মঙ্গলবার

২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এভারগ্রীণ’র দখল করে নির্মাণাধীণ কাউন্টার উচ্ছেদ করলো আরডিএ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো : প্রধানমন্ত্রী শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা নিয়ামতপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড রাজশাহীতে নারীর মোবাইল ফোন-ব্যাগ ছিনতাই, তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার রাসিককে সুদৃঢ় আর্থিক ভিত্তির উপর দাঁড় করতে চাই : মেয়র কাতারের আমির আসছেন আজ, সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার দখলের সুযোগ বালিশকাণ্ডের সেই প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে রাবির হল, অনিয়মের অভিযোগে দুদকের হানা/৩ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী

রাজশাহীতে অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সাংবাদিকরা

Paris
Update : সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এবার সোচ্চার হয়েছেন পেশাদার সাংবাদিকরা। তাদের গ্রেপ্তার আর প্রশ্রয়দানকারী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রত্যাহারের দাবিতে সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। গতকাল রোববার বেলা ১১টায় নগরীর অন্যতম প্রধান ব্যস্ততম এলাকা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে রাস্তা অবরোধ করে সাংবাদিকরা অবস্থান নেন। বিকাল পৌনে ৫টায় এই অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাত সকাল সাড়ে ১০টার দিকে।

রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব নামের একটি ভুঁইফোড় প্রেসক্লাবের ব্যানারে কয়েকজন কথিত সাংবাদিক মানববন্ধন করতে যান শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে। সম্প্রতি কয়েকজন কথিত সাংবাদিক এই প্রেসক্লাব গঠনের ঘোষণা দেন। এরা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সচিব ও আঞ্চলিক শিক্ষা ভবনের পরিচালক এবং সহকারী পরিচালকের অপসারণের দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এসব কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সাংবাদিক পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি চাঁদা চাইতে এসেছিলেন। তা না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করা হচ্ছে। মানববন্ধন করা কোন সাংবাদিকদের কাজ নয় জানিয়ে তারা রাজশাহীর পেশাদার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কারা মানববন্ধন করছেন তা দেখতে ঘটনাস্থলে যান রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন সাংবাদিক। রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকতার নামে এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য আয়োজকদের বলেন। আর তখনই পুলিশের সামনেই রফিকুল ইসলামের ওপর চড়াও হন কথিত সাংবাদিকরা। তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে সাংবাদিক রাজু আহমেদ, সিনিয়র ফটোসাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর এবং ফটোসাংবাদিক কাবিল হোসেনকেও লাঞ্ছিত করা হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, মাজহারুল ইসলাম চপল, আবু কাউসার মাখন, রেজাউল করিম, হারুন, সুমন, রাজন, সোনা, লিয়াকত, রকি ও ফারুক হোসেন, সাগরসহ বেশকিছু কথিত সাংবাদিক তাদের ওপর হামলা চালান। এ বিষয়ে তারা মামলা দায়ের করবেন।

এদিকে চার সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বেলা ১১টায় কামারুজ্জামান চত্বরে রাস্তায় বসে পড়েন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সাংবাদিকরা হামলাকারী কথিত সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মনের প্রত্যাহারের দাবিতে নানা শ্লোগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে এ বিষয়ে নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সঙ্গে বসার অনুরোধ জানান।

আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ রিপন, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদরুল হাসান লিটন, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান জনি, প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, ডেইলি স্টারের রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার আলী হিমুসহ সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পুলিশ কমিশনার দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তাৎক্ষণিক কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাংবাদিকরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান।

এদিকে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ কমিশনারের কাছে গেলেও অন্য সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ করেই ছিলেন। প্রতিনিধিদল ফিরে আসার পরও ওই আন্দোলন চলছিল। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, হামলাকারী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক বলেন, হামলাকারী অন্যরাও গ্রেপ্তার হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আর পুলিশ কমিশনার বোয়ালিয়ার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মনকে প্রত্যাহার করতে তিন দিন সময় চেয়েছেন। আমরা ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছি।

এই সময়ের মধ্যে ওসি প্রত্যাহার না হলে বুধবার দুপুর ১২টায় বোয়ালিয়া থানা ঘেরাও করা হবে। উল্লেখ যে, কেউ ফুটপাতের খাবারের দোকানী, কেউ ছিনতাইকারী, কেউ মাদক ব্যবসায়ী। হঠাৎ করেই তারা ‘সাংবাদিক’ বনে গেছেন। নামসর্বস্ব অনলাইন আর নিজেদের ফেসবুকের টাইমলাইনে কিছু লেখা পোস্ট করেই তারা নিজেদের সাংবাদিক দাবি করে বসেন। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা আর সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজিই এদের প্রধান কাজ।

রাজশাহী প্রেসক্লাবের উদ্বেগ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি : রেলগেটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে রাজশাহী প্রেসক্লাব। সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসলাম-উদ-দৌলা এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, রেলগেট এলাকায় দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং নবীন সাংবাদিকদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে মুখোমুখি অবস্থানকে ঘিরে সৃষ্ট ঘটনায় মূলধারার সাংবাদিকরা বিব্রত। সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রফিকসহ কয়েকজনের যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে তা নিন্দনীয়, নাক্কারজনক। আমরা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।

দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে সভা
স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর : রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতিসহ ৪ সাংবাদিকের উপরে হামলার ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি’র সভাপতিত্বে ও দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক গোলাম রসুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দুর্গাপুর সাংবাদিক সমাজের সভাপতি মোবারক হোসেন শিশির, দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি এসএম আমিনুল ইসলাম,

সাংবাদিক সমাজের সহ সভাপতি এসএম শাহাজামাল প্রামানিক, দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক জুবায়ের তুহিন, সদস্য মশিউর রহমান, এম শাহাবুদ্দিন মোল্লা সহ সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ সভায় পুলিশের উপস্থিতিতে মূল ধারার সাংবাদিক নেতাদের উপর হামলার ঘটনায় বোয়লিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মনের অপসারণ ও হামলাকারিদের গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris