শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, বাধা দেওয়ায় হামলার অভিযোগ

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে জোরপূর্বক জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। দখলের সম বাঁধা দিতে গেলে হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে একটি পরিবারের কয়েকজন সদস্য। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও বিভিন্ন নথি সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মিলে জমি নিয়ে বিরোধের সমাধান করে দিলেও তা না মেনে জোরপূর্বক জমি দখলের করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।

জানা যায়, ভোলাহাট উপজেলার খাড়োবাটরা গ্রামের দুই ভাই মৃত সমশের আলী, মৃত দাউদ আলী, মৃত ওয়াজেদ আলী ও মৃত ইসরাইল হোসেন মারা যাবার পর থেকে ছেলেদের মাঝে জমি ভাগবন্টন ও ভোগদখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে মৃত ইসরাইল ও ওয়াজেদ আলীর ছেলেরা আরেক ভাই মৃত সমশের আলীর ছেলে জামিরুল ইসলামের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জামিরুলের উপর হামলা করে মৃত ইসরাইলের ছেলে হবুল, চুটু, আক্তারুল, মুক্তারুল, এনামুল ও সনু, মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে সহিমুদ্দিন এবং মৃত দাউদ আলীর ছেলে মিছু।

এসময় জামিরুলকে বাঁশের লাঠি ও গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারধর করে তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এঘটনাকে কেন্দ্র করে জামিরুল চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসার পরেও নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দেখালে থানায় অভিযোগ করেন জামিরুল। থানায় অভিযোগ, ইউপি সদস্য ও শালিসের নথি সূত্রে জানা যায়, এর আগে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে জমিজমা বন্টনের উদ্দেশ্যে শালিসে বসা হয়। এসময় সকল পক্ষ শালিসের সমাধান মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শালিসনামায় সাক্ষর করে।

মৃত চার ভাইয়ের সকল উত্তরসূরী ছেলের সম্মতিতে জমির মধ্যখান দিয়ে ১০ ফিট রাস্তা রেখে উপর-নিচ চার কোন আকারে জমি বন্টন করা হয়। তবে এই শালিসের সীধান্ত হওয়ার পর তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়, মৃত দাউদ আলী ও ওয়াজেদ আলীর ছেলেরা।
শালিসের কয়েক দিন পর ২০ জানুয়ারী সমশের আলীর ছেলে ওবাইদুল হকের জমি দখল করতে আসে মৃত ইসরাইলের ছেলে হবুল, চুটু, আক্তারুল, মুক্তারুল, এনামুল ও সনু এবং ওয়াজেদ আলীর ছেলে সহিমুদ্দিন। এসময় ওবাইদুল ও তার বড়ভাই জামিরুলকে বেধড়ক মারধর করে তারা। এমনকি ওবাইদুল হকের স্ত্রী সারমিন খাতুন এগিয়ে আসলে তার প্রতিও হামলা করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।

এবিষয়ে ওবাইদুল হক বলেন, তারা খুবই প্রভাবশালী লোক। বারবার আমাদের উপর হামলা করে ও জমি দখল করতে আসে। এবার বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে। বাধা দিতে গেলেই হামালা মারধর। ভয়ে তাই আর কিছু বলতেও পারিনা। থানা-পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও এর বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। জামিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে শালিস করে জমি বন্টন করা হয়েছে। তাও সেই সমাধান মানেনি। তােদের অনেক ক্ষমতা। যখন যেখানে ইচ্ছে এসে দখল করতে চাই। বাঁধা দিতে গেলেই হামলা ও মারধর করে। উল্টো পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেই, তারা এসে হুমকি দেয়, পুলিশ আমাদের কিছুই করতে পারবে না।

ওবাইদুল হকের স্ত্রী সারমিন খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে মারছিল আমার ভাসুরের ছেলেরা। তাদেরকে মারতে মানা করতে যাওয়ায় আমাকেও মারতে ছাড়েনি। পরে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় ৩ হাজার টাকা চিকিৎসা খরচ জরিমানা দিয়ে সমাধান করে। অথচ কয়েকমাস পরে আবারও একই কায়দায় গত ০৭ এপ্রিল হামালা চালায় তারা।
অভিযোগের কোন সত্যতা নেয় বলে জানিয়েছেন মৃত ইসরাইলের ছেলে হবুল, চুটু, আক্তারুল।

তারা জানান, আমরা আমাদের জমিতে ঘর নির্মাণ করতে চাই। এতে তারা বাঁধা দিয়েছে, তাই একটু ঝমেলা হয়েছে। ভোলাহাট থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, জমিজমা সংক্রান্ত কোন ঝামেলার অভিযোগ থানায় নেয়া হয় না। তবে মারামারির বিষয়ে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris