এফএনএস
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আগের বার্তাই পুনর্ব্যক্ত করল। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও বিরোধী কয়েকটি দলের তফসিল প্রত্যাখ্যান করার তথ্য তুলে ধরেন। তিনি এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আমরা যে বার্তা দিয়েছি, তা এখনো একই আছে। শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন- বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, আমরা তা-ই চাই। তিনি বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। একটি দলের বিরুদ্ধে আরেকটি দলের অবস্থানকে সমর্থন করি না।
ম্যাথু মিলার আরও বলেন, আমরা চাই, সব রাজনৈতিক দল সংঘাত এড়িয়ে চলুক ও সংযম পালন করুক এবং শান্তিপূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য একসঙ্গে কাজ করুক। রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি এবং রাষ্ট্রদূতের নিজের ও দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশে দূতাবাসগুলোতে আমাদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। কূটনীতিকদের প্রতি হুমকিকে আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিই। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এ মুখপাত্র বলেন, কূটনীতিকদের প্রতি সহিংসতা ও সহিংসতার হুমকি অগ্রহণযোগ্য। রাষ্ট্রদূত হাসকে হুমকির বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে বারবার তুলে ধরেছি। ম্যাথু মিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছি, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী আমাদের কূটনৈতিক মিশন ও কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা স্বাগতিক দেশের দায়িত্ব। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এই বাধ্যবাধকতা পূরণে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাই।
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাঁস ছুটি কাটাতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে কলম্বো গেছেন। তার ছুটিতে যাওয়ার কথা দুই সপ্তাহ আগেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে দূতাবাস। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত মাসের শেষ দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানতে পারে, পিটার হাঁস কয়েক দিনের ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যাবেন। তার অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রদূত হেলেন লাফার্ভ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে পিটার হাঁস ঢাকা থেকে কলম্বোর উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত শ্রীলঙ্কায় ছুটি কাটাবেন, নাকি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন-তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পিটার হাসের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকার অবগত বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকায় কর্মরত বিদেশি মিশনপ্রধানেরা যখন স্টেশন ছাড়েন, কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে প্রটোকলকে (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) জানিয়ে যান। তাদের সদর দপ্তরেও তারা সেটা জানান। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পিটার হাঁস ১৫ নভেম্বর ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে গত মাসের শেষের দিকে অবহিত করেছিলেন। সে জন্যই ২ নভেম্বর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। কারণ, এরপর ৫ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত পররাষ্ট্রসচিবের সৌদি আরব, জর্ডান ও সুইজারল্যান্ডে সফর ছিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূত তার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি চলতি সপ্তাহে ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোকেও জানিয়েছেন। তার ছুটিতে থাকার সময়কালে হেলেন লাফার্ভ যে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবেন, সেটিও তিনি মিশনগুলোকে অবহিত করেছেন।