শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৮২৪ ডলার

Paris
Update : বুধবার, ১১ মে, ২০২২

এফএনএস : ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে মাথাপিছু আয় বেড়ে হবে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। যা টাকার হিসাবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৪৭০ টাকা। চলতি অর্থবছরের মার্চ পযর্ন্ত অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে মাথাপিছু আয়ের বছর শেষের হিসাব প্রাক্কলন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে বিবিএস-এর এই হিসেব তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গত বছরে ২০-২১ ছিল দুই হাজার ৫৯১ মার্কিন বা দুই লাখ ১৯ হাজার ৭৩৮ টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ, গত বছর শেষে যা ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। বছর শেষে জিডিপির আকার বেড়ে দাঁড়াবে ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ৩৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০-২১ মার্চ পযর্ন্ত ৬ দশমিক ৯৪, জিডিপির আকার ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা টাকার পরিমাণে ৩৫ হাজার ৩০২ লাখ।

কৃষিখাত : সার্বিক বিবেচনায় কৃষি খাতের ২০২১-২২ অর্থবছরে সাময়িক হিসাবে শতকরা ২ দশমিক ২০ ভাগ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর মধ্যে শস্য উপখাতে শতকরা ১ দশমিক ০৬ ভাগ, পশুপালন উপখাতে শতকরা ৩ দশমিক ১০ ভাগ, বন উপখাতে শতকরা ৫ দশমিক ০৮ ভাগ ও মৎস্যখাতে শতকরা ২ দশমিক ০৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে।

শিল্পখাত: ২০২১-২২ অর্থবছরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রবৃদ্ধি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ ছাড়া বছর সাময়িক হিসাবে বিদ্যুৎখাতে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ ও নির্মাণ খাতে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সার্বিকভাবে শিল্পখাতে গত অর্থবছরের (২০২০-২১) তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৪৪ ভাগ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে।

সেবাখাত : ২০২১-২২ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা খাতে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, যানবাহন খাতে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ, ব্যাংক ও বিমা খাতে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, শিক্ষাখাতে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ ও স্বাস্থ্যখাতে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। সার্বিকভাবে সেবাখাতে গত অর্থবছরের (২০২০-২১) তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৩১ ভাগ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে।
জিডিপির হার করোনার আগের অবস্থায় এসেছে, তাহলে কি দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হয়েছে? এমন প্রশ্নে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, করোনা থেকে অর্থনৈতিক পুরোটা পুনরুদ্ধার হয়নি।

কতদূর বৃত্তের বাইরে বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। গত দুই বছরে আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েই চলেছে। রপ্তানি আয় ও অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তাছাড়া মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির বাড়ছে। আমরা আশা করছি বছর শেষে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ৭.২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে। এম এ মান্নান বলেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭.২৫ শতাংশ। করোনার এই পরিস্থিতিতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার অনেক ভালো। মার্চ পর্যন্ত ৭.২৫ হলে জুন শেষে এটা আরো বাড়তে পারে, ৭.৫ শতাংশও হতে পারে।

আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া যাবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের ১২১ দেশের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতসহ আটটি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এই মহতি অর্জনের জন্য আমরা গৌরব বোধ করি। একই সঙ্গে দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কর্মরত সব সহকর্মীদের জানাই অভিবাদন ও ধন্যবাদ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাহসী কর্মকৌশল, দেশের আপামর জনসাধারণ, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের পরিশ্রম ও ত্যাগের ফলে বাংলাদেশ কোভিড অতিমারির ছোবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।

এটি এখন সব মহলে স্বীকৃত। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, আমাদের হিসেবে মাথাপিছু আয় ঠিক আছে। আয় বৃদ্ধিতে এবার ঈদে হাট-বাজারে বেশি বেচাকেনা হয়েছে। গ্রামেও প্রত্যেকের হাতে মোবাইল, কেউ খালি পায়ে নেই। রিয়াল (প্রকৃত) আয় বেড়েছে।

গত অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৫৯১ ডলার, সেটাও ঠিক আছে। আমরা যে প্রাক্কলন করেছি ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার, এটাও ঠিক আছে। গতকাল মঙ্গলবার নগরীরর এনইসি সভায় একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি, কারণ গ্রামে ডিমান্ড বেশি। শ্রমিকের ঘাটতি আছে। গার্ন্টেসগুলো নারী শ্রমিক পাচ্ছে না। বৈষম্য প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈষম্য আছে, পৃথিবীর সব দেশেই এটা আছে। তবে ধীরে ধীরে বৈষম্য কমে আসবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris