শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বাগমারায় এক স্কুলের সভাপতি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এলাকাছাড়া! বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল জাতীয় চার নেতা কখনো মৃত্যু ভয় করেননি : লিটন প্রেমিককে কুপিয়ে জখম করল প্রেমিকা! গোদাগাড়ীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরো ২ আসামি গ্রেপ্তার এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের সরে দাঁড়াতে নির্দেশ সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তিন প্রতারক রাজশাহীতে গ্রেফতার পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করে লাশ গুম করেছিলেন পুত্রবধূ! রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে আরডিএ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ! সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনে ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা মুজিবনগর সরকার আমাদের প্রেরণা : আসাদ

চারঘাটে ইচ্ছেমতো পুকুর খনন

Paris
Update : রবিবার, ৮ মে, ২০২২

চারঘাট প্রতিনিধি : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় আগে রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুকুর খনন চলতো। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে প্রকাশে দিবালোকে ইচ্ছেমতো পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। আর এসব পুকুরের মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটা ও স্থাপনায়। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা ফসলি জমি।
এতে দীর্ঘ মেয়াদি জলাবদ্ধতায় কমতে শুরু করেছে ফসলের উৎপাদন এবং হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। এছাড়া মাটি ভর্তি ও খালি ট্রাক্টর ও ট্রাক চলাচলের কারণে গ্রামীণ কাঁচ-পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের যোগসাজশে ইটভাটায় মালিকরা ও মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে তিন-চার ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুরে পরিণত করছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কিছু অসাধু ব্যক্তিদের উৎকোচের মাধ্যমে ম্যানেজ করে দিনের আলোয় প্রকাশ্যে খনন কার্যক্রম চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শলুয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর, বামনদিঘী, রেলগেট ও জাফরপুরে, নিমপাড়া ইউনিয়নের কলাপাড়া ও ভাটপাড়ায়, সরদহ ইউনিয়নের হুজরাপাড়া ও বিজোড়, সদর ইউনিয়নের পরানপুর ও বেলতলী, ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর, রায়পুর ও পাগলপাড়া মোড়ে এবং ইউসুফপুর ইউনিয়নের শ্রীখন্ডী এলাকাসহ উপজেলার ১০ থেকে ১৫টি স্থানে ফসলি জমি কেটে পুকুর করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট আবাদী জমির পরিমাণ ৩১ হাজার ৫৯১ হেক্টর। পুকুর খনন করায় এই উপজেলায় প্রতিবছর আবাদী জমির পরিমাণ ২ থেকে ৩ শতাংশ হারে কমছে। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে। খনন করা জমির পাশের অনেক আবাদি জমি প্লাবিত হয়ে দীর্ঘ মেয়াদি জলাবদ্ধতা হচ্ছে। কৃষকেরা এ নিয়ে মহাবিপদের মধ্যে আছেন। আর ফসলি জমি কমে যাওয়ায় খাদ্য ঘাটতির আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন শলুয়া ইউনিয়নের ফতেপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দিনের বেলায় প্রকাশ্যে আবাদী জমি নষ্ট করে পুকুর খনন করছেন শলুয়া ইউপি চেয়ারম্যানের দুই ভাতিজা। স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের জমিকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন। তবুও বন্ধ হয়নি খনন কাজ। স্থানীয় কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, শলুয়া ইউনিয়নে জুড়ে ফসলি জমি নষ্ট করে একের পর এক পুকুর খনন চলছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার হচ্ছেনা। চেয়ারম্যানের ভাতিজারা বলছে সব প্রশাসন তাঁদের পকেটে। এ অবস্থায় কৃষকরা অসহায়, তাঁদের প্রতিবাদের আর কোনো জায়গা নেই।

এদিকে ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়নের তিন জায়গায় পুকুর খনন করছেন আব্দুর রশীদ নামে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। সদর ইউনিয়নের দুই জায়গায় পুকুর খনন করছেন শাহাবুল ইসলাম। এই দুই ইউনিয়নের কৃষকরাও প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েও পুকুর খনন বন্ধ করাতে পারেননি। ফসলি জমিতে পুকুর খননকারী আব্দুর রশীদ বলেন, পুকুর তো আমি একা খনন করছিনা, উপজেলা জুড়েই চলছে খননকাজ। প্রশাসনের লোকদের জানিয়ে কাজ করছি। জমি লিজ নিয়ে খনন করছি অন্য কৃষকের ক্ষতি হলে তো সে দায় আমাদের না।

স্থানীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় একাধিকবার এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কৃষকরা দলবেঁধে এসে প্রশাসনকে জানিয়েছে। তবুও কোনো প্রতিকার নেই। অবৈধ পুকুর খনন কজে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের যে সকল সদস্যরা জড়িত আছে তাদেরসহ ভূমিদস্যুদের তালিকা প্রস্তুত করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ভূমিমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা।

পুকুর খননের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়তি রানী কৈরী বলেন, সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে পুকুর খনন করা যাবেনা। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান আছে। ইতিমধ্যে অনেককে জরিমানাসহ আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris