রবিবার

১লা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

Norway

স্যালাইন রেখে নেই বললে ফার্মেসি সিলগালা

Reporter Name
Update : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

এফএনএস
স্যালাইনের চাহিদা ও সরবরাহে খুব বেশি পার্থক্য নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। একটি স্যালাইন স্টকে থাকার পরও কোনো ফার্মেসি যদি বলে নেই, তাহলে ওই ফার্মেসি সিলগালা করে করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল বুধবার স্যালাইনের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ভোক্তা ডিজি এসব কথা বলেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ভোক্তা ডিজি বলেন, ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবকে কাজে লাগিয়ে স্যালাইন বিক্রিতে সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। স্টক করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। একটি স্যালাইন স্টকে থাকার পরও কোনো ফার্মেসি যদি ক্রেতাকে বলে যে নেই, তাহলে ওই ফার্মেসি সিলগালা করে করে দেব। তিনি বলেন, আমরা যেহেতু দোকানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারি না, তাই আমরা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও ড্রাগিস্ট সমিতিকে চিঠি দেব যাতে লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়, পাশাপাশি বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি যেন নিজেদের ভাবমূর্তি উন্নয়নের জন্য যাতে ওই ফার্মেসির সদস্যপদ বাতিল করে দেয়। ভোক্তা ডিজি বলেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার কারণে চিকিৎসকরা রোগীদের স্যালাইন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এজন্য স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে। আমরা দেখলাম, বাজারে স্যালাইন নিয়ে হাহাকার অবস্থা, বিশেষ করে হাসপাতালের সামনের ফার্মেসিগুলোতে। রোগীর স্বজনরা যখন ফার্মেসিতে যাচ্ছেন, তখন তারা (বিক্রেতা) প্রথমে বলছেন স্যালাইন নেই। কিন্তু পরে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। ৮৭ টাকার স্যালাইন ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আমরা ১৫০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করি। দেশে ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ আমরা নিজেরাই প্রস্তুত করি। যেখানে আমরা আমাদের ফার্মাসিটিক্যাল খাত নিয়ে গর্ব করি, সেখানে স্যালাইনের সংকট, বাইরে থেকে আমদানি করতে হচ্ছে, এটি দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার পর সবগুলো স্যালাইন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন বাড়িয়েছে। শুধুমাত্র লিব্রা তাদের উৎপাদন কমিয়েছে। তবে তা ডেঙ্গুর কারণে নয়। তাদের যে সমস্যা আছে, তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর নজরে নিয়ে দ্রুত যেন তাদের সাপোর্ট দেয়, সেই অনুরোধ জানাই, যাতে তারা ডেঙ্গুর এই সময় তাদের সর্বোচ্চ উৎপাদন করতে পারে। এতে আমাদের স্যালাইনের যে ঘাটতি আছে, তা দূর হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ীদের প্রোটেকশন ও সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি, যাতে তারা ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারেন। কিন্তু কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে পুরো ব্যবসায়ী সমাজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হচ্ছে। এটি ভয়ংকর বিষয়। ড্রাগিস্ট ও কেমিস্ট সমিতির নেতারা যাতে বিষয়টি দেখেন, নইলে ভালো ব্যবসায়ীরাও অনৈতিক হয়ে যাবেন। দেশে বর্তমানে স্যালাইন উৎপাদন করে সাতটি প্রতিষ্ঠান। সভায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে স্যালাইনের চাহিদা বাড়ায় তারা তাদের উৎপাদন বাড়িয়েছেন। বর্তমানে তিন শিফটে এবং শুক্রবার বন্ধের দিনেও তারা স্যালাইন উৎপাদন করছেন। তবে শুধু লিব্রা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, তারা ব্যাংকের সাপোর্ট না পাওয়ায় স্যালাইন উৎপাদন কমিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারা অভিযোগ করেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার পর গত দুই মাসে ৮০ শতাংশ ফার্মেসি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে স্যালাইন পাচ্ছে না। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আশরাফ হোসেন বলেন, কিছুদিন ধরে স্যালাইনের সংকট দেখা যাচ্ছে। এই সংকটকে কাজে লাগিয়ে অনেকে দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু স্যালাইনের দাম আসলে বাড়েনি। কোনো ক্রেতা যদি বেশি দামে স্যালাইনকেনার রশিদ নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করে, তাহলে আমরা সেখানে অভিযান চালাব। এ সময় সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), এফবিসিসিআই, স্যালাইন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারাসহ বিভিন্ন ফার্মেসির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris