বুধবার

১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের রাস্তায় ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা

Paris
Update : শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এফএনএস : পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে ও বৃহস্পতিবারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা। বিক্ষুব্ধরা স্লোগান দেন – ‘মাশরাফির আস্থায়, আমরা সবাই রাস্তায়’। এছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাবের বিরুদ্ধেও স্লোগান তোলেন তারা। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মিরপুর-১ নম্বরে কিংবদন্তি ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে গ্রাহকদের বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাবের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের শুভেচ্ছা দূত ছিলেন মাশরাফি।

প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে তার চুক্তি শেষ হয়ে গেছে। তবে এরইমধ্যে ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। ই-অরেঞ্জের সঙ্গে চুক্তি শেষ হলেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর তিনি গ্রাহকদের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে মাশরাফি এ-ও বলেন, ২০-৩০টা কোম্পানির সঙ্গে কাজ করেছি, কিন্তু সমস্যা হয়নি। এখন কোনো এক কোম্পানির জন্য বিজ্ঞাপন করলাম, কিন্তু তাদের পানির ভেতর যদি পোকা পান। তাহলে এটার সমাধান কী? এদিকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আফজাল হোসেন নামের এক গ্রাহক বলেন, গতকাল (গত বৃহস্পতিবার) আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ই-অরেঞ্জের এ গ্রাহক বলেন, টাকা ফেরতে সরকারের কোনো সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা ডিজটাল গেটওয়ের মাধ্যমে টাকা দিয়েছি ই-অরেঞ্জে। কিন্তু এখন সরকার বলছে, গ্রাহকের টাকার কোনো সঠিক হিসাব নেই। কেন নেই, এর কোনো জবাব আমরা পাইনি। তিনি আরও বলেন, পুলিশি হামলা চালিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের শ্রমের অর্থ ই-অরেঞ্জে আটকে আছে। টাকা ফেরত না আসা পর্যন্ত আমরা প্রতিবাদ করবো। ওসি সোহেলসহ ই-অরেঞ্জের মালিকদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের পাওনা টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। এসময় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা ‘ই-অরেঞ্জের প্রতারণা মানি না, মানবো না’,

‘মাশরাফির আস্থায় আমরা সবাই রাস্তায়’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় দুর্নীতির ঠাঁই নাই’-এসব স্লোগান দেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তারেক নামের এক গ্রাহক বলেন, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তোজা ই-অরেঞ্জ নিয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ তার সে আশ্বাস মেনে নিয়েছিল। আমরা সেখানে পণ্য অর্ডার করেছি। কিন্তু আমরা দেখলাম, ই-অরেঞ্জ থেকে এগারশো কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, করোনার সময় আমাদের অনলাইনে কেনাকাটা করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছি, সেটার দায় কেউ নিচ্ছে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে এ গ্রাহক আরও বলেন, আপনাদের অনুমোদিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছি। এর প্রতিবাদ করতে রাস্তায় এসে কেন হামলার শিকার হলাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যদি এর দায় না নেয়, ই-ক্যাব যদি এর দায় না নেয়, তবে কে নেবে? এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লগ্নি করা টাকা ফেরত পাওয়া ও ই-অরেঞ্জের মালিক ওসি সোহেলকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে মৎস্য ভবনের সামনে গ্রাহকদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে অন্তত ১০ জন ভুক্তভোগী আহত হন। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। সন্ধ্যায় আটকদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় শাহবাগ থানা পুলিশ।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris