বুধবার

২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এভারগ্রীণ’র দখল করে নির্মাণাধীণ কাউন্টার উচ্ছেদ করলো আরডিএ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো : প্রধানমন্ত্রী শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা নিয়ামতপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড রাজশাহীতে নারীর মোবাইল ফোন-ব্যাগ ছিনতাই, তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার

নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

Paris
Update : শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১

এফএনএস : শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করছে না। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এড়াতে শিক্ষার্থী ভর্তি ফরমে নিষেধাজ্ঞার চিঠি জারি হওয়ার আগের তারিখ উল্লেখ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইফজিসির নিষেধাজ্ঞার পরও ভর্তির ক্ষেত্রে ওসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে দেয়নি। বরং আগ্রহী সব শিক্ষার্থীই ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। মূলত ওসব প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থী ভর্তি করে আয় বাড়ানো। অথচ ওসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে কোনো ক্ষেত্রেই আইন-কানুন অনুসরণ করা হয় না। ইউজিসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (সিবিআইইউ) শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) গত স্প্রিং সেমিস্টার থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ৮টি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ওই দুটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ইউজিসির মাধ্যমে সিবিআইইউ কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা সংবলিত একটি চিঠি পাঠায়।

ওই চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির সার্বিক শিক্ষার মান বিবেচনায় এক বছর নতুন ছাত্র ভর্তি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে বলা হয়। ওই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগসহ উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বলা হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে আগের মতোই ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও শিক্ষার্থী ভর্তির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে।
সূত্র জানায়, আইন লঙ্ঘন করে কার্যক্রম পরিচালনা করায় গত জানুয়ারিতে ইউজিসি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ৭টি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়। আর তদারক সংস্থার দেয়া ওই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে।

কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই বেসরকারি দুটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি অব্যাহত রেখেছে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়া প্রোগ্রামগুলো হলো বিএ (অনার্স) ইন বাংলা, এমএ ইন বাংলা, এমএসএস ইন ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, বিএ (অনার্স) ইন ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড সিভিলাইজেশন, এমএ ইন ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড সিভিলাইজেশন, বিএড ও এমএড। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে ৫টি বিভাগের ওই সাতটি প্রোগ্রামে স্প্রিং সেমিস্টার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলে ইউজিসি। মূলত ন্যূনতম যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষক না থাকার কারণেই ওসব প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করা হয়।

সূত্র আরো জানায়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিএড ও এমএড প্রোগ্রামে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। আর ওসব শিক্ষার্থীর পাঠদানে শিক্ষক রয়েছে মাত্র একজন। বিএড ও এমএড প্রোগ্রামে শিক্ষকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অথচ সেখানে একমাত্র শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। একইভাবে বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের প্রতিটিতে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র একজন করে। ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র একজন। যদিও ইউজিসির নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি প্রোগ্রামে কমপক্ষে ৪ জন স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে। তার মধ্যে একজন কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার হতে হবে। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সম্প্রতি এশিয়ান ইউনিভার্সিটিকে লাল তারকায় চিহ্নিত করেছে ইউজিসি।

প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে ইফজিসির পক্ষ থেকে হয়েছে, কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই এমবিএ এক্সিকিউটিভ ও এমবিএ ইভনিং প্রোগ্রাম দুটি পরিচালনা করছে। তাছাড়া দীর্ঘ ৯ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। তাছাড়া এমবিএ প্রোগ্রামে নির্ধারিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক জানান, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য একটি চিঠি দেয়া হয়েছিল। তবে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার স্বার্থে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার জন্য একটি আবেদন করেছে। যা বর্তমানে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সার্বিক বিষয়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ জানান, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে সব প্রোগ্রাম ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটিকে কয়েকটি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়। সেক্ষেত্রে তাদের শিক্ষার পরিবেশসহ বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা ও ব্যবস্থার মানোন্নয়ন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এখন যদি প্রতিষ্ঠানগুলো মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়, তাহলে তা কোনোভাবেই সমীচীন হবে না। আর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভর্তি হওয়া ওসব শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে সনদ নিয়ে কোনো জটিলতায় পড়লে কমিশন তার দায় নেবে না। ওই বিষয়ে ইউজিসি সম্প্রি একটি গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে। তাতে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris