চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জে কিছু দিন বন্ধ থাকার পর আবারও ফসলী জমিতে গড়ে উঠেছে বিষাক্ত এসিড ব্যাটারি পুড়ানোর কারখানা। অটোরিকশা ও চার্জার ভ্যানের পুরাতন ব্যাটারিতে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে প্রক্রিয়া শেষে পুনরায় নতুন ব্যাটারিতে ব্যবহার করার জন্য ব্যাটারি থেকে বের করা বিষাক্ত এ্যাসিড ও আগুনে পুড়ানোর ফলে বিভিন্ন পদার্থের কুন্ডলী থেকে বের হওয়া সীসায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আশপাশের ফসলী জমি। তবে কয়েকমাস আগে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করলেও আবার সে কারখানাটি চালু হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের হাশিমপুর কেন্দুল এলাকার রাস্তার ধারে ফসলী জমিতেই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ব্যাটারির কারখানা। এদিকে পুরাতন ব্যাটারির বিষাক্ত এ্যাসিড ও ধোঁয়ায় পুড়ে ধ্বংস হচ্ছে আশেপাশের বিভিন্ন ফসল। কোন অনুমোদন ছাড়াই এমন স্পর্শকাতর পদার্থের কারখানা গড়ে তোলায় তা বন্ধের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় কৃষকরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্জন এলাকার সুবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের বিশ্বরোড মোড়ের মেসার্স আশরা অটো ও কাজল ব্যাটারি সার্ভিসিং সেন্টারের মালিক খুরশেদ আলম কাজল ওই কারখানা গড়ে তুলেছেন।
ইজারা নিয়ে চারদিকে ত্রিপল আর টিন দিয়ে ঘিরে ফসলী জমিতেই গড়ে তোলা হয় কারখানা। স্থানীয়রা জানায়, রাত গভীর হলেই পোড়ানো হয় পুরনো ব্যাটারির বিভিন্ন পদার্থ। সেখান থেকে ভিতরের সীসা বের করা হয়। এ সীসাটি মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। পরে এসব পোড়া ব্যাটারির নির্গত সীসা ও অন্যান্য পদার্থ পুনরায় ব্যাটারি তৈরির কারখানায় বিক্রি করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ রাতে যখন ব্যাটারি পুড়ানো হয়, তখন আশপাশের এলাকা জুড়ে বিষাক্ত ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এর ফলে বিভিন্ন ফসলাদিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি আশেপাশের ফসলী জমিতে এ্যাসিড ছড়িয়ে পড়ছে।
এতে জমি উর্বরতা হারিয়ে যেতে পারে। ওই কারখানার পাশেই ফসলী জমি রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সরকারপাড়া এলাকার মৃত আবু তালেবের ছেলে আতাউর রহমানের। তিনি বলেন, এই কারখানাটি স্থাপনের ফলে তার ফসল তেমন হচ্ছে না। এমনকি আশেপাশের সকল জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তাদেরকে বলতে গেলে তারা বলছে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনকে অবহিত করা আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে আবাদি জমিতে কোন ধরনের কলকারখানা করা যাবে না। অথচ এখানে ব্যাটারি পোড়ানোর মতো কাজ করা হচ্ছে, যা পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
এব্যাপারে কাজল ব্যাটারি সার্ভিসিং সেন্টারের মালিক ব্যাটারি ব্যবসায়ী খুরশেদ আলম কাজল জানান, সারাদেশের সব জায়গায় এভাবেই পুরাতন ব্যাটারি প্রক্রিয়া করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম এটা আনা হয়েছে। কারখানা স্থাপনের বিষয়ে কোন অনুমোদিত লাইসেন্স নেই তবে ট্রেড লাইসেন্স ও ইউনিয়ন পরিষদের কাগজ রয়েছে। তবে খোঝ নিয়ে জানা গেছে, ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে ট্রেড লাইসেন্স নেয়া হয়েছে সেখানে মালিকের ভুয়া জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। গত ৩০ মার্চ কারখানাটি অজ্ঞাত কারণে আবারও চালু করা হয়েখে কোনা রকম বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই।