শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনার বছরে আপিল বিভাগে রেকর্ড সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তি

Paris
Update : রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১

এফএনএস : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের বেশিরভাগ সময়েই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে করোনা সংক্রমণের হার কমে আসার পর সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে ভার্চুয়াল ও শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরু হয়। আর এ সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রেকর্ড সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল তুলনামূলক অনেক কম। ২০২০ সালের সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল ৫০ শতাংশের বেশি। যা গত কয়েক বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির দিক দিয়ে সর্বোচ্চ। আর এ সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তারপরও মামলা নিষ্পতির হার বেড়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ীÑ ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগে থেকে চলমান মামলা ছিল ২৩ হাজার ৬১৭টি। নতুন করে আপিল দায়ের করা হয় ৬ হাজার ৯৫৮টি মামলা।

সব মিলিয়ে ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৩০ হাজার ৫৭৫টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১৫ হাজার ৩৫০টি। যা মোট মামলার ৫০ শতাংশেরও বেশি। যা কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ড। আর বছর শেষে অনিষ্পত্তিকৃত (পেন্ডিং) থেকে যায় ১৫ হাজার ২২৫টি আপিল মামলা। এদিকে মামলা নিষ্পত্তির হার বাড়লেও আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা কমে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচাপতির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে। আর হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি আছেন ৯১ জন। সুপ্রিম কোর্টের প্রতিবেদন অনুযায়ীÑ ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আগে থেকে চলমান মামলা ছিল ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮টি।

ওই বছরে নতুন করে মামলা দায়ের হয় আরও ৬৪ হাজার ১৩টি। সবমিলিয়ে ২০২০ সালে হাইকোর্ট বিভাগে মামলার সংখ্যা বেড়ে হয় ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৫টি। আর পুরো বছরে মামলা নিষ্পত্তি হয় ৩৪ হাজার ১৯২টি। যা মোট মামলার প্রায় ৭ শতাংশ। এবং বছর শেষে হাইকোর্ট বিভাগে অনিষ্পত্তিকৃত (পেন্ডিং) থেকে যায় ৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৩টি মামলা। মামলা নিষ্পত্তির দিকে দিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ আপিল বিভাগের তুলনায় অনেক বেশি পিছিয়ে রয়েছে। গতবছর দেশে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল আদালত চালুর কারণে করোনাকালেও বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় মামলা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর আগে, করোনাসহ যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতে বিচারকাজ অব্যাহত রাখতে ২০২০ সালের ৯ মে আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর গত বছরের ১০ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়। পরে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বিল- ২০২০ পাস হয়।

এ আইন পাসের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও দেশের যে কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর গত বছরের ১১ মে থেকে হাইকোর্টে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কাজ শুরু হয়। এর আগে ১০ মে এ বিষয়ে আদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ২৩ মে সুপ্রিম কোর্টে তিনটি বেঞ্চে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris