শনিবার

১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনে আরো সেনা মোতায়েনের ঘোষণা পুতিনের

Reporter Name
Update : বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

 

ইউক্রেন যুদ্ধে বেশ কিছু এলাকা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আরও সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন। পশ্চিমাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে এ সময় পুতিন বলেছেন, তাঁর এই পদক্ষেপ কোনো ধরনের ‘ধাপ্পাবাজি’ নয়। রাশিয়া তার ভূখন্ড রক্ষায় সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। খবর আল-জাজিরার। এদিকে, রাজধানী কিয়েভ থেকে আল-জাজিরা প্রতিনিধি গ্যাব্রিয়েল এলিজোন্ডো জানান, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক লক্ষ্য পূরণে পুতিনের এই পদক্ষেপ সুনির্দিষ্টভাবে যুদ্ধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেবে।-এফএনএস

তাঁর মতে, এটা পরিষ্কার যে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিন বিশাল সংখ্যার সামরিক বাহিনীকে ঠেলে দিতে চলেছেন। এলিজোন্ডো বলেন, ‘আপনি যেভাবেই দেখেন না কেন, এটা যুদ্ধকে আরও বাড়িয়ে দেবে, আর বুঝা যাচ্ছে যে ইউক্রেনে সামরিক লক্ষ্য পূরণে মস্কোর আরও সৈন্য লাগতে পারে।’ এদিকে, ‘আংশিক সৈন্য সমাবেশের’ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ডিক্রি জারি প্রসঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানান এই অভিযানে আরও তিন লাখ সৈন্য মোতায়েন হতে পারে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে শোইগু বলেন, ছাত্র ও বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের এই যুদ্ধে নাও তলব করা হতে পারে। এদিকে, পুতিনের ভাষণকে যুদ্ধ বাড়ানোর জন্য উদ্বেগজনক হিসেবে অভিহিত করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিলিয়ান কীগান বলেছেন এই হুমকিকে অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টিকে আমাদের অবশ্যই ভীষণ গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে, পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই, এমনকি তা পুতিনের হাতেও নেই বলে আমি নিশ্চিত, এটা অবশ্যই যুদ্ধকে বাড়িয়ে দেবে।’ গতকাল বুধবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রথমবারের মতো রাশিয়ান সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ দেন যা তার সামরিক শক্তিমত্ত্বাকে সর্বোচ্চ ব্যবহারের অর্থাৎ প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখা হচ্ছে। টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেন, ‘যদি আমাদের দেশের অখন্ডতার প্রতি হুমকি আসে তবে আমরা আমাদের সব শক্তি দিয়ে দেশের মানুষকে রক্ষায় কাজ করবো, আর এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয়।’

এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের আংশিক সেনা সমাবেশের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের ফরেন অফিস মিনিস্টার গিলিয়ান কেগান। তিনি বলেন, ভøাদিমির পুতিনের হুমকি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। গতকাল বুধবার এক ভাষণে ‘মাতৃভূমি রক্ষায়’ আংশিক সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘মুক্ত করা ভূখণ্ডের’ মানুষকে রক্ষার জন্য জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। তাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আংশিক সেনা সমাবেশে সম্মত হতে বলেছি। ইতোমধ্যেই এ-সংক্রান্ত ডিক্রি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং আজ থেকেই এটি শুরু হবে।

যেসব নাগরিক এ সিদ্ধান্তের আলোকে সংগঠিত হবে তাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মতো মর্যাদা দেওয়া হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘দেশের অখণ্ডতা হুমকির মধ্যে পড়লে রাশিয়া এবং এর জনগণকে রক্ষার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নেবো। যারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চায়, তাদের জানা উচিত যে, পাল্টা বাতাস তাদের দিকেও যেতে পারে। ব্ল্যাকমেইল অব্যাহত থাকলে মস্কো তার বিশাল অস্ত্রাগারের শক্তি নিয়ে জবাব দেবে।’ পুতিনের এই ভাষণের পর গিলিয়ান কেগান বলেন, ‘স্পষ্টতই এটা এমন কিছু যা আমাদের খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। কারণ আপনি জানেন, আমরা নিয়ন্ত্রণে নেই। তারও (পুতিনের) নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। অবশ্যই উত্তেজনার পারদ বেড়েছে।’

 


আরোও অন্যান্য খবর