রবিবার

১লা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

Norway

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যর তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন

Reporter Name
Update : সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

এফএনএস
ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান পেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। স্থানীয় সময় গত রোববার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে ঘোষণা করল ইউনেস্কো। চলতি বছরের মে মাসে কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সভায় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ইউনেস্কো থেকে ঘোষণা এল। ঘোষণা হওয়ার পরেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপকরাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সে লেখেন, ‘আমি খুব আনন্দিত এবং গর্বিত যে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর শান্তিনিকেতন এখন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিশ্ববাংলার গর্ব, শান্তিনিকেতনকে লালন করেছেন কবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম একে সমর্থন করে গিয়েছেন বাংলার মানুষ।’ তিনি আরো জানান, পশ্চিমবঙ্গের সরকার গত ১২ বছর ধরে এর পরিকাঠামো উন্নয়নের করে গিয়েছে। এখন তাকে স্বীকৃতি দিল ইউনেস্কো। তিনি এক্স-এ জানান, ‘জয় বাংলা, গুরুদেবকে প্রণাম। ’বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জানান, এই কৃতিত্বে অনেকেরই অবদান আছে। সর্ব প্রথম বলতে হয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর। এছাড়াও বলতে হয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কথা। এছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং আমাদের এখানে অনেক লোকজন আছেন, তাদের অনেকের কৃতিত্ব রয়েছে। উপাচার্য জানান, ১৯০১ সাল থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন স্বয়ং গুরুদেব। সেই যাত্রার একটা অধ্যায় আজ শেষ হল। এরপর আরো নতুন অধ্যায় শুরু হবে। স্বয়ং গুরুদেবের এতে সবথেকে বেশি কৃতিত্ব। আমাদের প্রত্যেকের প্রচেষ্টা থাকা উচিত, সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখলে এই প্রতিষ্ঠানকে রাখা যাবে না। বিশ্বে এই প্রথমবার একটি সচল বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউনেস্কো থেকে হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। পৃথিবীতে আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ধারাবাহিকভাবে সাংস্কৃতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের নিকট অবস্থিত একটি আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র শান্তিনিকেতন। ১৮৬৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নিভৃতে ঈশ্বরচিন্তা ও ধর্মালোচনার উদ্দেশ্যে বোলপুর শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশে এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০১ সালে শান্তিনিকেতনে স্কুল এবং ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীর পথ চলা শুরু। ১৯৫১ সালে এই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায়। শান্তিনিকেতনকে কে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে তার ইঙ্গিত অনেক আগেই দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এক্সে লিখেছিলেন, ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে সারা দেশের জন্য সুখবর। শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় রাখার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’ বিশ্বভারতীতে ইউনেস্কোর একটি প্রতিনিধি দল আসে। তারা সব কিছু দেখে যান। শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকাভুক্ত করার জন্য একটি দাবিপত্র তৈরি করেন সংরক্ষণ স্থপতি আভা লম্বা ও মণীশ চক্রবর্তী। দাবিপত্রটি ইউনেস্কোতে জমা দেয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। অবশেষে রোববার রাতে শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার কথা জানায় ইউনেস্কো। এক্সে ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির কথা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদিও। তিনি জানান, ‘একথা জেনে আনন্দিত হলাম যে, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্ন ও ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূর্ত রূপ শান্তিনিকেতন উৎকীর্ণ হয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব পরম্পরা তালিকায়। সব ভারতীয়ের কাছেই এ এক গর্বের মুহূর্ত।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris