রবিবার

১লা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

Norway

যে প্রত্যাশা নিয়ে দুর্গাপুর-পুঠিয়ার রাজনীতির মাঠে তাজুল কন্যা মুনি

Reporter Name
Update : রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার
‘বাবা ও বড় ভাইয়ের অসম্পূর্ণ ইচ্ছাকে পূর্ণতা দেবার পাশাপাশি এলাকার মানুষের জন্য এমন কিছু করতে চাই যেটা যুগযুগ ধরে সুবিধাভোগীরা স্মরণে রাখবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রবক্তা আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অদম্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দেশ। সমসাময়িক পরিস্থিতি বিবেচনায় সেই ইচ্ছে বাস্তবায়নে হতদরিদ্র, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য সবচাইতে ভাইটাল একটি বিষয়। আর সেটি হলো এলাকার মানুষকে স্বাবলম্বি করার মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণ। এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো বেশি উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে স্থানীয় ও গ্রামীণ অর্থনীতির পরিমন্ডলকে শক্তিশালীকরণ। আর তা না হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হবে’। এবারের সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে কথাগুলো বলছিলেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুকের কন্যা তানজিমা শারমিন মুনি।
কথাগুলো হচ্ছিল দৈনিক আমাদের রাজশাহী পত্রিকা অফিসের এক চা চক্রে। মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানাতে মুনি এসেছিলেন দৈনিক আমাদের রাজশাহী পত্রিকা অফিসে। সেই চা চক্রে তাজুল কন্যা মুনি তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে নিজের পরিবারের ওতোপ্রতো সম্পৃক্ততার কথা। তিনি জানালেন, বাবা আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষে সারাজীবন রাজনীতি করেছেন। সংসদ সদস্য হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। যখন এমপি ছিলেন না তখন একজন নিবেদিত ত্যাগী রাজনীতিবীদ হিসাবে এলাকার মানুষের পাশে সর্বদা থেকেছেন। বাবা নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন বলেই সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছিলেন। আজো এলাকায় গেলে বাবার ত্যাগের কথা মানুষ বলেন। বাবা’র পথ ধরেই হেঁটেছিলেন বড় ছেলে সদ্যপ্রয়াত রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বদরুল ইসলাম তাপস। বাবার মতো তিনিও আজ আর নেই। এবার বাবা ও ভাইয়ের পথ ধরেই এলাকাবাসীর চাওয়া ও ভালোবাসার মূল্য দিতে রাজনীতিতে আসছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুকের কন্যা তানজিমা শারমিন মুনি। তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
একপ্রশ্নের জবাবে মুনি বলেন, নারী হিসাবে দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি সফলভাবে দেশ চালাতে পারেন, তবে দেশের প্রত্যেক নারীর উচিৎ নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করা। মুনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রেরণা। মহিলা হলেই যে শুধু সংরক্ষিত আসনের দিকে চেয়ে থাকতে হবে তা কেনো? শুধু ছেলেরাই না, আমরা মেয়েরাও পারি তাদের সমতুল্য হতে। কখনো কখনো তাদের চাইতে বেশিকিছু করতে পারেন মেয়েরা। মুনি বলেন, আমি একজন নারী উদ্যোক্তা। তাই আমি আমার এলাকার বেকারত্ব দূরীকরণে উদ্যোক্তাতা তৈরির মাধ্যমে অত্র অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটাতে চাই। জনদরদী, সৎ ও সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে যে কোন অঞ্চলের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করার পাশাপাশি সংগঠনকেও শক্তিশালী করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তাজুল কন্যা মুনি।
তানজিমা শারমিন মুনি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। দাদা-বাবা-ভাই ও অন্যান্য স্বজনরা দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আওয়ামী লীগ আমাদের পুরো বংশের রক্ত-মাংসের সাথে জড়িয়ে আছে। মুনির দেয়া তথ্য মতে, দাদা কসির উদ্দীন মিঞা ছিলেন দুর্গাপুর থানার ৫নং ঝালুকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ভালবেসে দাদার পথ ধরেই মুনির প্রয়াত বাবা তাজুল ইসলামের রাজনীতির সূচনালগ্ন সেই ১৯৬৫ সালে ছাত্রলীগের হাত ধরে। ১৯৬৬ সালে ঈশ^রদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন মুনির বাবা সাবেক সংসদ সদস্য (রাজশাহী-৫, দুর্গাপুর-পুঠিয়া) তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক। ১৯৬৭-৬৯ রাজশাহী সরকারি কলেজে অধ্যয়ন রত অবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে সামনের কাতারে থেকে করেছেন আন্দোলন। ১৯৭০ সালে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হবার পরের বছরেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় স্বধীনতার যুদ্ধ। পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সকলের সম্পৃক্ততা থাকাসহ যুদ্ধকালীন সময়ে বাবা তাজুল ইসলাম গ্রামের তরুণদেরকে একত্রিত করে রাজশাহী শহরে নিয়ে যায় যুদ্ধের প্রশিক্ষণ করাতে। যার কারণে পাক হানাদার বাহিনী বাবাকে খুঁজতে শুরু করে। না পেয়ে গ্রামে হামলা করে। যুদ্ধকালীন সময়ে বাবা আমাদের গ্রামের তরুণদের সাথে নিজেও ভারতে যান উচ্চরত প্রশিক্ষণ নিতে এবং ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর ঝালুকা ইউনিয়নে মোট দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মনোনয়ন প্রত্যাশি মুনির বাবা মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম। ১৯৭৪ সালে তাজুল ইসলাম দূর্গাপুর থানা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি দূর্গাপুর থানা আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। গণতন্ত্রের লড়াইয়ে রাজনীতির মাঠে থাকায় ১৯৮০ সালে তিনি সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। ১৯৮৭ সালে মুনির বাবা প্রয়াত তাজুল ইসলাম রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে দীর্ঘ সময়ের সম্পৃক্ততা আর ত্যাগের কারণে জনগণ নির্বাচিত করেন তাজুল ইসলামকে। তিনি ১৯৯১ সালে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৫ সালে তাজুল ইসলাম রাজশাহী জেলা আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
মনোনয়ন প্রত্যাশি তানজিমা শারমিন মুনি বলেন, আমি এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেছি। এলাকার মানুষের ভালোবাসা আর সমর্থনে সত্যি খুব আনন্দিত। কারণ এলাকার মানুষ আমার বাবা ও ভাইকে কি পরিমাণ ভালবাসতো সেটা আমি এখন উপলব্ধি করছি। বাপ-দাদার সম্মান আরো বেশি উজ্জ্বল কারার পাশাপাশি তাদের অসম্পূর্ণ স্বপ্নকে পূর্ণতা দিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কোন বিকল্প নেই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেন তবে আমি তাঁর সম্মান রাখতে পারবো বলে আশা করছি ইনশাআল্লাহ।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris