বৃহস্পতিবার

২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তানোরে ৫০ হাজার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ ফলন-দামে খুশি কৃষক

Paris
Update : রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আব্দুস সবুর, তানোর
রাজশাহীর তানোরে রেকর্ড পরিমান প্রায় ৫০ হাজার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। দেশ স্বাধীনের পর এই প্রথম এত পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। সরিষা উঠতে শুরু করেছে ফলন ও ভালো দামে খুশি হচ্ছেন চাষীরা। এতে করে সল্প খরচে অধিক লাভ পাচ্ছেন কৃষকরা। ফলে আগামীতে আরো বেশি পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, উপজেলায় চলছে বোরো রোপন। সেই সাথে সরিষা কাটা মাড়াই চলছে। কারন সরিষা তুলে ওই জমিতে বোরো রোপন করবেন চাষীরা। উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠে হয়েছে সরিষা চাষ। যা ইতিপূর্বে কখনো হয় নি। যে সব জমিতে অতীতে আলু চাষ হয়েছিল সেই সব জমিতে এবার সরিষা চাষ করে বাম্পার ফলন পাচ্ছেন চাষীরা।
সুত্রে জানা যায়, বিগত বছর থেকে এখন পর্যন্ত সকল ধরনের তেলের দাম দ্বিগুন। আমদানি নির্ভর সোয়াবিন ও পাম ওয়েল তেল। বিশেষ করে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে লাগাম হীন তেলের বাজার। যার কারনে দেশে তেল উৎপাদন করতে দেশব্যাপী সরকার সরিষা বীজ ও সার বিনা মুল্যে কৃষকদের দেন। যার কারনে সারা দেশের সাথে তাল মিলিয়ে উপজেলায় রেকর্ড পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। অতীতে হাতে গোনা কিছু কৃষক সরিষা চাষ করতেন। কিন্তু প্রনোদনা পেয়ে উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে সরিষা চাষ করেছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
কামারগাঁ ইউপি ছাঐড় গ্রামের কৃষক আব্দুল জানান, ২ বিঘা জমিতে সরিষা রোপন করেছি, সরিষার গাছ ভালো আছে, ১০-১২ দিনের মধ্যে তুলা হবে। বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একই এলাকার কৃষক মামুন ৩ বিঘা, আপেল মোহাম্মাদ আলী পুর দেড় বিঘা, তমিজ হাতিনান্দা দেড় বিঘা,জুয়েল ১ বিঘা, জাহাঙ্গীর দশ কাঠা, আব্দুর রহমান গুবিরপাড়া ১০ কাঠা,হাবিবুর ১ বিঘা জমিতে সরিষা রোপন করেছেন। তবে গুবিরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, ১০ কাঠা জমিতে সরিষা রোপন করে মাড়াই করা হয়েছে, কিছু কম তিন মন সরিষা হয়েছে। চাষীরা আরো জানান, যাদের নিজস্ব জমি, তাদের খরচ বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা হবে।আর লীজের জমিতে ৭ হাজার টাকা খরচ হবে। সরিষা চাষে খরচ আরো কম হত যদি সার কীটনাশকের দাম বাড়তি না হত। কৃষি অফিস সুত্র জানা যায়, এই প্রথম উপজেলায় ৬ হাজার ২১০ হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বারি-৯- জাতের সরিষা ৮৩ হেক্টর, বারি ১৪,- ৪৭৮৬ হেক্টর- বারি১৫- ৭৩ হেক্টর বারি ১৭- ১১৮৯ হেক্টর বারি ১৮-৪৭ হেক্টর বিনা -৯ ২৪ হেক্টর এবং বিএডিসি-১- ৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ খরচ ৭ হাজার টাকা, বিঘায় ফলন নিম্মে ৬ মন, বাজারে ১ মন সরিষা প্রকার ভেদে ৩২০০-৩৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিঘায় নিম্মে হলেও ৭ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, বর্তমান সরকার তেলের ঘাটতি মিটাতে সরিষা চাষের সঠিক সময়ে উপজেলার ৩৫০০ জন প্রান্তিক কৃষক বীজ ও সার প্রনোদনা পেয়েছিলেন। একারনে রেকর্ড পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষা চাষে খরচ কম, লাভ ভালো। সরিষা থেকে তেল, মধু ও জালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে এবং সার্বক্ষনিক মাঠ তদারকির ফলে রোগ বালা নেই। যেখানেই সমস্যা হয়েছে, সেখানেই পৌছে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর সুফলও পেয়েছেন চাষীরা। সরিষা মাড়াই করে বা খোজ নিয়ে জানা গেছে ৬- ৭ মন ফলন হচ্ছে। আগামীতে আরো বেশি জমিতে সরিষা চাষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই কৃষিবিদ কর্মকর্তা।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris