বৃহস্পতিবার

২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীন প্লাজা’র ৫ম প্রকল্পের ‘গ্রীন ছায়েরা মঞ্জিল’ এর শুভ উদ্বোধন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার

প্রাথমিক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে ১২ সেপ্টেম্বর

Paris
Update : শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এফএনএস : মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকা দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলবে। আগের ঘোষণা অনুসারেই নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো।

স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ১২ সেপ্টেম্বর তারিখকে আমরা নির্ধারণ করেছি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অ্যাসাইনমেন্ট প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে জানান দীপু মনি। তিনি বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আসছে নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষকই টিকা নিয়েছেন। এছাড়া ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরও টিকার আওতায় আনা হবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরও কমবে। ফলে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ছুটি রয়েছে, তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। ফলে আমরা চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো, যদি এর মধ্যে আর বড় কোনো সমস্যা না হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলে সঠিক মনিটরিংও নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষার্থীদের করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়া প্রসঙ্গে ডা. দীপু মনি বলেন, ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে ১২ বছর বয়সী পর্যন্ত এ টিকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যত দ্রুত সম্ভব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।

এরইমধ্যে আমি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত তাদের পরিবারের সদস্যদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। মারণ ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর সংক্রমণ পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

গত ২৬ আগস্ট সবশেষ ঘোষণায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও এক দফা বাড়িয়ে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। ওইদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। স্কুল-কলেজ ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের চাপ রয়েছে, খুললেও করোনা আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাই। এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আসছে নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে সরকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বলে গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে-বাইরে অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানতে হবে।

এ বিষয়টি শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও জনগণের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস লাগবে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা জানি, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ১৭ মাস বন্ধ ছিল। এটির সুফল আমরা পেয়েছি। আমাদের দেশে সংক্রমণ সেভাবে বাড়েনি। কিন্তু এখন যখন আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছি- তার কারণ একদিকে ভালো হলেও অন্যদিকে শারীরিক, মানসিক বা সামাজিক নানা ধরনের সমস্যাও আছে। সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সংক্রমণের হার দ্রুতই কমে যাওয়ায় আমরা সেই সিদ্ধান্তই এখন নিচ্ছি। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সকলকে সচেতন হতে হবে।

চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থকরণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য। সবাই জানে, সেদিন কীভাবে কী কবর দেয়া হয়েছিল। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জিয়ার কবর সম্পর্কে যে কথাটি বলেছেন, সেটি সত্যি। এ বিষয়ে আরো সত্য বেরিয়ে আসবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর পৌর মেয়র অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল, ফরিদগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান, এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউনুছ বিশ্বাস ও চাঁদপুর জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী প্রমুখ।

পরামর্শক কমিটি মতামত : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মত দিয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাএ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে তিনি বলেন, কারিগরি কমিটি মতামত দিয়েছে, আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে। পরামর্শক কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে আমরা মত দিয়েছি, যেহেতু ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমে যাচ্ছে। তবে ক্লাস শুরু করার বেলায় কিছু আলোচনা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কমিটির সদস্যরা মতামত দিয়েছেন। ওই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে ডা. নজরুল বলেন, যদি কোনও ক্লাসে ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী থাকে তাহলে দুই শিফটে বা দুই দিনে ভাগ করে খোলা যেতে পারে। সেখানে আলোচনা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে কী করা যেতে পারে বা কীভাবে করা যেতে পারে। তবে গত বছরের সংক্রমণের হারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছি এটা কমের দিকেই থাকবে। প্রথমে বড়দের এবং পরে ছোটদের অর্থ প্রাইমারি লেভেলের ক্লাস খোলার কথা আলোচনা হয়েছে।

তবে অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে এবং সে জন্য যা যা দরকার হবে সেটা নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছরের মার্চ থেকে দেশের সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দফায় দফায় বাড়িয়ে তা সবশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। এরপর আর তা বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের। গত বৃহস্পতিবার রাতে একাত্তর টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে।

আগামী দিনে আরও কমবে। ফলে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ছুটি রয়েছে তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আমরা চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দিতে পারবো। যদি এর মধ্যে আর বড় কোনও সমস্যা না হয়। বড় পাবলিক পরীক্ষাগুলো নেওয়া সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে এ সময় শিক্ষামন্ত্রী জানান, নভেম্বরের মাঝে এসএসসি এবং ডিসেম্বরের শুরুতে এইচএসসির ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris