শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রেমিকার সন্তান প্রসব কারাগারে বিয়ে শেষে কিশোরের জামিন

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে শারীরিক সম্পর্ক হয় কিশোর-কিশোরীর। ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে কিশোরী। এরপর সন্তান প্রসব করে সে। এ ঘটনার পর উভয় পরিবারের সমঝোতার ভিত্তিতে তাদের বিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে যশোর শিশু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়। ৫০ হাজার টাকা গহনা ও পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে এ কিশোর-কিশোরীর বিয়ে ও কাবিন সম্পন্ন হয়। বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি আদালতকে জানানোর পর কিশোরকে ছয় মাসের জন্য জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। আর জামিনের পর তাদের সংসার জীবনে সুখে-শান্তিতে কাটছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য আগামী ২৫ অক্টোবর তাদের মা-বাবাসহ কিশোর-কিশোরীকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই কিশোরপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার। গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে কিশোরের পক্ষে শুনানি করেন সেলিনা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। এর আগে গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ কিশোর-কিশোরীর বিয়ে পড়ানোর আদেশ দেন। সন্তান প্রসবের পরও বিয়ে না হওয়ার ঘটনায় গত ৮ আগস্ট তলব করা হয় দুই জনের মা-বাবাকে। পরে ২৮ আগস্ট তাদের মা-বাবা হাইকোর্টে আদালতে উপস্থিত হন। ২৮ আগস্ট আইনজীবী জানান, রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদানের ঘটনায় উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছেন হাইকোর্ট। তিনি বলেন, এদিকে ছেলেমেয়ের অভিভাবকরা বিয়ের বিষয়ে তাদের সম্মতির কথা আদালতের কাছে বলেছেন। তখন আদালত বলেছেন, দুজনই অপ্রাপ্তবয়স্ক। কিন্তু তাদের সন্তান হয়েছে। এ কারণে দুই পরিবার যশোর শিশু সংশোধনাগারে গেলে তাদের সহযোগিতা করতে বলা হয়। বিয়ের পর আদালতকে প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলা হয়েছে বিষয়টি। এরপর ছেলের মুক্তির বিষয় বিবেচনা করবেন আদালত। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার সেটি শুনানির জন্য আসে। এদিকে ধর্ষণের অভিযোগে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ওই কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা করেন মেয়ের বাবা। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই কিশোরী স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। দেড় বছর আগে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক করে ওই কিশোর। এমনকি ২০২১ সালের ১ অক্টোবর তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। আরও একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয় তাদের। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে মেয়েটি। ২৫ মে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। গত ১ জুন পীরগাছা থানায় কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় ওই কিশোরকে। বর্তমানে সে যশোর শিশু সংশোধনাগারে রয়েছে। এদিকে গত ঈদুল আজহার দুদিন পর ওই কিশোরী সন্তান প্রসব করে। বিয়ে না হওয়ায় সে শিশুর বাবার স্বীকৃতি পায়নি। আইনজীবী আরও বলেন, ছেলেপক্ষ মেয়ের বাবার সঙ্গে কয়েক বার যোগাযোগ করেছে। তারা ছেলেকে বিয়ে দিয়ে সন্তানের দায়িত্ব নিতে রাজি। কিন্তু স্থানীয় গ্রামপ্রধান, চেয়ারম্যান-মেম্বারের প্ররোচনায় কিশোরীর বাবা ১০ লাখ টাকা ও তিন বিঘা জমি দাবি করেন। এ কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি। পরে বিষয়টি জানিয়ে আদালতে সেই কিশোরের জামিন শুনানিতে উপস্থাপন করি। হাইকোর্ট সব শুনে কিশোর-কিশোরীর মা-বাবাকে ২৮ আগস্ট হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।-এফএনএস


আরোও অন্যান্য খবর
Paris