তানোর থেকে প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়ন (ইউপির) বিসিআইসির সার ডিলার সুমন শীল মাটির ঘরে রাখছেন রাসায়নিক সার। দীর্ঘ দিন মাটির ঘরে সার রাখার কারনে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলছে বলে মনে করেন কৃষকরা। এতে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা গুদাম ঘরে সার মজুতের দাবি তুলেছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, উপজেলায় সাত ইউপি ও দুই পৌরসভায় ৯ জন বিসিআইসির সার ডিলার রয়েছে। এর মধ্যে তালন্দ, পাঁচন্দর ইউনিয়ন ও তানোর পৌরসভার তিন ডিলার পৌর এলাকায় ব্যবসা করতেন। পৌর এলাকার মধ্যে তালন্দ বাজারেই দুজন বিসিআইসির ডিলার দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবসা করত। কিন্তু গত আলু মৌসুমে সার নিয়ে মহা সিন্ডিকেট শুরু হয়। এক পৌরসভায় তিনজন ডিলার ব্যবসা করার কারনে সার পেতেও ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে হয় কৃষকদের। ওই বছরে কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদেন সাইফুল্লাহ আহম্মেদ। তিনি এসেই যে এলাকার ডিলার তাদেরকে সেই ইউনিয়নে ব্যবসা করার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক তালন্দ বাজার থেকে সুমনশীল কে তালন্দ ইউপির নারায়নপুর ও গোল্লাপাড়া বাজারে ব্যবসা করতেন ডিলার প্রনব সাহা। তিনি মুলত পাঁচন্দর ইউপির বিসিআইসির সার ডিলার। তাকেও পাঁচন্দর ইউপিতে ব্যবসা করার কঠোর নির্দেশ দেন। অবশ্য প্রনব সাহা আগে থেকেই পাঁচন্দর ইউপিতে ভবন ও পাকা গুদাম ঘর নির্মান করেছিলেন। কিন্তু সুমন শীল কোন গুদাম ঘর করেননি। সে তালন্দ ইউপির নারায়নপুর গ্রামের বালাইনাশক ব্যবসায়ী এনামুলের বাড়িতে সার রেখে বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু মাটির ঘরে সার রাখলে কার্যকারিতা থাকেনা। এজন্য সুমনশীলকে ছয় মাসের মধ্যে পাকা গুদাম ঘর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বছর পার হলেও এনামুলের মাটির ঘরেই রাখছেন সার।
কৃষকরা জানান, সুমনশীল গত এক বছর ধরে তালন্দ ইউনিয়নের নারায়নপুর এনামুলের দোকানে সারের ব্যবসা করে আসছেন। সে এনামুলের মাটির ঘরে ও মোড় আরেক ঘরে সার রাখেন। কিন্তু নিয়োমিত দোকানে পাওয়া যায় না। সে দীর্ঘ সময় তানোর পৌর এলাকার তালন্দ বাজারে ব্যবসা করত। যার কারণে বরাদ্দের সারগুলো তালন্দ বাজারের খুচরা সার ব্যবসায়ীদের কে গোপনে দিয়ে থাকেন। নারায়নপুর গ্রামের বেশকিছু ব্যক্তিরা জানান, সুমনশীলের নামে ডিলার থাকলেও পরিচালনা করেন রতন। কোনদিন সুমনশীলকে দেখা যায় না। যাবতীয় সবকিছু করেন রতন। সার এনে এনামুলের বাড়িতে রাখা হয়। সেখান থেকে এনামুল রাজত্ব করছেন। এনামুলের কথামত সার বিক্রি করেন রতন। সুনমশীল বলেন, মাটির ঘরে সার রাখা হয়না।
এদিকে পৌরসভার বিসিআইসির সার ডিলার আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলী বাবু। তাকে পৌর এলাকার মাঝখানে ব্যবসা করতে হবে। কিন্তু তিনি সেটা না করে পৌরসভার শেষ প্রান্ত তালন্দ বাজারে ব্যবসা করে আসছেন। অথচ কৃষি অফিস থেকে বাবুকে বারবার মাঝখানে আসার কথা বলা হলেও ক্ষমতার দাপটে তিনি তালন্দ বাজারে করছেন ব্যবসা।
সুত্রে জানা যায়, সার নীতিমালা অনুযায়ী পৌরসভায় ও এক ইউনিয়নে একজন করে বিসিআইসির ডিলার থাকবে। একজন ডিলারের অধীনে নয় ওয়ার্ডে নয় জন সাব ডিলার থাকবে। যাতে করে কোন সিন্ডিকেট না হয়। কিন্তু নীতিমালা অনুযায়ী সার বিতরণ করা হয়না বলে অহরহ অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, সুমনশীলকে ছয় মাসের মধ্যে পাকা গুদাম ঘর নির্মান করতে বলা হয়েছিল, এবং মোহাম্মাদ আলী বাবুকে পৌর এলাকার মাঝখানে পয়েন্ট করতে বলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব কার্যকর না করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।