উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীদের যাতে বিদেশে যেতে না হয়, সেজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালটির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। সাবেক আইপিজিএমআর-এ অর্থাৎ, বর্তমানের এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চিকিৎসাধীন থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতাকে দেখতে এসে এ প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন, রোগীরা যাতে এখানেই উন্নত চিকিৎসাসেবা পান এবং তাদের যেন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে না হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনারও প্রত্যাশা, এ বিশ্ববিদ্যালয়েই রোগীরা যাতে সর্বোত্তম ও সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবা পান, তা নিশ্চিত করে চিকিৎসার জন্য রোগীদের বিদেশে যাওয়া থেকে বিরত রাখা।- এফএনএস

ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর এ প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে বিএসএমএমইউ’র সকল বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোর সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া, সর্বশেষ প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা, বিশেষায়িত বিষয়গুলো আরো সমৃদ্ধ করা, বিশ্বের বিভিন্ন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, গবেষণালব্ধ প্রকাশনার সংখ্যা বৃদ্ধি করা, সুপার স্পেশালিটির ওপর আরো গুরুত্ব দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। গতকাল বুধবার নিউরোসার্জারি বিভাগে নিউরোসার্জিক্যাল স্কিল ল্যাবের শুভ উদ্বোধন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নিউরোসার্জারি বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া এবং ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে-কলমে বাস্তবসম্মত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিশ্চিতের লক্ষ্যেই এ স্কিল ল্যাব চালু করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থোলে ডটকমের পক্ষ থেকে সাধারণ রোগীদের বিশেষ করে এ মহামারিকালে সর্বোত্তম সেবা দেওয়া এবং সাধারণ রোগীদের আন্তরিকতা ও দরদি মন নিয়ে পরম মমতায় চিকিৎসাসেবা প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা পেশায় অনন্যসাধারণ অবদান রাখায় দেশের সেরা চিকিৎসক হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদকে রিয়েল হিরো’স অ্যাওয়ার্ডস-২০২১ এ ভূষিত করায় নিউরোসার্জারি বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্যকে ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার গতিশীল নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়েছে। তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রূপকার। তার দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যেই করোনার ভ্যারিয়েন্ট নির্ধারণের জেনোম সিকোয়েন্সিং চালু, টিকার কার্যকারিতা নির্ধারণের অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু, দ্রুত পরীক্ষার জন্য র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল চালু, নন-কোভিড রোগীদের জন্য আইসিইউ ইউনিট চালু, কোভিড রোগীদের জন্য আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা সংখ্যা বাড়ানো, ডেন্টাল অনুষদে বেসিক কোর্স চালু,

টিএসসি চালু, টিচার্স লাউঞ্জ আধুনিকায়ন, রোগীদের জন্য ২০ হাজার লিটারের অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের অভাবনীয় গতিশীল নেতৃত্ব ও বিরামহীন কার্যক্রমের সুষ্পষ্ট প্রমাণ মেলে। নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আখলাক হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. কে এম তারিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান,

ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, নিউরোসার্জন ও নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. নজরুল ইসলাম খান, নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ধীমান চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. হারাধন দেবনাথ, অধ্যাপক ডা. মওদুদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রেজাউল আমিন ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহ নেওয়াজ বারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।