শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স

Paris
Update : শনিবার, ৪ জুন, ২০২২

এফএনএস : করোনাভাইরাস মহামারি বিদায় না নিতেই আফ্রিকা, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার কয়েকটি দেশে নতুন রোগ ‘মাঙ্কিপক্স’ শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ১১টি দেশে মোট ৮০ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছে ডাব্লিউএইচও। বিবিসি জানিয়েছে, ইতালি, সুইডেন, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার এসব দেশে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর নিশ্চিত করা হয়। কানাডাতেও দুজনের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত ৭ মে যুক্তরাজ্যে প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সম্প্রতি নাইজেরিয়া ভ্রমণ করেছিলেন ওই ব্যক্তি।

পরে তার মাধ্যমে এটি আরো ছড়িয়েছে বলে জানায় ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সংস্থা (ইউকেএইচএসএ)। ইতোমধ্যে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও পর্তুগালে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার ফ্রান্স, ইতালি, বেলজিয়াম, জার্মানি, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ায় মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দুর্গম এলাকায় মাঙ্কিপক্স খুব পরিচিত রোগ। তবে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে এ রোগের উপস্থিতি বিরল।

পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা ভ্রমণ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবারের মতো মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ওই ব্যক্তি সম্প্রতি ইউরোপ থেকে ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ইউরোপের দেশ সুইডেনে একজন এবং ইতালিতে একজন রোগী শনাক্ত হন। সুইডিশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের দেশের ওই নাগরিক কীভাবে আক্রান্ত হলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, একজন রোগী মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই ব্যক্তি সম্প্রতি কানাডা সফর করেছেন। এছাড়া বুধবার পর্তুগালে পাঁচজন ও স্পেনে সাতজন শনাক্ত হয়েছেন।

ইউরোপে মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে কোনো অনুমোদিত টিকা নেই। স্প্যানিশ সংবাদপত্র এল পাইসের তথ্য অনুযায়ী, প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় স্পেন কর্তৃপক্ষ গুটিবসন্তের টিকা কিনেছে। গুটিবসন্তের মতো একই ভাইরাস পরিবারের সদস্য মাঙ্কিপক্স। এ ভাইরাসের প্রভাব বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হালকা। কখনও কখনও চিকেনপক্সের মতো হয়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজেই সেরে যায়। তবে মাঙ্কিপক্স কখনও কখনও গুরুতর হতে পারে। পশ্চিম আফ্রিকায় এতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

লক্ষণগুলো কী : প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ¦র, মাথাব্যথা, ফুলে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা এবং সাধারণ ক্লান্তি। জ¦র সারা শুরু হলে ফুসকুড়ি তৈরি হতে পারে, প্রায়শই তা মুখমণ্ডল থেকে শুরু হয়। তারপর শরীরের অন্যান্য অংশে, সাধারণত হাতের তালু এবং পায়ের তলায় ছড়িয়ে পড়ে। ফুসকুড়িগুলোতে খুব চুলকানি হতে পারে। বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যায়ে খোসা গঠিত হতে পারে। খোসাটি পরে পড়ে যায়। এর ক্ষত থেকে দাগ থেকে যেতে পারে। সংক্রমণটি সাধারণত নিজে থেকেই চলে যায়। এটি ১৪ থেকে ২১ দিন স্থায়ী হয়।

সংক্রমিত হতে পারে : কেউ সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হতে পারে। ভাইরাসটি ত্বকের ক্ষত, শ্বাসতন্ত্র বা চোখ, নাক বা মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এটিকে আগে যৌনবাহিত সংক্রমণ হিসাবে বর্ণনা করা হয়নি, তবে যৌনতার সময় সরাসরি শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়াতে পারে। সংক্রমিত প্রাণী যেমন বানর, ইঁদুর এবং কাঠবিড়ালির সংস্পর্শ থেকে বা ভাইরাস-লেগে থাকা বস্তুর মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে- যেমন বিছানা এবং পোশাক। সূত্র: বিবিসি, এএফপি


আরোও অন্যান্য খবর
Paris