শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে বিদেশি ব্র্যান্ডের মোড়কে নকল প্রসাধনী!

Paris
Update : বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

চারঘাট প্রতিনিধি : চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন কসমেটিকস-এর দোকানে নামি-দামি বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। মোড়ক দেখে কারও বোঝার সাধ্য নেই কোনটি আসল আর কোনটি নকল। এসব নকল পণ্য ব্যবহারের কারণে অনেকেই বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলা সদর বাজার, সরদহ ও নন্দনগাছী বাজারের বেশ কজন অসাধু ব্যবসায়ী আসল ব্র্যান্ডের মোড়ক বা কৌটা সংগ্রহ করে তাতে নকল প্রসাধনী ঢুকিয়ে বিভিন্ন বাজারে পাইকারি দরে সরবরাহ করছেন। প্রসাধনীর কৌটা উপজেলার বালাদিয়াড় গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে তৈরি হচ্ছে। এসব পণ্য কিনে এলাকার মানুষ আর্থিকভাবে প্রতারিত হচ্ছেন, রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও। ক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তেল, সাবান, শ্যাম্পু, মেহেদি, লিপস্টিক, নেইল পলিশ, বিভিন্ন ধরনের লোশন, ক্রিম, ভ্যাসলিন, বডি স্প্রেসহ আরও অনেক প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করেন তাঁরা। ভোক্তাদের বিপুল চাহিদাকে পুঁজি করে অনৈতিকভাবে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তারা শিশুসহ সব বয়সী মানুষকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে এই অসাধু চক্রটি।

নাম প্রকাশে না করা শর্তে চারঘাট সদর বাজারের এক কসমেটিক ব্যবসায়ী জানান, এসব প্রসাধনী সামগ্রী ঢাকার চকবাজার থেকে আনা হয়। দেশের বিভিন্ন কোম্পানি ও বিদেশি নামকরা কোম্পানির পণ্য হুবহু নাম অথবা নামের একটি অক্ষর পরিবর্তন করে থাকে। যেমন- মেরিলের অনুকরণে লেখা হয় মারিল, মেরিট, মরিল ও মোরিন। জুঁই নারকেল তেলের অনুকরণে জুহি ও জুন, তিব্বতের অনুকরণে বিব্বাত ও তিবত লেখা হয়। এ্যারোমটিককে অনুসরণ করে এ্যারোমা, এ্যারোমেকি ও এ্যারোমেরিট ইত্যাদি লেখা হয়। বিদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে খালি কৌটা কিনে গোডাউনে নকল পণ্য ঢোকানো হয়। উপজেলার বাঁকড়া বাজারে প্রসাধনী কিনতে আসা ক্রেতা আবু ছদর বলেন, কয়েক দিন আগে স্থানীয় বাজার থেকে একটি ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী কিনি, কিন্তু দোকানদার আমাকে ফেয়ার অ্যান্ড লাডলী দেয়। এটি ব্যবহার করে আমার মেয়ের ত্বকে সমস্যা হয়েছে। চর্ম চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাচ্ছে।

অনুপামপুর গ্রামের আফসানা শারনিন নামে একজন ক্রেতা বলেন, নকল প্রসাধনী বিক্রির দায়ে জরিমানার খবর টিভিতে দেখতে পাই, কিন্তু কোনটা আসল কোনটা নকল কীভাবে বুঝবো তার কোন উপায় নেই। দোকানি যেটা ভালো বলে দেন, সেটা আমরা বিশ্বাস করে কিনে নিই। উপজেলা সদরের বিশিষ্ট কসমেটিক ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, প্রতিটি পণ্যের গায়ে বারকোড থাকার কথা, বারকোডও থাকে, কিন্তু এগুলো স্ক্যান করলে পণ্য সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপিত হয় না। আমরাও চাই বাজার থেকে নকল প্রসাধনী উঠে যাক। ক্রেতাদের কষ্টের টাকায় ভাল কিছু পেলে আমরা খুশি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আশিকুর রহমান বলেন, নকল প্রসাধনী ব্যবহারে চর্মরোগ বেশি হয় এবং নকল প্রসাধনী যদি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা হয় তাহলে ক্যানসারের মত বড় ধরনের রোগও হতে পারে। কসমেটিকস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুম আলী বলেন, আমরা খোঁজ খবর নিয়ে মাঝে মধ্যেই অভিযান পরিচালনা করছি। গতমাসেও চারঘাটে ভেজাল পণ্য বিক্রির দায়ে কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris