শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাজশাহীতে হাসপাতালে বাড়ছে রোগী তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রাইমারি স্কুলে অ্যাসেম্বলি না করানোর নির্দেশ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে : জাতিসংঘ রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত রাজশাহীতে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ধামুইরহাটে ভূয়া সিআইডি গ্রেফতার রাজশাহীতে বিভাগীয় পেনশন মেলা অনুষ্ঠিত স্ত্রীকে কারাদণ্ড দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে ইমরান খানের হুমকি ইরানের ইসফাহান কেন হামলার টার্গেট?

বিদেশ থেকে আসা মাংসে জনস্বাস্থ্যের হুমকি বাড়ছে

Paris
Update : মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

এফএনএস
বিদেশ থেকে টনে টনে দেশে আসছে হিমায়িত গরু ও মহিষের মাংস আসছে। আর তাতে জনস্বাস্থ্যের হুমকি বাড়ছে। মাংস আমদানির জন্য সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় কিংবা চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) পরীক্ষাগারের সনদ দিয়েই মাংস আমদানি হচ্ছে। গত বছরের জুন থেকে মাংস আমদানি করতে হলে আগে থেকেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি নেয়ার বিধান করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আমদানির অনুমতি নিতে আবেদনও পড়ছে। এখন পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় কাউকে আমদানির অনুমতি না দিলেও অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে অনুমতি নিয়ে আমদানি হচ্ছে মাংস। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষায়ও ধরা পড়েছে খাবার অযোগ্য ওসব মাংস মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দীর্ঘ সময় মাংস সতেজ রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য। তাতে জনস্বাস্থ্যের হুমকি বাড়ছে। মৎস্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সাতক্ষীরা, লালমনিরহাট, যশোর ও কুড়িগ্রামের সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে দেশে মাংস ঢুকছে। আর তা কয়েক হাত বদল হয়ে দেশের হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলে যাচ্ছে। ওই মাংস তাজা রাখতে রাসায়নিক মিশিয়ে অসাধু চক্র ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। চোরাই পথে আসা মাংস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে; আবার কোনো ক্ষেত্রে ‘ম্যানেজ’ করে ঢাকাসহ সারাদেশে চলে যাচ্ছে। আর রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ওসব মাংস হোটেল-রেস্তোরাঁ ও পাড়া-মহল্লার মাংসের দোকানে চলে যাচ্ছে। আগে থেকেই চাহিদা দেয়া তারকা হোটেল, সুপারশপ, অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে চায়নিজ হোটেলে ওসব মাংস সরবরাহ করা হচ্ছে। শুধু কারওয়ান বাজারেই প্রতিদিন অন্তত ৪০ থেকে ৫০ মণ প্যাকেটজাত হিমায়িত মাংস গরুর মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে। হোটেল-রেস্টুরেন্টে হিমায়িত মাংসের চাহিদা বেশি। কারণ এসব মাংসে কোনো হাড় বা চর্বি থাকে না। কাবাব ও কালাভুনায় এ মাংস বেশি ব্যবহার হয়। সূত্র জানায়, নতুন বাণিজ্যনীতি কার্যকর হওয়ার পর ভারত থেকে মাংস আমদানিতে কিছু কঠোরতা আরোপ করা হয়। মাংস আমদানি করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদন প্রয়োজন। তাছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মাংস আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়। এমন অবস্থায় অনেকে ভিন্ন কৌশল নিচ্ছে। আমদানিকারকরা অফাল (গরু-মহিষের মাংস ছাড়া পায়া, নাড়িভুঁড়ি, জিহ্বাসহ অন্যান্য) ঘোষণা দিয়ে মাংস আমদানি করছে। অফালের ওপর শুল্ক ৫ শতাংশ। অফাল ঘোষণা দিয়ে মাংস আমদানির অভিযোগে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। পাশাপাশি পুরোনো এলসির মাংসও দেশে আসছে। এখানে বড় সিন্ডিকেট জড়িত। অভিযোগ রয়েছে, কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহায়তায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে মহিষের মাংস দেশে আনছে। তাছাড়া প্রতি কনটেইনারে ঘোষণা দিয়ে যে পরিমাণ মাংস আনার কথা, তার চেয়ে বেশি আনা হচ্ছে। সূত্র আরো জানায়, বছরে দেশে ৭৫ দশমিক ২ লাখ টন মাংসের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৯২ দশমিক ৬৫ লাখ টন মাংস উৎপাদন হয়। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি। বাংলাদেশ মিট ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমআইটিএ) সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ সাধারণত বছরে ১০ থেকে ১২ হাজার টন হিমায়িত মাংস আমদানি করা হয়। তার বাইরে ভিন্ন উপায়ে অঘোষিতভাবেও অনেক বেশি মাংস দেশে আসছে। বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেল ও দূতাবাসের জন্য ভারত থেকে মাংস আমদানির কথা বলা হলেও বাস্তবে ওসব মাংস রাজধানীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বিক্রি হচ্ছে। আর সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না করার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ নষ্ট হচ্ছে। ফলে আমদানি করা ওই মাংস দেশের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি বয়ে আনছে এবং দেশীয় মাংস শিল্পের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. এমদাদুল হক তালুকদার জানান, আমদানি-রপ্তানির বাণিজ্য নীতি অনুমোদন হওয়ার পর থেকে অনেক আবেদন এলেও মাংস অনুমতি দেয়নি। আর মহিষের মাংসের অবৈধ আমদানির বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাংসের মান নিশ্চিত করতে চলতি বছর থেকে লাইসেন্স চালু করা হয়েছে। মাংস থেকে রোগবালাই যেন মানবদেহে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য মাংস বিক্রেতারা যত্রতত্র পশু জবাই করতে পারবে না। কসাইখানায় নিয়ে পশু জবাই দিতে হবে। সেখানে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, নিরাপদ জবাইয়ের মাধ্যমে মাংস সরবরাহ করতে হবে। অন্যদিকে এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ জানান, নতুন করে কোনো মাংসের আমদানির অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। আগের এলসির মাংস আসছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে কোনো আমদানির অনুমতি দিয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নীতিমালা অনুযায়ী কোনো পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা যায় না। কিন্তু আমদানি নিরুৎসাহিত করতে যা যা দরকার তা করা হচ্ছে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris