বৃহস্পতিবার

২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ধাক্কা-ধাক্কির পর রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সমাবেশে দুই দফা সংঘর্ষ!

Paris
Update : শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মহানগর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যালীর প্রস্তুতি সমাবেশে ধাক্কা-ধাক্কিকে কেন্দ্র করে দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সেখানে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে নগরের কুমারপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ র‌্যালীর আয়োজন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগর যুবলীগের পক্ষ থেকে র‌্যালীর আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে বিকেল থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে র‌্যালী শুরুর আগে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভিতরে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এরপর বাইরে দুপক্ষের কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় নগর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দসহ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী মুঠোফোনে বলেন, মেয়র মহোদয়কে রিসিভ করার জন্য আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হবার সময় কারো একজনের সাথে তৌরিদ আল মাসুদ রনির ধাক্কা লাগে। আর এই সামান্য বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রনির সাথে আসা যুবলীগের কর্মীরা উত্তেজনা সৃষ্টি করার পাশাপাশি বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। তিনি আরো বলেন, হাজারো নেতাকর্মী আর সম্বর্থকদের ভিড়ে ধাক্কাধাক্কির মতো সামান্য বিষয়গুলো ঘটতেই পারে। সেটিকে ঢাল করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আয়োজনকে স্তব্ধ করে দেয়াটা সমুচিত নয় বলেই আমি মনে করি।

এটা শুধু আমাদের ব্যর্থতা নয়, এটা সমস্ত যুবলীগের ব্যর্থতা। রামজান বলেন, সৃস্ট ঘটনায় মাননীয় মেয়র লিটন, নগর আ’লীগের সম্পাদক ডাবলু সরকাররসহ নেতৃবৃন্দ বলেছেন কমিটি গঠন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে, এ বিষয়ে নগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনিকে তার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি বিধায় বিষয়টি সম্পর্কে তার কোন বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনার পর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালী বের করা হয়নি। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।

সমাবেশ শেষে যাওয়ার সময় আরেক দফায় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় পুলিশ ও নেতারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই দফায় হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া কর্মীরা নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ রনির সমর্থক বলে জানা গেছে। আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানায়।

এদিকে অন্য সূত্র মতে, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। মেয়রকে রিসিভ করতে যাওয়ার সময় নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী গ্রুপের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ রনিকে ধাক্কা দেন। এ থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ ব্যাপারে জানতে নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ রনিকে মুঠোফোনে রিং দেয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, যুবলীগের কিছু উশৃংখল কর্মী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ কারণে র‌্যালী না করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচী শেষ করা হয়েছে।

তবে এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে আমরা তাদের চিহ্নত করে দল থেকে বহিস্কারের জন্য যুবলীগকে সুপারিশ করবো। তারা যদি পদক্ষেপ না নেয় তবে বিষয়টি কেন্দ্রে জানানো হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আজ ১১ নভেম্বর দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী জেলা যুবলীগ। কর্মসূচির মধ্যে সকাল ৮.০০ ঘটিকায় লক্ষিপুরস্হ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, ৮.৩০ মিনিটে জাতির পিতা ববঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির প্রতিকৃতিতে পূষ্পমাল্য অর্পন। এরপর সারাদিন ব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষন ও দেশাত্ববোধক গান বাঁজানো হয়।

এরপর বিকেল ৩.০০ ঘটিকায় লক্ষিপুর দলীয় কার্যালয় চত্বরে রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ এর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আজম সেন্টুর উপস্থাাপনায় সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদ দারা,জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ,সাবেক শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ইমদাদুল হক মাস্টার।

জেলা যুবলীগের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি আলমগীর মোর্শেদ রন্জু, বেলাল সরকার, আনোয়ার হোসেন, মাহমুদ হাসান ফয়সাল, মোজাহিদ হোসেন মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক হোসেন মিলন, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নার্গিস পারভিন শেলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব,সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ। আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, জেলা যুবলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, জেলা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এরপর বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে একটি বর্নাঢ্য রেলী লক্ষিপুর মোড় প্রদক্ষিন করা হয়। সন্ধ্যার পর দলীয় কার্যালয়ে একটি বিশাল কেট কাটার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris