শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে স্কুল-কলেজ বন্ধ কোচিং সেন্টার খোলা

Paris
Update : শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

চারঘাট প্রতিনিধি : করোনা সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে থাকলেও চারঘাটে বন্ধ হয়নি কোচিং বাণিজ্য, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে এগুলো আরও সরগরম হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের ভিড় বাড়ছে এসব কোচিং সেন্টারে। যেখানে সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ন্যূনতম বালাই নেই, যা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ কোচিং সেন্টার বন্ধের সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে এখনো মাঠে নামেনি প্রশাসন। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে স্কুল-কলেজ বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত কাজে আসছে না।

জানা যায়, রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ ও বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী স্কুল চারঘাট উপজেলায় অবস্থিত। এছাড়ার সরকারী স্কুল এবং কলেজ রয়েছে এখানে। আর এসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ২৫টিরও অধিক কোচিং সেন্টার। যার অধিকাংশই উপজেলা সদর ও সরদহ এলাকায়। এদিকে দেশে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব রোধে শুক্রবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী পৃথক বিবৃতিতে স্কুল-কলেজ বন্ধের ঘোষণা দেন। ওই বিবৃতিতে শিক্ষামন্ত্রী কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনাও দেন।

রাজশাহী জেলায় সংক্রমণ উর্ধমুখী হওয়ায় স্থানীয় ভাবেও নানা রকম নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না কোচিং সেন্টার গুলোতে। নির্দেশনার পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এনআরএস, সাকসেক্স পার্ক, ভারটেক্স, ভারটেক্স প্লাস, সাকসেক্স প্লাস, উন্মেষ, রয়েল, সাফল্য প্লাস, প্রতিভা, প্রাইম, উন্মেষ, নতুন দিগন্ত, বড়াল, ড্রিম, এম্বিশনসহ বিভিন্ন কোচিং সেন্টার খোলা থাকতে দেখা গেছে। এসব কোচিং সেন্টারে শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের ভিড় লেগে আছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে দফায় দফায় পাঠদান কার্যক্রম। মানা হচ্ছে না ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধিও।

কোচিং সেন্টারগুলোর তিন ফুটের বেঞ্চে ন্যূনতম দুজন শিক্ষার্থী বসে ক্লাস করছে। আর বাইরে দাঁড়িয়ে আড্ডায় মত্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। মাস্ক পরিধান না করে সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই তাঁরা জটলা বেঁধে অবস্থান করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ভারটেক্স প্লাস কোচিং সেন্টারে পড়তে আসা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতিমা খাতুন বলে, ‘স্কুলের স্যারেরা বলেছেন, ক্লাস হবে না। তাই আর স্কুলে যাইনি। কিন্তু কোচিংয়ের আসতে তো ভাইয়া (কোচিংয়ের শিক্ষক) নিষেধ করেননি। তিনি বলেছেন, কোচিং হবে। তোমরা সময় মতো চলে আসবে। তাই আমরা ক্লাস করতে চলে এসেছি।’

উপজেলার সরদহ এলাকার বাসিন্দা অভিভাবক আফরোজা খাতুন বলেন, ‘বাচ্চারা ক্লাস করতে না পারলে তো পিছিয়ে পড়বে। দেখেন, সংসারের কাজ ফেলে রেখে এখানে এসেছি, শুধু সন্তানদের পড়াশোনাটা যাতে ভালো হয়। সরকার এটিও যদি বন্ধ করে দেয়, তাহলে বাচ্চারা কি শিখবে?’

সরদহ এলাকার এনআরএস কোচিং সেন্টারের পরিচালক জিনারুল ইসলাম বলেন, ‘ প্রশাসন তো আমাদের এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি। এজন্যই কোচিং খোলা রেখেছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোচিং এ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য হচ্ছেনা।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘ শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে স্কুল কলেজের পাশাপাশি সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি উর্ধ সংক্রমনের মুখে কোচিং সেন্টার খোলা রাখে তবে প্রশাসনের সহযোগিতায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris