বৃহস্পতিবার

২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীন প্লাজা’র ৫ম প্রকল্পের ‘গ্রীন ছায়েরা মঞ্জিল’ এর শুভ উদ্বোধন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার

গোদাগাড়ী পৌরসভায় উপনির্বাচনে জমে উঠেছে প্রচারণা

Paris
Update : শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আলিফ হোসেন : রাজশাহীর গোদাগাড়ীর গোদাগাড়ী পৌরসভার উপ-নির্বাচন ঘিরে ফের জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। রাজনৈতিক অঙ্গনেও দেখা দিয়েছে নয়া সমীকরণ। এদিকে এবার উপ-নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে মেইন ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। তাদের সমর্থন, জনপ্রিয়তা ও বিশাল কর্মী বাহিনীকে কাজে লাগাতে পারলেই তাদের সমর্থীত প্রার্থী বিজয়ী হবেন এটা প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে পৌরবাসি আবেগের বশবর্তী হয়ে গত নির্বাচনের মতো আর ভুল করতে চাই না। তারা উন্নয়ন বঞ্চিত নয় বরং উন্নয়নের স্বার্থে সরকার দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করে এলাকার উন্নয়ন বুঝে নিতে চাই।

এদিকে আওয়ামী লীগ মুল ধারা বা স্রোতের বিপরীতে অবস্থান নেয়া তথা দলীয় এমপিদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে এমন কোনো নেতৃত্ব মনোনয়ন দিয়ে দলীয় এমপিদের সঙ্গে বিরোধ বা দলীয়কোন্দল জিইয়ে রাখতে চাই না। এসব বিবেচনায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস ফের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। অপরদিকে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌঁড়-ঝাঁপ শুরু করেছে। এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পৌর এলাকার বাজার, হোটেল, ক্লাব ও পাড়া মহল্লা গুলো। তারা দলের টিকিট পেতে ব্যপক লবিং শুরু করেছে। স্থানীয়সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। আবার একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারও চালাচ্ছেন। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশনার দিকে চেয়ে রয়েছেন।

জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ অক্টোবর গোদাগাড়ী পৌরসভার উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। এদিকে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেশ তোড়জোর শুরু করে কাঁকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গোটা পৌর এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। তবে এবার নতুন মুখের বেশ আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। অনেকে দলীয়ভাবে মনোনায়ন পেতে বেশ মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক তৈরীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী ও এমপিদের সঙ্গে লবিং শুরু করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আবার কেউ নিয়মিত মোড়ে মোড়ে চা চক্রের আয়োজন করছেন।

এমনকি গত কোরবানি ঈদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ একাধিক গরু খাসি ভেড়া জবাই করে মাংস বিতরণ করেছেন এলাকার ভোটারদের মধ্যে। নানা সমীকরণে ভোটের মাঠে প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকে এমন ভোটারদের বাড়িতে কেউ কেউ সেমাই চিনি, আটা, চাউল, আলুসহ বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করে এলাকার ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন। তবে জামায়াত পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন বলে শোনা গেলেও তাদের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না।গোদাগাড়ী পৌরসভার উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে গোদাগাড়ী পৌরসভার আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস,

সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি, মাটিকাটা আর্দশ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আকবর আলী, গোদাগাড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুর সহধর্মিনী এবং গোদাগাড়ী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এনামুল হক। বিএনপি থেকে গোদাগাড়ী পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া রুলু যুবদল নেতা মাহাবুবুর রহমান বিপ্লব প্রমুখ।

রাজশাহী পশ্চিম জেলা আমির আব্দুল খালেক বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহন করছেন না। দলীয় সিদ্ধান্ত পৌরসভা নির্বাচন থেকে বিরত থাকবে জামায়াত। এব্যপারে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল এখানে প্রার্থীর সংখ্যা বেশী হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি যখন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনায়ন চেয়েছিলাম তখন ৯ জন প্রার্থী ছিলাম, আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন আমি প্রার্থী হয়ে নেতা কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে পরিশ্রম করে জনগনের ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় নেতা কর্মীরা চাচ্ছেন এবারে গোদাগাড়ী পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী নৌকার মাঝি হিসেবে আলহাজ্ব অয়েজউদ্দিন বিশ্বাসকে। তিনি অনেক খানি এগিয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন পৌর যুবলীগের সভাপতি আকবর আলী, প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুর সহধর্মিনী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকের ছবিও দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, যারা ত্যাগী, মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে রয়েছেন তাদের মধ্য থেকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টিকিট যিনি পাবেন, তিনিই আমাদের প্রার্থী হবেন। পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এ. এম শাহীন বলেন, প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুর সহধর্মিনী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দীন বিশ্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকসহ অনেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে মেয়র পদে প্রার্থীর মনোনায়ন পাওয়ার ব্যপারে শতভাগ নিশ্চিত বলে প্রচার চালাচ্ছেন।

কিন্তু আমার মতে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যার হতে নৌকা প্রতীক তুলে দিবেন তিনি আমাদের প্রার্থী, তার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো ইনসাল্লাহ। এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম শাওয়াল বলেন, গোলাম কিবরিয়া রুলু আমাদের দলীয় প্রার্থী ঠিক হয়ে আছে অনেক আগে থেকে, ব্যরিষ্টার আমিনুল হক জীবিত থাকাকালীন সময়ে ওইবার আনোয়ারুল চৌধুরীকে ছাড় দেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তী নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে গোলাম কিবরিয়া রুলুকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছিল। বিএনপির মেয়র প্রার্থী রুলু, মাঠে আছেন, কাজ করছেন, তার জনপ্রিয়তাও ভাল রয়েছে।

নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়লাভের সম্ভাবনাও বেশী রয়েছে। এবিষয়ে গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মেসের আলী মাস্টার একই মত প্রকাশ করে বলেন, রুলু ও বিপ্লব করবো করবো করছে, তবে বিগত ঘোষনা অনুযায়ী গোলাম কিবরিয়া রুলুরই বিএনপি মেয়র প্রার্থী। তবে নির্বাচনের ব্যপারে কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। এবিষয়ে পৌরসভা জিয়া পরিষদের সহঃ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, বরাবরের মতো গোদাগাড়ী পৌরসভায় বিএনপির অবস্থান ভাল আছে, বিগত দিনে পৌরসভায় একাধিকবার মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী বিশাল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করবে ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন,বিএনপি বড় দল এখানে একাধিক প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক তবে বিগত পৌরসভা নির্বাচনের কয়েকদিন পূর্বে দলীয় কার্য্যালয়ে এক আলোচনা সভায় একাধিক মেয়র প্রার্থীর ব্যপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, ওই সময় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীকে মেয়র মনোনয়ন দিয়ে বলা হয়েছিল, পৌর বিএনপির সহসভাপতি বিশিষ্ঠ সমাজসেবক গোলাম কিবরিয়া রুলুকে পরবর্তী পৌরনির্বাচনে মেয়র প্রার্থী করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোলাম কিবরিয়া রুলু এবার মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। সে অনুযায়ী তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর হতে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং তিনি এখানো জনপ্রিয়তায় শীর্ষে অবস্থান করছেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris