আককাস আলী : নওগাঁর মহাদেবপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের কোটি টাকা মূল্যের ৫শতক জমি জবর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। থানা থেকে মাত্র ৩শ মিটার অদূরে থানা রোডে প্রকাশ্য দিবালোকে সংখ্যালঘুর জমি জবরদখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় এলাকার সর্বস্তরে সমালোচনার ঝড় বইছে। আগামী ১২ জুন উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে বিজ্ঞ আদালতে শুনানীর দিন ধার্য থাকলেও প্রভাবশালী হাজী আব্দুর রাজ্জাক তার আগেই জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের মৃত রাম সিংহের ছেলে শ্রী বুলবুল সিংহ ও শ্রী কমল সিংহ পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত হয়ে মহাদেবপুর মৌজার বাজারে অবস্থিত আর এস খতিয়ান ৬৮১, সাবেক দাগ ২৮২, হাল দাগ ৫৮৩ এর ৫শতক জমি দীর্ঘ প্রায় ৮৭ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছিল। হঠাৎ গত ৫ মে সকালে মহাদেবপুরের আখেড়া গ্রামের মৃত কফিল উদ্দীন মন্ডলের ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী আব্দুর রাজ্জাক অজ্ঞাতনামা কয়েকজন লোক নিয়ে এসে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন সেখানে উপস্থিত হলে তারা চলে যায়। এ ঘটনার পর শ্রী বুলবুল সিংহ বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাককে বিবাদী করে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৮১/২০২২ চিঃ নিঃ। মামলা চলাকালীন উক্ত নালিশী সম্পত্তিতে গত ২৭ মে আবারও জোরপূর্বক আব্দুর রাজ্জাকসহ তার লোকজন প্রবেশ করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে। এ ঘটনায় বুলবুল সিংহ মহাদেবপুর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। বুলবুল সিংহ অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ওই প্রভাবশালী মহল জোরপূর্বক তাদের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ করছেন। অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা গত বুধবার (৮জুন) বিকেলে ঘটনাস্থলে গেলে এর সত্যতা পান। সেখানে দেখা যায় আব্দুর রাজ্জাক প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন নির্মাণ শ্রমিক নিয়ে তড়িঘড়ি নির্মাণ কাজ করছেন। এ সময় দেখা যায় আদালতের নির্দেশে কমিশন এসে উভয়পক্ষের কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে জমি মাপজোক করছেন। মাপজোক শেষে সংখ্যালঘু ওই পরিবারটির জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেন কমিশন। কমিশনের সীমানা নির্ধারণের তোয়াক্কা না করেই নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় সেখানে উপস্থিত বিবাদী আব্দুর রাজ্জাকের নিকট জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করবেন না জানিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উভয়পক্ষকে আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছে।