শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংসদে আওয়ামী লীগ-জাপা এমপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে স্পিকারের রুলিং

Paris
Update : বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

এফএনএস
জাতীয় সংসদে গত সোমবার সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত ইস্যুতে সরকার দলীয় এমপি মোতাহার হোসেন ও জাতীয় পার্টির এমপিদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সংসদে রুলিং দিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকে স্পিকার সরকার দলের এমপির বক্তব্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়- এমন বিষয়গুলো এবং বিরোধী দলের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের বক্তব্যের অসংসদীয় ভাষা এক্সপাঞ্জ করেন। এদিকে স্পিকারের রুলিংয়ের আগে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সংসদে গত সোমবার এরশাদের জামানত বাতিল ইস্যুর প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন। তারা কয়েকজন ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বেঈমানি ও বিদ্রোহ করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন মহাজোটে হয়েছিল। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টি সবসময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনমুখী দল। বিরোধী দলের সংসদ বর্জনের রীতি যে ভালো না, তা জাতীয় পার্টিই প্রমাণ করেছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, সংসদের ভেতরে ফাইল ছোড়াছুড়ি, স্পিকারের কাছে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা খারাপ উদাহরণ ছিল। আমরা একটা ভালো সংস্কৃতি চালু করেছি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল। আমাদের চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চূড়ান্ত সময়ে বললেন- তিনি নির্বাচন করবেন না এবং সারাদেশের সব প্রার্থীকে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য চিঠি দেন। নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করে নেন। সেদিন এমন একটা অবস্থা হয়েছিল.. বিএনপি নির্বাচনে আসে না। কোনো দল আসবে না। জাতীয় পার্টি যদি না আসে, তাহলে বাংলাদেশে একটা অসাংবিধানিক পরিস্থির সৃষ্টি হতো। সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হতো। সেদিন রওশন এরশাদ এবং আমরা কয়েকজন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বেঈমানি ও বিদ্রোহ করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচন করেছিলাম। লালমনিটরহাট-১ আসনে এরশাদের নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, সেই নির্বাচনের সময় এরশাদ সাহেব লালমনিরহাট, রংপুরসহ কয়েকটি আসনে আগেই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। রংপুরেও তিনি নির্বাচন করতে চাননি। আমরা শুধুমাত্র বৈধতার জন্যৃ এই সংসদে এরশাদ সাহেবের মতো লোক আছে, এটা প্রমাণ রাখার জন্য সেদিন আমরা কষ্ট করে তাকে নির্বাচন করার ব্যবস্থা করেছি। লালমনিরহাটে তিনি নির্বাচন করেন নাই। লালমনিরহাট-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মোতাহার হোসেনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, গতকালকে (গত সোমবার) যিনি বক্তব্য রাখলেন। ২০১৪ সালে আমরা রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে যদি না আসতাম, তাহলে তিনি এমপি বা প্রতিমন্ত্রীও হতে পারতেন না। আমাদের নির্বাচন করার কারণে তিনি প্রতিমন্ত্রী হতে পেরেছিলেন। মানুষ যে কেন ভুলে যায় অতীত। তিনি বলেন, এরশাদ সাহেব নির্বাচন করেন নাই। লালমনিরহাটে তিনি প্রত্যাহার করেছিলেন। কিন্তু তিনি (মোতাহার হোসেন) কী করে বলেন যে, এরশাদ সাহেবকে পরাজিত করেন। তার মতো লোকৃ আমরা কি বলতে পারি- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফেল করাবো। এত বড় দুঃসাহস কি আমার হবে? এইরকম দুঃসাহসিক কথা তিনি কী করে বললেন? তিনি অসত্য কথা বলেছেন। চুন্নু বলেন, ২০১৪ সালে এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আমরা কয়েকজন বেঈমানি করে নির্বাচন করেছিলাম বলেই নির্বাচন হয়েছিল। তিনি প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। আজকে কী করে এরশাদ সাহেব সম্পর্কে এই কথা বলতে পারে। এরশাদ সাহেব আর যাই করেন, কাবিখা বিক্রি করেন নাই। বালু বিক্রি করেন নাই। অনেকেই এগুলো করেন। তিনি মোতাহার হোসেনের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, নির্বাচন করেন নাই। তাকে ফেল করানো হয়েছে। পরে সোমবারের বক্তব্যের বিষয়ে স্পিকার রুলিং দিয়ে বলেন, গতকাল (গত সোমবার) রাষ্ট্রপতির ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বক্তব্যদানকালে রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এমন যে বিষয়গুলো উত্থাপন করেছিলেন, সেই সব বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হলো। সেই সঙ্গে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ তার বক্তব্যে যে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছেন, তাও এক্সপাঞ্জ করা হলো।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris