অংশ নেয়ায় আদালত আরও ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন। আদালত তাদের কারাবাসের মেয়াদ শেষে নির্বাসন এবং জব্দ করা সমস্ত ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেন।
মানববন্ধন : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের মানুষের পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন প্রবাসীরাও। আন্দোলনে নামার ফলে আটক হন তাদের অনেকে। আটক প্রবাসীদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে প্রবাসী অধিকার পরিষদ। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। প্রবাসী অধিকারের সভাপতি আরব আমিরাত প্রবাসী সালাউদ্দিন বলেন, ‘বিদেশে অ্যাম্বাসিগুলো রেখেছে প্রবাসীদের সহযোগিতার জন্য। কিন্তু উল্টো তারা আমাদের প্রতি জুলুম অত্যাচার করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আমরাও রেমিট্যান্স বন্ধ করার মাধ্যমে অর্থনীতিকে অচল করেছি। যার কারণে সরকার পতন সহজ হয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমরা প্রবাসীরা দিনরাত পরিশ্রম করি।’ অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিবাদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সম্পর্ক অনেক ভালো। দুবাইতে আমাদের ৫৭ জন রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে আটক করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ও তার উপদেষ্টাদের অনুরোধ করবো যত দ্রুত সম্ভব প্রবাসীদের মুক্ত করার জন্য।’ মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ইরাক প্রবাসী সুলতান সরকার। তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হয়ে আমরা রেমিট্যান্স শাটডাউন করার ফলেই দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। সরকার বিদেশি মুদ্রা এনে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত করে, কিন্তু প্রবাসীদের উন্নয়নে কোনো কাজ করে না। আমরা আটক প্রবাসীদের অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি করছি।’ নতুন সরকারের প্রতি প্রবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সব প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি।-এফএনএস