শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নেককার স্ত্রী স্বামীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ

Paris
Update : শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২

এফএনএস : দুনিয়ার জীবনে স্বামীর জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো নেককার স্ত্রী। আল্লাহ তাআলা নারীজাতিকে জীবনের সবদিক থেকে এক অনুপম মর্যাদা ও অধিকারে অভিষিক্ত করেছেন। কুরআনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে পুরুষের জীবন পরিচালনার ন্যায় নারীদেরকেও সম্মান, মর্যাদা এবং মৌলিক অধিকার প্রদান করেছে ইসলাম। তাই নারীর যথাযথ মর্যাদা ও অধিকার পেতে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। আল্লাহ তাআলা নারীদের নিয়ে জীবন-যাপনে পুরুষকে এ মর্মে নির্দেশ ও নসিহত পেশ করেছেন-

‘আর তাদের (স্ত্রীদের) সঙ্গে সৎভাবে জীবন যাপন করো; তোমরা যদি তাদের ঘৃণা করো, তাহলে এমন হতে পারে যে, আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন, তোমরা তাকে ঘৃণা করছো।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৯)
স্বামীর জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ নেককার স্ত্রী। কথাটি ছোট হলেও এর তাৎপর্য ব্যাপক। একজন নারীর সংস্পর্শ ছাড়া পুরুষের জীবনের পরিপূর্ণতা আসে না। সুখে-দুঃখে নারীই তার জীবনসঙ্গিনী। সুতরাং দাম্পত্য জীবনে এ নারী যদি পুত-পবিত্র সচ্চরিত্রা হয়, তাহলে জীবন স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। সমস্যায় জর্জরিত জীবনেও শান্তির ফল্গুধারা বয়ে যায়।
দাম্পত্য জীবনে যে শান্তি নারী-পুরুষের বৈবাহিক জীবনের মাধ্যমে শুরু হয়। বিবাহিত জীবনে নেককার স্ত্রীর গুরুত্ব অত্যধিক। তাই ইসলাম স্ত্রীকে দিয়েছে সর্বোত্তম মর্যাদা। বৈবাহিক জীবনে নারী অধিকার সম্পর্কে কুরআন হাদিসের বক্তব্য তুলে ধরা হলো-

স্ত্রীর মর্যাদায় নারী
ইসলামের আবির্ভাবের আগে বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়াই নারীদেরকে পুরুষের মালিকানাধীন মনে করা হতো এবং একজন পুরুষ যত খুশী বিয়ে করতে পারতো। ইসলাম নারীদের জন্য বিবাহকে বৈধ এবং আবশ্যক করেছেন। বিবাহের মাধ্যমে একজন নারীকে একটি সম্মানজনক আসনে সমাসীন করা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যেকার পুরুষ আর নারীদের মধ্য থেকে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও যারা দাম্পত্য ছাড়া জীবন অতিবাহিত করে।’

মোহর নারীর অধিকার
মোহরকে নারীর ইজ্জতের গ্যারান্টি করা হয়েছে। ইসলাম পূর্ব যুগে নারীরা তাদের বিয়ের দেন মোহরের অধিকার পেত না। ইসলাম নারীর মর্যাদা রক্ষায় মোহরের বিধান চালু করেছে। মোহরকে স্বামীর উপর ফরজ সাব্যস্থ করা হয়েছে।
এমনকি স্ত্রীদের যদি মোহর হিসেবে অঢেল সম্পদও দেওয়া হয় তবে তা ফেরত নেওয়া যাবে না। কেননা মোহর বিবাহের শর্ত হওয়ায় সেগুলো নারীর মালিকানাধীন হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন-
‘আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে (কিছু) অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪)

দাম্পত্য জীবনে নারী
মোহর নির্ধারণের মাধ্যমে নারী-পুরুষ পরস্পর ইজাব-কবুল করে থাকনে। একজন পুরুষ একজন নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। নারীকে পুরুষের জন্য স্ত্রী হিসেবে এক স্বকীয় মর্যাদায় অধিষ্টিত করেছে ইসলাম। তাই স্বামীকে স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর তাদের (স্ত্রীদের) সঙ্গে সৎভাবে জীবন যাপন করো।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৯)
২. সংসার জীবনে সুখী হতে মহান তাআলা অন্যত্র বলেন-
‘তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)

৩. স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘মহিলাদের পুরুষদের উপর যেরূপ অধিকার আছে তেমনি পুরুষদেরও মহিলাদের উপর অধিকার রয়েছে।’
স্ত্রীর মর্যাদায় নারীর প্রতি দায়িত্ব পালন
বিবাহের মাধ্যমে একজন নারী স্ত্রীর মর্যাদা লাভ করার পর পুরুষকে নারীর যাবতীয প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর মধ্যে তার খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান, অলংকার ইত্যাদি অর্ন্তভুক্ত। আল্লাহ বলেন-
‘পুরুষ মহিলাদের রক্ষক এবং ব্যবস্থাপক এইজন্য যে, আল্লাহতায়ালা তাদের মধ্য থেকে একজনকে অন্যজনের উপর মর্যাদা দিয়েছেন। আর এই জন্যও যে, পুরুষ তাদের জন্য নিজের সম্পদ ব্যয়
করে।’ (সুরা নিসা)

মনে রাখতে হবে
ইসলামই নারীকে জীবনের সবদিকে থেকে এক অনুপম মর্যাদা ও অধিকারে অভিষিক্ত করেছে। কুরআনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে ইসলাম পুরুষের জীবন পরিচালনার ন্যায় নারীদেরকেও সম্মান ও মর্যাদা এবং মৌলিক অধিকার প্রদান করে এমন এক সভ্যতার গোড়াপত্তন করেছে। যা নারীর ভুলুন্ঠিত মর্যাদা ও অধিকার ফিরে পেতে হলে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নারী প্রতি যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান দেখানো। স্ত্রীর যথাযথ দায়িত্ব পালন করা। কেননা স্বামীর জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ তার নেককার স্ত্রী। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রী প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনসহ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামি অনুশাসন ও দিকনির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris