শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ ধাপে বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তোলা হবে

Paris
Update : শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২

এফএনএস : বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে জাপানের জাইকার সঙ্গে চার দফা মিটিং হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, আমাদের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক তৈরি হয়েছে। সেই অনুযায়ী তিনটি ধাপে বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, এজন্য আমরা ফোকাল পার্সন নিয়োগ দিয়েছি, কার্যক্রম এগোচ্ছে। প্রথম দফায় তারা সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে।

দ্বিতীয় দফায় পুরনো ১০০/২০০ বছরের যে বিল্ডিংগুলো আছে, সেগুলো ধ্বংস করে জাপানের আর্থিক সহায়তায় ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণ করা হবে। এরপর যে ভবনগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর ভূমিকম্প সহনীয়তা পরীক্ষার করে সেগুলো সংস্কার করা হবে। জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর ১৫টি দুর্যোগ প্রবণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। প্রতিবছর বন্যা, ভূমি ধস, ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাতসহ নানাবিধ দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করে চলেছি।

২০২০ সালের মার্চ থেকে এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের দুর্যোগ। এসব দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের পরিকল্পনা মোতাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। আমরা প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ পরিবারকে নিয়মিতভাবে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। সহায়তা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে করোনা সংকটের সময় মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যরাও যেন ত্রাণ পায়।

প্রধানমন্ত্রীর আদেশ অনুযায়ী আমরা তাদের জন্য ৩৩৩ নম্বর চালু করেছিলাম। যেটি এখনও চালু আছে। এ নম্বরে কল করে যারা খাদ্য সহায়তা চেয়েছেন, আমাদের কর্মীরা তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। প্রায় ২২ লাখ পরিবার ৩৩৩ নম্বরের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা পেয়েছেন, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী। বিগত ঘূর্ণিঝড়গুলোতে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশ্বের কাছে রোল মডেল। গত ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত ৪২৩টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, ২২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। সাড়ে ৫০০ মুজিব কেল্লা তৈরির কাজ চলছে।

তিনি বলেন, আমাদের ৪৫৭টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন রয়েছে। আরও ১১০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা একটি ফায়ার ফাইটিং একাডেমি স্থাপন করব। মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, এদেশে কেউ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না, প্রত্যেকের ঠিকানা হবে- উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেজন্য দরিদ্র গৃহহীন মানুষকে দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা দিতে বর্তমান সরকার দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১ হাজার ৬০৪টি, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৭ হাজার পাঁচটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৬ হাজার ২৯১টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করে হস্তান্তর করেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এক হাজার ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ৪০ দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। যেগুলো চলতি মাসের শেষে প্রধানমন্ত্রী হস্তান্তর করবেন। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গায় এ ঘরগুলো পরিদর্শনে গিয়েছি। আমরা বুঝতে পেরেছি, এ ঘরগুলো মানুষকে ক্ষমতায়িত করেছে। তাদের সম্মান বাড়িয়েছে, তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে। নারীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris