শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঘার খোর্দ্দবাউসা হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

Paris
Update : বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা

রাজশাহীর বাঘায় খোর্দ্দবাউসা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ এর বিরুদ্ধে আদালতের শোকজ উপেক্ষা করে টাকার বিনিময়ে পছন্দের লোকজনকে  নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩১ মে) সকাল ১০টায় বাঘা মডেল প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে  ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক সদস্য’র ব্যানারে  সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ করা হয়। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে অবৈধভাবে দেয়া নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে অভিভাবক সদস্য মুঞ্জুর রহমান  বলেন, আমি  মো.মুন্জুর রহমান   অভিভাবক সদস্য (ছাত্রছাত্রী) খোর্দ্দ বাউসা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঘা, রাজশাহী আমার সঙ্গে উপস্থিত মো.ইব্রাহীম শ্রী নরেশ, মো. বাবলু, মো. ছানার আলী, রব্বেল আলী, সহ অন্যান্য ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক সদস্য এবং  আড়ানি  ইউপি সদস্য মো.  জালাল উদ্দিন, আড়ানী ইউপি ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক  আনসার আলী, বাউসা ইউপি ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. আইনাল হকসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গসহ এলাকাবাসী আপনাদের সকলের উপস্থিতিতে এই মর্মে সংবাদ সম্মেলন করছি যে, অত্র উপজেলার ১৯৯৪ সালে  প্রতিষ্ঠিত খোর্দ্দ বাউসা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিদ্যালয়টি সুনামের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছে। কিন্তু গত তিন বছর পূর্বে অবৈধভাবে গঠিত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তার হোসেন সম্পুর্ন অন্যায়ভাবে পেশী শক্তির বলে বিদ্যালয়ের স্বনামধন্য প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান ওরফে মতিকে সাময়িক বরখাস্ত করেন । এরপর সহকারী শিক্ষক আব্দুল লতিফ কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হয়। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে আব্দুল লতিফ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি প্রস্তুত নিতিমালা লঙ্ঘন করে  মুক্তার হোসেনের  জামাই আড়ানি পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিবন আহমেদ বাপ্পি কে সভাপতি  করা হয়  এবং তার (সভাপতি) সঙ্গে যোগসাজস করে গত ১০ ফেব্রুয়ারি  জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি  জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের ১৭ জন অভিভাবক সদস্য বাদি হয়ে গত ৫ এপ্রিল অবৈধ কমিটি বাতিল ও নিয়োগ কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে ( মামলা নম্বর -৪৪/২৩) ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রিবন আহমেদ বাপ্পিসহ নয় জনের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ ও কারন দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন। যা গত ৯ এপ্রিল সকল বিবাদিগন কোর্ট কর্তৃক প্রেরিত চিঠি বিলিকারির নিকট থেকে গ্রহন করেন। শোকজ নোটিশ প্রাপ্তির একদিন পর ১১ এপ্রিল কোনরুপ পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ।  কিন্তু গনমাধ্যম কর্মিগন বিষয়টি জানার পর জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিনের নিকট আদালতের শোকজ নোটিশের পরেও কিভাবে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা  অফিসার নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ.খ.ম হাসান কে নির্দেশ দেন এবং সে মোতাবেক পরীক্ষা স্থগিত  হয়ে যায়। কিন্তু এরপর নাটকিয়ভাবে সভাপতির সঙ্গে যোগসাজষ করে ডিজি প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর ব্যতিরেকেই তিনজনকে নিয়োগ দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ।নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজন নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসায় বিষয়টি  গ্রামবাসিসহ আমরা অবিভাবকসদস্যবৃন্দ অবগত হয়। অবগত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট নিয়োগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের কে সঠিক তথ্য না দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করছেন।

সহকারি প্রধান শিক্ষক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া মোট তিনটি  পদে বিধি বহিভূর্তভাবে আদালতকে অবমাননা করে  অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে পছন্দের লোককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে  বরঞ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার  রহস্যজনকভাবে  তিনটি পদের নিয়োগ সম্পুর্ন করার জন্য পাঁয়তারা করছেন। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষায় মাত্র কয়েকজন অংশগ্রহণ করলেও  লোকদেখানো ওই পরীক্ষার মাধ্যমে এই নিয়োগকেই বৈধতা দেওয়ার চেস্টা করছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ।লিখিত বক্তব্যে  আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুন্ন করে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অর্থ বানিজ্য করে কৌশলে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছে সংশ্লিষ্টগন।

এই স্কুলে এক নায়কতন্ত্র চলছে। সাময়িক বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান   ওই স্কুলের জমিদাতা। অথচ  তাকে অন্যায়ভাবে তিন বছর থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে রাখা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক তাঁর বহিষ্কারাদেশ এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন। গত ১০ মে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিদ্যালয় পরিদর্শক তাঁর বকেয়াসহ পুর্নাঙ্গ বেতন প্রদানের নির্দেশও  প্রদান করেন। কিন্তু আজ অব্দি সভাপতি  ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার জোরে প্রধান শিক্ষকের বেতন স্লিপ ছাড়ছেননা।

আরও উল্লেখ থাকে যে, আগামী মাসের (জুন) ৩০ তারিখ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু  কমিটিকে ম্যানেজ করে আবারও দুই বছরের জন্য ওই পদে থাকার পায়তারা করছেন তিনি  ।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, আপনাদের মাধ্যমে আমরা জেলা শিক্ষা অফিসার সহ শিক্ষামন্ত্রীর নিকট  আকুল আবেদন জানাই, বিপুল পরিমান অর্থ বানিজ্েযর মাধ্যমে আদালতের শোকজ অমান্য করে   সহকারি প্রধান শিক্ষকসহ ৩টি পদে যে নিয়োগ দান করেছেন( একটি পদে কোন প্রার্থী উপস্থিত না হওয়ায় শুন্য রাখা হয় ) তা তদন্তপূর্বক  বাতিল করে দুর্নীতিবাজ শিক্ষক আব্দুল লতিফসহ  জড়িত সকলের শাস্তির আওতায় আনা হোক। অন্যথায়  বিদ্যালয়ের সুনামক্ষুন্নসহ শিক্ষা দানে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে।  অতিসত্তর তদন্ত করে অবৈধভাবে দেওয়া এসব নিয়োগ বাতিল ও সুষ্ঠুভাবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক সদস্যবৃন্দসহ এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত  প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের আত্মপক্ষের বক্তব্য নিতে তার  সাথে দেখা করতে বিদ্যালয়ে গেলে তিনি সাংবাদিকদের আসার খবরে প্রতিষ্ঠান থেকে গোপনে সটকে পড়েন। এরপর তার মোবাইলে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আখম হাসান বলেন, ওই নিয়োগ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নাই। আমি একটি তদন্তের কাজে বাইরে আছি, আগামী কাল অফিসে আসেন। বিস্তারিত কথা হবে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris