আর কে রতন : করোনাভাইরাস সংক্রমনরোধে সরকারী বিধিনিশেষধে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে অন্যের মত কর্মহীন হয়ে রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল কলোনির বাসিন্দা অটোরিকশা আব্দুল খালেক। মহাজনের অটোরিক্সা চালিয়ে যা আয় হতো তাই দিয়ে চলত তার ৪ সদস্যর পরিবার। কিন্তু লকডাউনে একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ হওয়ায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন ৪৫ বছর বয়সী খালেক। স্ত্রী অন্যের বাসায় কাজে গেলে করোনার ভয়ে কোন বাসায় ঘুরলেও কেউ কাজ দেয় না। এতে দু’জনই কর্মহীন হয়ে পড়ে। দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে কয়েকদিন খুব কষ্ট করতে হয়। পরে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দেয়া ২৫০০ টাকা প্রণোদনা পান স্ত্রী আনোয়ারা। সেই টাকা দিয়ে ভ্রাম্যমান চায়ের দোকান করে জীবনের চাঁকা ঘুরিয়ে দিয়েছে আনোয়ারা। বর্তমানে প্রতিদিন দোকান করে সব খরচ বাদ দিয়ে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করে।
জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল কলোনির বাসিন্দা আব্দুল খালেক। রাজশাহীর স্থানীয় হলেও তার কোন নিজস্ব বাড়ীর জমি নেই। ফলে ভাড়া বাসায় থাকতে হয় ছেলে মেয়ে নিয়ে। মহাজনের অটোরিক্সা চালানো আয় দিয়ে কোন মতে তার সংসার চলত।
আনোয়ারা বেগম বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গাড়ি-ঘোড়া সব বন্ধ হওয়ায় কর্মহীন হয় স্বামী। সংসাওে নেমে আসে চরম কষ্ট। নিরুপায় হয়ে ২০১৯ সালের এপ্রিলে আমাদের কাউন্সিলর সুমন সাহেবের কাছে কিছু সাহায্যে করার জন্য বলি। তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রদানকৃত ২৫০০ টাকার অনুদানের ব্যবস্থা করে দেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রণোদনার ২৫০০ টাকায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন আনোয়ারা। স্বামী আব্দুল খালেকের সঙ্গে মিলে তিনি শুরু করেন চা ব্যবসা। এ ব্যবসার মাধ্যমেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন আনোয়ারা। সে রেশম বোর্ডের রাস্তার পাশেই চা, পান-সিগারেট নিয়ে ব্যবসা করছে।
আনোয়ার স্বামী আব্দুল খালেক জানান, আমার বর্তমানে শ^াস কষ্ট থাকায় তেমন কাজ কর্ম করতে পারি না। আমার স্ত্রী আয় দিয়ে সংসার চলে এবং দুই ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চলে। তবে বড় মেয়ে খালেদা আক্তার ইতিমধ্যেএসএসসি পাশ করে। সেও মায়ের মতোই স্বাবলম্বী হয়েছে। চাকরি নিয়েছেন স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে। ছোট ছেলে সজীব (১২) নগরীর ইউসেফ স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। রাজশাহী সিটিকর্পোশনের ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদ হক সুমন বলেন, আনোয়ার আমার কাছে সাহায্যের কথা জানালে আমি তার নাম তালিকাভোক্ত করি। এবং পরে তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রণোদনার ২৫০০ টাকা তোলে দিই। সামান্য এই টাকা দিয়ে সে আজ স্বাবলম্বী হয়ে দাড়িয়েছে। এ জন্য আনোয়ারাকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সাধ্যবাদ জানায়।