পবা প্রতিনিধি
রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের পোড়াপুকুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সামাদ জিল্লুর। তিনি আওয়ামী লীগ এর একজন সক্রিয় সদস্য ও আওয়ামী লীগ পাগল বলে এলাকায় পরিচিত। বর্তমানে তিনি ললিতাহার গ্রামে বসবাস করছেন। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে তিনি আওয়ামী পরিবারের সাথে যুক্ত রয়েছেন। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর একজন অন্ধ ভক্ত ও অনুসারী। সেইসাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর আদর্শ। অন্ধ ভক্ত হওয়ায় তিনি দলের জন্য যা কিছু করেন তা মনপ্রান থেকে করেন। এজন্য এলাকার লোকজন তাঁকে পাগল বলে ডাকে। দলের প্রতি ভালবাসার বহি:প্রকাশ থেকে তাঁর মোটর সাইকেলে লাগিয়েছেন মাইক, লাল ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরী করা নৌকা, আছে নিজের ছবি। এভাবে মোটর সাইকেলের সাথে সব কিছু লাগিয়ে পারিলা ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় প্রতিদিন জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষন প্রচার করে বেড়ান। শুধু তাই নয় তিনি কয়েকজন ব্যক্তিকে নিজ জমিতে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিয়ে গৃহহীন থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এগুলো করে তিন ক্ষ্যান্ত নন। তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারী প্রচারণা নিজ উদ্যোগে মোটর সাইকেলে করে একই কায়দায় প্রচার করে বেড়ান। সেইসাথে করোনা প্রতিরোধে তিনি প্রচারণাসহ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। নিজের খেয়ে কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই তিনি একাজ করে চলেছেন। এক কথায় তিনি সামাজিক কাজ এবং করোনা কালীন সরকারী নির্দেশনা সামান্য হলেও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এ ধরনের কাজ করে চলেছেন বলে এলাকাবাসী জানান।
এ বিষয়ে বামন শিকড়ের বাসিন্দা সুজন কবির, কালুব্যের গ্রামের ইমন ও বুড়িপুকুরের শাহাদাতসহ আরো অনেকে বলেন, তারা বৃদ্ধি হওয়া থেকে আব্দুস সামাদকে আওয়ামী লীগ করতে দেখছেন। অনেকে শত্রুতার করে অন্য কথা বললেও আসলে তিনি একজন প্রকৃত আওয়ামী লীগ এবং তাঁর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য কার্ডও রয়েছে। বামন শিকড়ের রিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। এ অবস্থা দেখে জিল্লুর আমাদেরকে তাঁর নিজস্ব জায়গা দিয়ে সেখানে বাড়ি করে দিয়েছেন। এখন তারা সেখানে নিশ্চিন্তে বসবাস করছেন।
তারা বলেন, সামাদ ইদ্রিস আলী ও মৃত আইয়ুব ফকিরকেও নিজ জমিতে বাড়ী করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি অপরের বসবাসের ব্যবস্থা করেন। অপরের দু:খ দেখলে কষ্ট পান। সেই ব্যক্তির বসবাসের জন্য ভাল জায়গা নেই। এমনকি নিজ নামে কোন জমিও নাই আজ। তাঁর স্ত্রীর দেড় কাঠা জায়গায় বাড়ি করলেও সে জায়গা নিচু হওয়ায় কোন রকমে বাঁশের খুটি ও পিলার তুলে সেই পিলারের উপরে টিনসেড বাড়ি করে বসবাস করছেন। তার বাড়িতে যাওয়ার মত জায়গা নেই। একটি চিকন রাস্তা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে পানি জমে যাওয়ায় যাতায়াত করা যায়না। বাধ্য হয়ে প্রাচীরের সাথে মই লাগিয়ে তার উপরে উঠে তারা মূল রাস্তায় দিয়ে যাতায়াত করেন বলে উল্লেখ করেন তারা।
এর ধরনের কার্যক্রম তিনি কেন করে বেড়ান জানতে চাইলে আব্দুস সামাদ জিল্লুর বলেন তিনি বংশগতভাবে আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে তিনি জাতীর জনকের আদর্শকে লালন এবং পালন করে চলেছেন। সেইসাথে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্য রেখে কাজ করে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, তাঁর নিজস্ব জায়গা জমি নেই। মায়ের বেশ কিছু সম্পত্তি ছিলো তা ছোট ভাই জালিয়াতি করে নিজ নামে করে নিয়েছেন। স্ত্রীর সামান্য এক খন্ড নিচু জায়গায় তিনি কোন মতে পিলার তুলে টিনসেড বাড়ি করেন আছেন। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানি জমে যাওয়া বাড়ি থেকে তাঁরা বের হতে পারেন না। বাধ্য হয়ে বাড়ির সামনে অন্যের দেয়া বাউন্ডারী ওয়াল মই দিয়ে বয়ে উঠে পার হয়ে প্রধান সড়কে আসেন। এভাবেই চলছে তাঁর জীবনচক্র। শেষ বয়সে একটু বাড়িতে শান্তিতে বসবাস করার জন্য স্ত্রীর জমির উপরে একটি পাকা বাড়ি করে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। সেইসাথে বাকী জীবন জাতীর জনকের আদর্শ ধারন ও লালন করে যেন চলতে পারেন সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।