শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে ইসি গঠন নিয়ে ৪ প্রস্তাব দিলো আওয়ামীলীগ

Paris
Update : মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২২

এফএনএস : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেনÑসাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা শেষে প্রায় ১ ঘণ্টা পর বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের দিকে বঙ্গভবন থেকে বের হয় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিতে ৩২টি রাজনৈতিক দলকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রথম দিনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। জাতীয় পার্টি ছাড়াও রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি,

গণফোরামসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে আমন্ত্রণ পাওয়া দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), এলডিপি, জেএসডি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, মুসলিম লীগ রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়নি। সংলাপে অংশ নেওযা দলগুলোর মধ্যে কয়েকটি দল সার্চ কমিটির মাধ্যমেই পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়ে এসেছে রাষ্ট্রপতির কাছে। সার্চ কমিটির জন্য নামের তালিকাও দিয়ে এসেছে কয়েকটি দল। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাউন্সিল গঠন করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগেরও প্রস্তাব এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার; সব রাজনৈতিক দলের সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার; নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জটিলতা ও অবিশ্বাস দূর করতে আইন প্রণয়নসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশগ্রহণ না করা দলগুলো এ আলোচনা প্রক্রিয়াকে ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেছে। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। সার্চ কমিটির মাধ্যমেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে বাছাই করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।

এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী করা, কমিশন গঠনে আইন করা এবং সবধরনের নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা গতকাল সোমবার বিকেলে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে এসব প্রস্তাব দেয়। পরে দলটির কার্যালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে- ১. সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদান করবেন। ২. প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদান করবেন। ৩. প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান সাপেক্ষে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।

বর্তমানে এই ধরনের কোনো আইন না থাকায় সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণের নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধান ব্যতিরেকে অন্য কোনো আইন প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সাংবিধানিক চেতনা সমুন্নত রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণের যোগ্যতা-অযোগ্যতা এবং তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণের লক্ষ্যেই মূলত এই আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ৪. সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে সব নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris