মঙ্গলবার

১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দেশে স্নায়ুরোগের চিকিৎসায় প্রথমবার জিন থেরাপি ব্যবহার

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো দুরারোগ্য স্নায়ুরোগ স্পাইনাল মাস্কুলার এট্রফি (এসএমএ) রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হলো জিন থেরাপি। যা দেওয়া হয়েছে ২২ মাসের শিশু রাইয়ানকে। রাইয়ান মানিকগঞ্জের বাসিন্দা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে (নিনস) চিকিৎসা চলছে তার। শিশুটির চিকিৎসায় সরাসরি যুক্ত রয়েছেন ডা. চৌধুরী মোহাম্মদ ফুয়াদ গালিব। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সকাল ১০টায় রাইয়ানকে থেরাপির ইনজেকশন দেওয়া হয়। তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। প্রায় ঘণ্টা সময় ধরে ক্যানোলার মাধ্যমে দুরারোগ্য স্নায়ুরোগের এই ওষুধ শরীরে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটি নির্ধারণ করা যায়। বিশ্বে দুই হাজার ৩০০ বাচ্চাকে দেওয়া হয়েছে এই চিকিৎসা। যার মধ্যে একজন মারা গেছে। বাংলাদেশে রাইয়ানই প্রথম কোনো রোগী যাকে এই চিকিৎসা দেওয়া হলো। রাইয়ানকে যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে তার প্রতি ডোজের দাম প্রায় ২২ কোটি টাকা। যা বিনামূল্যে দিয়েছে বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নোভার্টিস। নিনস হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ৩০ জন এসএমএ সাসপেক্টেড রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এর মাঝে ২৫ জনকে ডায়াগনোসিস করা হয়েছে। সবশেষ ১০ শিশুকে জিন থেরাপির জন্য নির্ধারণ করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জন্মগত এই দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হলো জিন থেরাপি। এই জিন থেরাপি ইউএসএফডিএ (ইউনাইটেড স্টেটস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অনুমোদিত বলে জানান চিকিৎসকরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। এ সময় তিনি বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো জিন থেরাপি চিকিৎসা হয়েছে, এটি আমাদের জন্য বড় একটি আশার দিক। কিন্তু এর যে ব্যয়, সেটি আসলে রোগীদের জন্য বহন করা খুবই কঠিন। আমরা চাইলেও এ নিয়ে কিছু করতে পারছি না। সচিব বলেন, আমরা আশা করছি একটা পর্যায়ে ওষুধটির দাম কমে যাবে। আমাদের হাতের নাগালে নেমে আসবে। তখন এ চিকিৎসা আমাদের দেশে নিয়মিত করতে পারবো। আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে রোগটির চিকিৎসা না থাকার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে অসংখ্য শিশু মারা যেত। এ রোগে সাধারণত শিশুদের স্পাইনাল কর্ডের স্নায়ুকোষ নষ্ট হয়ে যায়। যেসব স্নায়ুকোষ মাংসপেশী নিয়ন্ত্রণ করে সেই স্নায়ুকোষগুলো নষ্ট হওয়ার কারণে মাংসপেশী দুর্বল হতে থাকে। বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষ এ রোগ সম্পর্কে অবগত নয়। এ রোগে নবজাতকরা প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ক্রমান্বয়ে তারা কনজেনিটাল হার্ট ডিজিসে ভোগে। হাসপাতালের পরিবেশ সম্পর্কে সচিব আরও বলেন, নিউরোসাইয়েন্সেস হাসপাতালে প্রচুর সংখ্যক রোগী থাকে, ভিতরেই প্রবেশ করতে কষ্ট হয়ে যায়। এরপরও এখানকার প্রশাসন দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছেন। এ ক্ষেত্রে আমি বলি যে লিডারশিপ দক্ষতা খুবই বড় গুণ।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris